বাজনা আর রকমারি আলোয় শেষ হল আরং
প্রায় একশো বছরেরও বেশি সময় আগে যখন উৎসব শুরু হয়েছিল, তখন তা ছিল সাদামাটা। কিন্তু বর্তমানে পূর্বস্থলী ১ ব্লকের শ্রীরামপুর পঞ্চায়েতের রাস উৎসবের জন্য অনেক দিন আগে থেকে অপেক্ষায় থাকে এলাকাবাসী।
নদিয়ার নবদ্বীপের রাস বহুল পরিচিত। আর নবদ্বীপ স্টেশনের গা ঘেঁষেই পূর্বস্থলীর শ্রীরামপুর পঞ্চায়েত। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, একশো বছরেরও বেশি সময় আগে নবদ্বীপের রাস উৎসব ছড়িয়ে পড়ে শ্রীরামপুরে। বছর যত এগিয়েছে, এই উৎসবের জৌলুস বেড়েছে বই কমেনি। পূর্বস্থলী পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, গোটা ব্লকে এ বার রাসের প্রতিমা তৈরি করেছে ৬৫টি ক্লাব। এর মধ্যে ৬০টি শ্রীরামপুর এলাকায়। এলাকার বিভিন্ন ক্লাব দেবদেবীর প্রতিমা তৈরি করে থাকে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
রাস মানেই শুধু রাধা-কৃষ্ণের আরাধনা নয়। অন্যান্য দেবদেবীও একই ভাবে আরাধ্য, এমনটাই মাথায় রেখে ক্লাবগুলি মূর্তি বানিয়েছে। উত্তর শ্রীরামপুর এলাকার ঘোষপাড়া পুজো কমিটি একশো বছরের বেশি সময় ধরে তৈরি করে আসছে অন্নপূর্ণা প্রতিমার মূর্তি। শ্যামা মাতা পুজো কমিটির তৈরি করেছে কালী প্রতিমা। নবপল্লী নিউস্টার ক্লাব আবার বানিয়েছে রাধা-কৃষ্ণের মূর্তি। সঙ্গে জয়া-বিজয়া নামে দুই সখী। দক্ষিণ শ্রীরামপুর স্টেশন রোডের প্রতিমার থিম রণচণ্ডী, রিক্রিয়েশন ক্লাব তৈরি করেছে গঙ্গামাতা। শিবশক্তি ক্লাবের প্রতিমা বৈষ্ণব দেবী।
পূর্বস্থলীতে একটি রাসের মণ্ডপ। —নিজস্ব চিত্র।
কালীমাতা বারোয়ারির প্রতিমা হল কালী। সুকান্তপল্লী আমরা ক’জনের থিম গণেশ জননী। কুণ্ডুপাড়ার থিম হল গঙ্গামাতা। আবার উত্তর শ্রীরামপুর আইচ পাড়ার থিম কমলাকামিনী। চার দিনের এই উৎসবের শেষ হয় শোভাযাত্রার মধ্যে দিয়ে। থাকে বাদ্যযন্ত্র ও রকমারি আলোর খেলা। শেষ দিনটিকে বলা হয় আরং। ওই দিন শোভাযাত্রাও ছাড়াও এলাকাবাসী মেতে ওঠে আবির খেলায়।
মঙ্গলবার দুপুরে শ্রীরামপুর এলাকার বিভিন্ন ক্লাবে এসে গিয়েছে চাকা দেওয়া লোহার গাড়ি। ওই গাড়িতে চাপিয়ে প্রতিমাকে এলাকা প্রদক্ষিণ করানো হয়। মণ্ডপে মণ্ডপে চলে এসেছে বাদ্যযন্ত্র। শ্রীরামপুর এলাকার বাসিন্দা বিশ্বজিৎ হালদার বলেন, “গভীর রাত পর্যন্ত চলবে আরং। উৎসবের টানেই মানুষ ভোর রাত পর্যন্ত জাগবে।” আর এক বাসিন্দা পলাশ মজুমদার জানান, উত্তর শ্রীরামপুর এলাকায় প্রথমে রাস শুরু হলেও, পরে দক্ষিণ শ্রীরামপুর এলাকায় তা ছড়িয়ে পড়ে। রাসের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িত মেলা। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
পূর্বস্থলী থানা কমিটি ২০১২ সাল থেকে শুরু করেছে রাস সৃজন সম্মান। এলাকার সেরা পুজোগুলিকে পুরস্কৃত করা হয় এই সম্মানের মধ্যে দিয়ে। পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিক বলেন, “এ বারই প্রথম ৩৫টি পুজো মণ্ডপ উৎসবের জন্য সরকারি অনুমোদন নিয়েছে। আশা করি আগামী বছর আরও বাড়বে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.