এক ঢিলে দুই পাখি।
শুধু পরিকাঠামো নির্মাণ নয়। সংলগ্ন জমির বাণিজ্যিক ব্যবহার করে অর্থ সংস্থানের পথেও হাঁটছে রাজ্য তথ্যপ্রযুক্তি দফতর। সেই লক্ষ্যে এই প্রথম তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক গড়তে বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।
সরকারি সূত্রের খবর, কৃষ্ণনগরে পাঁচ একর জমিতে স্বয়ংসম্পূর্ণ তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক তৈরি হবে। অর্থাৎ তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার জন্য অফিসের পাশাপাশি তৈরি হবে আবাসনও। থাকবে প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, কলেজ ও অন্যান্য সামাজিক পরিকাঠামো। সব মিলিয়ে প্রকল্পের খরচ প্রায় ৫০ কোটি টাকা। রাজ্যের আই টি প্রোমোশন সেল-এর প্রধান স্বরূপ রায় জানান, জমি চিহ্নিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা রাইটস পরিকল্পনা তৈরি করছে। ডিটেলড প্রজেক্ট রিপোর্ট ( ডি পি আর) তৈরির পরেই দরপত্র চাওয়া হবে। তাঁর দাবি, পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ মডেলে রাজ্যের প্রথম তথ্যপ্রযুক্তি পার্কটি নির্মাণের কাজ আগামী বছরের গোড়ার দিকেই শুরু হয়ে যাবে।
এ ধরনের যৌথ উদ্যোগের ক্ষেত্রে আগেই পথ দেখিয়েছে পরিবহণ, শিল্প ও বিদ্যুৎ দফতর। উদ্বৃত্ত জমির বাণিজ্যিক ব্যবহার করে সরকারি কোষাগার চাঙ্গা করার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই তারা শুরু করেছে। ৫টি পরিবহণ নিগমের বাড়তি জমি বিক্রির জন্য দরপত্র চেয়েছে রাজ্য। একই পরিকল্পনা নিয়েছে শিল্প দফতরও। ন্যাশনাল আয়রন অ্যান্ড স্টিল কোম্পানি (নিস্কো), লিলি বিস্কুট, নিও পাইপস ও ইলেকট্রো মেডিক্যাল অ্যান্ড অ্যালায়েড ইন্ডাস্ট্রিজকে অভিন্ন পরিচালন কর্তৃপক্ষের আওতায় এনে তাদের উদ্বৃত্ত জমি ও সম্পত্তি বাণিজ্যিক ভাবে ব্যবহার করতে চাইছে রাজ্য। ৫২ বছরের পুরনো সংস্থা দুর্গাপুর প্রোজেক্টস লিমিটেড-এর বাড়তি জমি নিলাম করেও সংস্থার সম্প্রসারণ ও পরিকাঠামো উন্নয়ন করতে চায় রাজ্য।
তবে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পার্ক গড়তে ১-৩ একরের বেশি বড় জমি নেই তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের। তবে কৃষ্ণনগর ও বোলপুরে রয়েছে ৫ একর। বোলপুরে পার্ক তৈরি শুরু হলেও আবাসন ও অন্যান্য পরিকাঠামো তৈরির পরিকল্পনা এখনও নেই। কৃষ্ণনগরে ইন্টিগ্রেটেড আইটি পার্ক তৈরির প্রস্তাব এসেছে জেলাশাসকের কাছ থেকেই। কারণ সেখানে এ ধরনের প্রকল্পের চাহিদা আছে।
সব মিলিয়ে রাজ্যে ১৩টি তথ্যপ্রযুক্তি পার্ক তৈরি হওয়ার কথা। মূলত জেলায় জেলায় তথ্যপ্রযুক্তি শিল্পকে ছড়িয়ে দেওয়ার লক্ষ্যেই এই সিদ্ধান্ত। মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে প্রথম শিল্প সম্মেলনেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন এই পরিকল্পনার কথা। তথ্যপ্রযুক্তি দফতর সূত্রের খবর, ৭টি পার্কের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। এর মধ্যে আছে খড়গপুর, রাজারহাট, বোলপুর, আসানসোল ও বড়জোড়া। শিলিগুড়ি ও দুর্গাপুরে প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ। এসার, হিন্দুজা ও আবুজ-এর মতো সংস্থা সেখানে কাজ শুরু করেছে আগেই। দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজও শুরু হয়েছে। এক একটি পার্ক তৈরি করতে খরচ প্রায় ২০ কোটি টাকা। |