যাতায়াতের পরিবহণ ব্যবস্থা বলতে একমাত্র গ্রাম সংযোগ খাল দিয়ে চলাচল করা ভুটভুটি। কিন্তু খালটি দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় কচুরি পানা ঠেলে ভুটভুটি চালিয়ে যেতে হয়। অন্যদিকে, গরম পড়লেই জল কমে যাওয়ায় ভুটভুটি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে সমস্যায় পড়েন বাসিন্দারা।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার মগরাহাট-২ ব্লকের ১৪টি পঞ্চায়েতের মধ্যে রয়েছে ধনপোতা, লক্ষ্মীকান্তপুর, উড়েলচাঁদপুর পঞ্চায়েত। এই তিনটি পঞ্চায়েতের অধিকাংশ বাসিন্দাদের নিত্য প্রয়োজনে স্কুল, কলেজ, অফিস ট্রেন ধরে যেতে হলে আসতে হয় মগরাহাটে। ওই সমস্ত এলাকায় এখনও যান চলাচলের উপযোগী তৈরি হয়নি। কেবল মাত্র মগরাহাট থেকে ধনপোতা পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা পিচ রাস্তা হলেও দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় এবড়ো-খেবড়ো অবস্থায় যান চলাচলের জন্য রয়েছে মোটর ভ্যান। |
বাকি উড়েলচাঁদপুর পঞ্চায়েতে নোনাতলা, দাউজি, মল্লভপুর, লক্ষ্মীকান্তপুর পঞ্চায়েতে চৌকিতলা, বামনা, রাধানগরের গ্রামগুলিতে মগরাহাট থেকে যাতায়াতের জন্য এখন পর্যন্ত কোনও সড়ক পরিবহণ ব্যবস্থা নেই। কারণ ওই এলাকায় রাস্তাঘাটের উন্নয়ন হয়নি। কোথাও ইটপাতা রাস্তা, আবার কোথাও রয়েছে শুধু মাটির রাস্তা। বিদ্যুতের কোনও ব্যবস্থা নেই এই সমস্ত এলাকায়। ফলে সন্ধ্যা নামলেই বাড়ে দুর্ভোগ। ফলে ৩০ বছর ধরে মগরাহাট খাল ধরে ভুটভুটিই একমাত্র ভরসা সেখানকার বাসিন্দাদের। মগরাহাট থেকে দাইজি, ধনপোতা, লক্ষ্মীকান্তপুর পর্যন্ত সারা দিনে সাত-আটটি ভুটভুটি চলাচল করে। ভোর পাঁচটা থেকে রাত সাড়ে আটটা পর্যন্ত প্রায় কয়েক হাজার মানুষ প্রতিদিন ভুটভুটিতে চলাচল করেন। মগরাহাট থেকে ধনপোতা পর্যন্ত প্রায় ৬০ ফুট চওড়া এই খালেই কচুরিপানা গজিয়ে বেহাল হয়ে পড়েছে যাতায়াত ব্যবস্থা।
খালটি সংস্কারের দায়িত্বে রয়েছে সেচ দফতর। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে খালটির কোনও সংস্কার না হওয়ায় খালে জমেছে কচুরিপানা। সেই কচুরীপানা ঠেলে যাতায়াত গিয়ে মাঝেমধ্যেই পাখায় কচুরিপানার শিকড় আটকে গিয়ে বিকল হয়ে পড়ছে ভুটভুটি। স্থানীয় বাসিন্দা রমেন বর, শুকদেব বর বলেন, ‘‘রাস্তাঘাটের উন্নয়ন না হওয়ায় ভুটভুটিই একমাত্র যাতায়াতের ভরসা। তাও রাত হলে বন্ধ হয়ে যায়। কচুরিপানা ঠেলে যাতায়াত করতে গিয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে দেরি হয়ে যায়। অনেক সময়ই এখান থেকে মুমুর্ষু রোগী মগরাহাট ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার আগেই দুর্ঘটনা ঘটে যায়।”
মগরাহাট-২ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি খইরুল হক বলেন, “সেচ দফতরের ওই খালটি সংস্কার করতে যে টাকার প্রয়োজন, তা আমাদের তহবিলে নেই। বিষয়টি সেচ দফতরকে জানানো হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাঁরা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।” মগরাহাট সাব ডিভিশনের সেচ দফতরের সহকারি বাস্তুকার দীপক দাস বলেন, “ওই খালটি সংস্কারের জন্য প্রকল্প তৈরি করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো বয়েছে। অর্থ বরাদ্দ হলেই কাজ শুরু করা হবে।” |