ফল পাওয়া গেল বিদ্যুৎ দফতরের প্রচারে
হুকিং ছেড়ে সংযোগ নেওয়ার তাগিদ বাগদায়
পেশায় খেতমজুর। বাগদা ব্লকের দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা। স্ত্রী ও বউমা বাড়িতে বিড়ি বাঁধেন। ঘরে ফ্যান, টিভি সবই রয়েছে। যদিও তা বৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ থেকে নয়, হুকিং করে এ ভাবেই বছর দু’য়েক ধরে চলছে। শুধু ওই ব্যক্তিই নন, এলাকার সব বাড়িতেই একই অবস্থা। অথচ রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির সৌজন্যে এলাকায় বিদ্যুতের খুঁটি বসেছে। রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগও। তবু হুকিংয়ের প্রবণতা কেন?
জ্বলল আলো। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক।
বিদ্যুৎ দফতরের খোঁজখবরে প্রাথমিক এবং অন্যতম প্রধান কারণ হিসাবে টাকাকড়ির বিষয়টি উঠে এলেও আরও যে বিষয়গুলি সামনে এল তা হল বিপজ্জনকের পাশাপাশি হুকিং যে যে আইনত অপরাধ তা নিয়ে স্থানীয় মানুষের মধ্যে অজ্ঞতা। এর পরেই দফতরের পক্ষ থেকে এলাকায় হুকিং করলে কী কী সমস্যা হতে পারে তা নিয়ে শুরু হল ব্যাপক প্রচারাভিযান। স্থানীয় কোনিয়ারা-২ গ্রাম পঞ্চায়েতকে সঙ্গে এলাকায় গিয়ে বাসিন্দাদের বোঝানো শুরু হয়। হুকিং করা যে শুধু বেআইনি তাই-ই নয়, এর ফলে যে জীবনহানিও ঘটতে পারে সে ব্যাপারে সচেতন করা হয় বাসিন্দাদের। পাশাপাশি বৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নিলে কী সুবিধা হতে পারে তো বোঝানো হয়। হুকিংয়ের বিরুদ্ধে এই প্রচারাভিযানের মধ্যেই মঙ্গলবার দক্ষিণ পাড়ার বাসিন্দা ওই খেতমজুরের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই ব্যক্তির কথায়, “হুকিং করে বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে টিভি, ফ্যান চালানো যে কতটা বিপজ্জনক তা আগে বুঝিনি। কেউ বলেওনি। টাকা দিতে হবে না ভেবেই মত্ত ছিলাম। এখন মনে হচ্ছে কোনও বিপদ ঘটে গেলে কী হত! বিদ্যুৎবাবুরা এসে যখন বোঝালেন, বুঝলাম এতদিন অন্যায় করেছি। ওঁরাই বাড়িতে বিদ্যুতের ব্যবস্থা করে দিলেন।” শুধু এই পরিবারেই নয়, এ দিন এলাকায় আরও ১০৫টি পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ শুরু হয়েছে। বিদ্যুৎ দফতর সূত্রের খবর বাগদা ব্লকে ২৬০টি পরিবারে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে। এ দিন বেয়ারা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন মাঠে এই উপলক্ষে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি লিমিটেডের হাবরা ডিভিশনের ডিভিশনাল ম্যানেজার মৌপালি মুখোপাধ্যায়, রিজিওনাল ম্যানেজার তাপল হালদার, বাগদার স্টেশন ম্যানেজার সৌম্যদীপ সাধুখাঁ প্রমুখ।
বাসিন্দাদের মধ্যে হুকিং নিয়ে সচেতনার উদ্যোগ প্রসঙ্গে বিদুৎ দফতরের বক্তব্য, হুকিংয়ের ফলে প্রচুর আর্থিক ক্ষতি হচ্ছিল। তখনই ঠিক করা হয় হুকিংয়ের কুফল সম্পর্কে সচেতনতার প্রচার চালানো হবে। মৌপালি দেবী বলেন “হুকিং আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ এবং একইসঙ্গে বিপজ্জনকও। তা ছাড়া প্রচারে দেখা গিয়েছে, অনেকেই কী ভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে হবে সেটাই জানেন না। আশা করা যায়, এ বার প্রচারের সুফল পাওয়া যাবে।”
সদ্য বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ পাওয়া স্থানীয় গৃহবধূ নীপা মণ্ডল বলেন, “আলো না তাকায় খুবই সমস্যা হত। অনেক বেশি দামে কেরোসিন কিনতে হত। অন্যের বাড়িতে গিয়ে টিভি দেখতাম। এ বার একটা টিভি কিনব।” আর এক বাসিন্দা ফুলেশ্বরী বিশ্বাসের কথায়, “বাড়িতে পাঁচটা ছেলেমেয়ে। সবাই লেখাপড়া করে। আলো না থাকায় লম্ফ বা হ্যারিকেনের আলোয় কষ্ট করে পড়ত ওরা। বাড়িতে আলো এসে যাওয়ায় ওরাও খুব খুশি।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.