সরকারি সাহায্য বণ্টন নিয়ে ক্ষোভ চাষিদের
ক্টোবর মাসে ডিভিসির ছাড়া জলে এবং কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে আরামবাগ মহকুমার খানাকুলের দু’টি ব্লকে চাষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। তারপর এক মাস অতিক্রান্ত হয়েছে। অবশেষে ক্ষতিগ্রস্থ চাষিদের জন্য সরকারি সাহায্য পৌঁছচ্ছে। কিন্তু সেই সাহায্য অপ্রতুল বলে অভিযোগ তুলে চাষিদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখা দিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। চাষীদের বক্তব্য, ক্ষতির পরিমাণের তুলনায় মাথা-পিছু সাহায্য যথেষ্ট কম। তার উপরে কৃষি দফতর থেকে পাওয়া বীজ-সার পঞ্চায়েত সমিতি থেকে এলাকার পঞ্চায়েত-পিছু সমস্ত চাষিকে ভাগ করে দিতে চাইছে। ফলে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তেরা বঞ্চিত হচ্ছে।
জেলা কৃষি দফতরের ডেপুটি ডাইরেক্টর স্বপন মুখোপাধ্যায় বলেন, “জেলায় সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত ওই দু’টি ব্লকে চাহিদা অনুপাতে সরকারি সাহায্য অপ্রতুল, এটা ঠিক। আমরা ক্ষতিগ্রস্থ চাষিদের নামের তালিকা অনুযায়ী বীজ-সার পাঠিয়েছি ব্লকগুলিতে। সেখান থেকে বিলির প্রক্রিয়া আমাদের জানা নেই। তবে আমরা চেষ্টা করছি ক্ষতিগ্রস্তদের যাতে আরও সাহায্য মেলে।” এ ব্যাপারে বিমাসংস্থার সঙ্গেও কথা বলা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তা ছাড়া ক্ষতিগ্রস্তেরা যাতে কৃষিঋণ পান, সে বিষয়ে তদ্বির করা হচ্ছে বলেও দাবি স্বপনবাবুর। তিনি জানান, ক্ষতিগ্রস্ত চাষিদের কারিগরী সহায়তা দিতে কৃষি দফতরের কর্মীদের বিশেষ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সরকারি কৃষি সহায়তা নিয়ে বিলিবণ্টনের অভিযোগ প্রসঙ্গে খানাকুল ২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তৃণমূলের অসিত সিংহরায় বলেন, “আমাদের ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েতের ৫৩টি মৌজার সমস্ত চাষের জমিই জলমগ্ন হয়ে ক্ষতি হয়েছে। যাঁদের জমি আছে, তাঁদেরই ফসল নষ্ট হয়েছে। সে কারণেই পঞ্চায়েত-পিছু কৃষি সহায়তা বণ্টন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” মহকুমা কৃষি দফতর সূত্রের খবর, খানাকুল ১ ব্লকে ১৩টি পঞ্চায়েতের ৫টির ১০টি মৌজায় কৃষিতে ক্ষতি হয়েছে। অরুণ্ডা পঞ্চায়েতেই ৫টি মৌজার মাটি এখনও ভিজে। আর ২ ব্লকে ১১টি পঞ্চায়েতের ৫৩টি মৌজার ৬৩০০ হেক্টর আমন চাষের জমির মধ্যে ৫০৫৮ হেক্টর জমিই প্লাবিত হয়ে ফসল নষ্ট হয়েছে। সব্জি চাষের ৩৭৮ হেক্টর জমির প্রায় ২৩০ হেক্টর ধংস হয়েছে। খানাকুল ২ ব্লক কৃষি আধিকারিক শুভব্রত বিশ্বাস জানান, বোরো ধানের বীজ পাওয়া গিয়েছে ৩০০০ ব্যাগ (ব্যাগ-পিছু ৬ কেজি), সর্ষে বীজ মিলেছে ৩০০০ ব্যাগ (ব্যাগ-পিছু ১ কেজি)। এ ছাড়া, তিল বীজ ১০০০ ব্যাগ (১ কেজি ব্যাগ), মুগ ডাল ১০০ ব্যাগ (ব্যাগ-প্রতি ৪ কেজি), বাদাম ৩০০ ব্যাগ (১৫ কেজি প্রতি ব্যাগে), হাইব্রিড ভুট্টা ৫০ ব্যাগ (ব্যাগ-পিছু ৩ কেজি) পাওয়া গিয়েছে। ৭৪৫০ জন ক্ষতিগ্রস্ত চাষির জন্য মাথা-পিছু ১০ কেজি করে সার পাওয়া গিয়েছে। তা পঞ্চায়েত সমিতিকে পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে। আরও ক্ষতিগ্রস্থ চাষিদের চিহ্ণিত করার কাজ চলছে। খানাকুল ১ ব্লকে ৭২৫০ জন ক্ষতিগ্রস্ত চাষির জন্য কৃষি সহায়তা পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্লক কৃষি আধিকারিক হরষিত মজুমদার।
খানাকুল ২ ব্লকের কুশালি গ্রামের এক চাষি আব্দুল মল্লিকের অভিযোগ, “আমার ৫ বিঘা জমির ধানই শুধু নষ্ট হয়নি, ধানের পরে ওই জমিতে আলু চাষের কথা ভেবেছিলাম। কিন্তু এখনও মাটি ভিজে থাকায় আলু চাষও হবে না। সর্বস্বান্ত হয়ে গেলাম।” তিনি জানালেন, যেভাবে তা বণ্টন হচ্ছে, তাতে ৫ কাঠা জমি চাষের উপকরণও জুটবে না। খানাকুল ২ ব্লকের অরুণ্ডা গ্রামের বিকাশ সরকার, পাতুল গ্রামের মন্টু রায়, মাড়োখানা গ্রামের সনাতন মাইতিদের মতো ক্ষতিগ্রস্থ চাষিদেরও একই অভিযোগ।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.