|
|
|
|
লগ্নি সংস্থায় লাগামের আর্জি, নোটিস কেন্দ্রকে |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, দেশ জুড়েই বিভিন্ন আর্থিক সংস্থার কেলেঙ্কারি ধরা পড়ছে। টাকা জমা রেখে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন অসংখ্য আমানতকারী। এই পরিপ্রেক্ষিতে বেসরকারি অর্থ লগ্নি সংস্থার কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণের নীতি তৈরির আর্জি জানিয়ে জনস্বার্থের মামলা করা হয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। মঙ্গলবার সেই মামলায় কেন্দ্র, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ও সেবি-কে নোটিস দিয়ে তাদের মতামত জানতে চেয়েছে সর্বোচ্চ আদালত। প্রধান বিচারপতি পি সদাশিবমের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এই ব্যাপারে অভিমত জানানোর জন্য কেন্দ্র এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলিকে চার সপ্তাহ সময় দিয়েছে।
সরকারের নজরদারির অভাবে বেশ কিছু বেসরকারি অর্থ লগ্নি সংস্থা সাধারণ মানুষের টাকা নয়ছয় করছে। মূলত দ্রুত অস্বাভাবিক হারে বাড়তি টাকা ফেরতের টোপ দিয়েই পঞ্জি প্রকল্প চালায় তারা। সাম্প্রতিক কালে সারদা গোষ্ঠীর কয়েক হাজার কোটি টাকার কেলেঙ্কারি ঘিরে দেশ জুড়ে তোলপাড় চলছে। শীর্ষ আদালতে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার জনস্বার্থের মামলায় সারদার তছরুপেরও উল্লেখ করা হয়েছে। মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, বেসরকারি লগ্নি সংস্থাগুলি যাতে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করার সুযোগ না-পায়, সেই জন্য তাদের কাজের ধারা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হোক। কী ভাবে তাদের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে, তার পদ্ধতি তৈরি করে দেওয়ারও আর্জি জানিয়েছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ মঙ্গলবার ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হয়ে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন। তিনি জানান, অনেক অর্থ লগ্নি সংস্থা বেআইনি ভাবে বাজার থেকে টাকা তুলছে। বিষয়টি এখনই নিয়ন্ত্রণ করা দরকার। আবেদনকারীর পক্ষ থেকে ওই আইনজীবী এ দিন শুধু সারদা গোষ্ঠীর সাম্প্রতিক কেলেঙ্কারি নয়, অন্য বেশ কিছু লগ্নি সংস্থারও নানা অনিয়মের উদাহরণ দেন। সাধারণ মানুষের স্বার্থে এই ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের হস্তক্ষেপ দাবি করেন। সর্বোচ্চ আদালত বিষয়টি দেখবে বলে জানিয়েছে।
সারদা গোষ্ঠীর কেলেঙ্কারিতে রাজ্য সরকারের উদ্যোগে কিছু আমানতকারীকে টাকা ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে ঠিকই। কিন্তু বিপুল সংখ্যক ক্ষতিগ্রস্তের মধ্যে খুব কম আমানতকারীই সেই সুযোগ পাচ্ছেন। এই অবস্থায় অভিযুক্ত সংস্থার সম্পত্তি বেচে টাকা ফেরতের দাবি উঠলেও এখনও তার ব্যবস্থা হয়নি। তবে কলকাতা হাইকোর্টের এক বিচারপতি সম্প্রতি টাওয়ার ইনফোটেক নামে একটি লগ্নি সংস্থার সম্পত্তি বেচে আমানতকারীদের টাকা মেটানোর নির্দেশ দিয়েছেন। হাইকোর্ট এ দিনই ওই সংস্থার সব তথ্য সিরিয়াস ফ্রড ইনভেস্টিগেশন অফিস (এসএফআইও)-কে দেওয়ার জন্য সেবি-কে নির্দেশ দিয়েছে। সেবি জানিয়েছে, তারা ইতিমধ্যেই এসএফআইও-র কাছে কিছু তথ্য পাঠিয়েছে। কতটা তথ্য পাঠানো হয়েছে, আরও কিছু প্রয়োজন কি না, মামলার পরবর্তী শুনানির দিন তা হাইকোর্টে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
আমানত সংগ্রহ বন্ধ রাখা এবং আমানতকারীদের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য টাওয়ার সংস্থাকে নির্দেশ দিয়েছিল সেবি। আর্থিক সংস্থাটি সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করে। আগের শুনানির দিন বিচারপতি জানিয়ে দেন, টাওয়ার সংস্থার সম্পদ বিক্রি করে আমানতকারীদের টাকা ফেরত দিতে হবে। কিন্তু এই কাজ করার পরিকাঠামো নেই হাইকোর্টের। তাই এসএফআইও-কে সেই দায়িত্ব দিতে চায় তারা। ফের মামলাটির শুনানি হবে আগামী সোমবার।
|
|
|
|
|
|