বিদেশি জাহাজের পণ্য খালাস করা নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এল ডায়মন্ড হারবারে। দুই গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের জেরে আপাতত জাহাজের পণ্য খালাস বন্ধ। এই দ্বন্দ্বে স্থানীয় বিধায়ক দীপক হালদার ও ডায়মন্ড হারবার পুরসভার ভাইস-চেয়ারম্যান পান্নালাল হালদারের নাম উঠে এসেছে।
বিদেশি জাহাজ মালপত্র (কাঠ, চিনি, মশলা) নিয়ে আসে ডায়মন্ড হারবারের আব্দালপুর গ্রামের কাছে হুগলি নদীতে। ওখানে জাহাজ থেকে মালপত্র নামানো হয় বার্জে। বার্জ ভরে যাওয়ার পরে ওই মাল চলে যায় হাওড়া ঘাটে ও খিদিরপুর বন্দরেও। ওই মালপত্র খালাসের কাজ কয়েক বছর ধরে করছে তৃণমূল সমর্থিত শ্রমিক সংগঠন। শ্রমিকদের অভিযোগ, কিছুদিন ধরে ওই তাঁদের কাজে বাধা দিচ্ছিল বহিরাগত সমাজবিরোধীরা। তাদের পিছনে বিধায়কের মদত থাকার অভিযোগ তুলে সোমবার সন্ধ্যায় ডায়মন্ড হারবারে ১১৭ নম্বর জাতীয় সড়কের জেটিঘাট মোড়ে অবরোধ করে বিক্ষোভও দেখান পণ্য খালাসের সঙ্গে যুক্ত থাকা পান্নালালবাবুর অনুগামী শ্রমিকেরা।
দু’দিন আগে একটি বিদেশি জাহাজ নোঙর করেছে আব্দালপুরে। মঙ্গলবার সকালে সেই জাহাজ থেকে পণ্য খালাসের সময় শ্রমিকদের বাধা দেয় একদল দুষ্কৃতী। শ্রমিকদের অভিযোগ, তাঁদের মারধর করার পাশাপাশি বার্জের সারেংকে হুমকি এবং বার্জের দড়ি কেটে দেয় হামলাকারীরা। এখনও পর্যন্ত ওই ঘটনায় লিখিত অভিযোগ হয়নি বলে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা পুলিশ সূত্রের খবর। জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “আমাদের কাছে দুই গোষ্ঠীর নেতারাই মৌখিক ভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন। আমরা সব পক্ষকে নিয়ে মীমাংসা বৈঠক করার জন্য আবেদন জানিয়েছি।”
তৃণমূল প্রভাবিত ওই শ্রমিক সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ, পান্নালাল-ঘনিষ্ঠ তাপস মল্লিকের অভিযোগ, “বিধায়কের মদতেই আমাদের শ্রমিকেরা আক্রান্ত হয়েছেন। কয়েক জনকে মারধর করা হয়েছে। ভয়ে জাহাজের মাল খালাস বন্ধ।” বিধায়ক দীপক হালদারের দাবি, “আমি ওই ঘটনার কিছুই জানি না। নিজেদের মধ্যে ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে দ্বন্দ্ব বেঁধেছে। চক্রান্ত করে আমাকে ওই ঘটনায় জড়ানো হচ্ছে।”
পণ্য খালাসের সঙ্গে যুক্ত থাকা শ্রমিকদের একাংশের বক্তব্য, দুই গোষ্ঠীর বিবাদে আখেরে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন তাঁরাই। তাঁদের ক্ষোভ, “মাল খালাস বন্ধ থাকায় দিনমজুরি মিলছে না। তার উপর কপালে জুটছে হুমকি আর মারধর।” পান্নালালবাবু বলেন, “ওখানে যে গোষ্ঠীর হাতে ওয়ার্ক অর্ডার রয়েছে, তারা পণ্য খালাসের কাজ করলেই তো কোনও ঝামেলা থাকে না।” |