সেনাকে জমি দিতে যৌথ কমিটি রাজ্যে
তুন ঘাঁটির জন্য জমি-জট কাটাতে এ বার যৌথ কমিটি গড়ল রাজ্য ও সেনাবাহিনী। প্রশাসন সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গে দু’টি নতুন ঘাঁটি তৈরি করতে চায় সেনা। বহর বাড়ানো হতে পারে কালিম্পঙের সেনা ছাউনিরও। সোমবার নবান্নে সামরিক-অসামরিক সমন্বয় বৈঠকে এই তিনটি কারণে হাজার একরেরও বেশি জমি চেয়েছেন সেনা-কর্তারা। ওই জমি অধিগ্রহণের জন্যই এ দিন যৌথ কমিটি গড়া হয়েছে বলে সেনা সূত্রের খবর। গত বছরই পানাগড়ে তাদের ঘাঁটির বহর বাড়ানোর জন্য ১২০০ একর জমি চেয়েছিল সেনা। নবান্নে রাজ্য প্রশাসনের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, এ দিনের বৈঠকে মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্রের নেতৃত্বে ভূমি, বন ও বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকেরা ছিলেন। সেনাবাহিনীর বেঙ্গল এরিয়ার জি-ও-সি লেফটেন্যান্ট জেনারেল অশোককুমার চৌধুরির নেতৃত্বে হাজির ছিলেন সেনাকর্তারা। পরে এক সেনা অফিসার বলেন, “কোথায়, কী ভাবে উপযুক্ত জমি মিলতে পারে, তা এই যৌথ কমিটি ঘুরে দেখবে।”
প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর, পুর ও নগরোন্নয়ন, জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের নানা উন্নয়নমূলক প্রকল্পের জন্য সেনার কাছে কিছু জমি চেয়েছিল রাজ্য। কিন্তু জমি-জটে সেগুলি আটকে রয়েছে। এই যৌথ কমিটি তৈরির পিছনে ওই জমি-জট কাটানোর উদ্দেশ্যও রাজ্য সরকারের থাকতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
কেন নতুন ঘাঁটি তৈরি হচ্ছে এ রাজ্যে?
সেনা সূত্রের খবর, নিরাপত্তার প্রশ্নে এখন পাকিস্তানের থেকেও চিনকে বেশি বিপজ্জনক বলে মনে করছে ভারত। সেই কারণেই চিনের সঙ্গে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা (এলএসি) বরাবর শক্তি বাড়ানো হচ্ছে। তৈরি করা হচ্ছে পার্বত্য যুদ্ধের জন্য বিশেষ বাহিনী, ‘মাউন্টেন স্ট্রাইক কোর’। সেনার ব্যাখ্যা, উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির নিরাপত্তার জন্য উত্তরবঙ্গ (শিলিগুড়ি করিডর) বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। চিনা সেনা সিকিম কিংবা তিব্বতের চুম্বি উপত্যকা থেকে নেমে শিলিগুড়ির দখল নিলে উত্তর-পূর্বাঞ্চল বাকি দেশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। সেই কারণেই ঘাঁটি তৈরির জন্য পশ্চিমবঙ্গকে বেছে নেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া গত কয়েক বছরে একাধিক বার চিনা সেনা সিকিম দিয়ে অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছে। বিষয়টির স্থায়ী সমাধানের জন্য উত্তর-পূর্বে সেনাবাহিনীর শক্তি বাড়াতে চাইছে সেনা। ও জলপাইগুড়ির ডামডিমে সেনা ছাউনির জন্য ৭৫০ একর, সগাঁওয়ে বিমান ঘাঁটির জন্য ৩৬১ একর জমি চাওয়া হয়েছে।
সেনা সূত্রের খবর, পানাগড়ে ‘মাউন্টেন স্ট্রাইক কোরে’র সদর দফতর হবে। নতুন কেনা বিমান সি-১৩০ জে সুপার হারকিউলিস বিমানের ঘাঁটিও তৈরি করা হবে সেখানে। তাই পানাগড়েও প্রায় ১২০০ একর জমি প্রয়োজন। সেনার এক মুখপাত্র জানান, সামরিক শক্তি-বৃদ্ধির অঙ্গ হিসেবে তাঁরা চান যাতে এই রাজ্য থেকে আরও বেশি লোক বাহিনীতে যোগ দেন। এক সেনা-কর্তা বলেন, “অফিসার পদে যোগ দিলে ওড়িশার মতো কয়েকটি রাজ্য প্রায় এক লক্ষ টাকা করে উৎসাহ ভাতা দিচ্ছে। একই রকমের উৎসাহ ভাতা চালু করার জন্য এ দিন রাজ্যের কাছেও অনুরোধ করেছি।”
সেনা সূত্রের খবর, পঞ্জাব, হরিয়ানা-র মতো রাজ্য দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সেনানী, যুদ্ধে মৃত সেনার বিধবা পত্নী এবং যুদ্ধক্ষেত্রে সাহসিকতার পুরস্কার প্রাপকদের যতটা সাম্মানিক ভাতা দেয়, এই রাজ্য ততটা দেয় না। ওই সেনা অফিসারের কথায়, “সাম্মানিক ভাতার অঙ্কটা বাড়ালেও অনেকে উৎসাহিত হবেন। সেই অনুরোধও করা হয়েছে।” প্রাক্তন সেনানীদের চিকিৎসাকেন্দ্র খোলার জন্য শহরের বাইরে এক লপ্তে কিছুটা জমি এবং এনসিসি নগর তৈরির জন্যও জমি এ দিন চাওয়া হয়েছে রাজ্যের কাছে। বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে এনসিসি ক্যাম্প করা হয়। সেগুলি এক জায়গায় যাতে করা যায়, তার জন্যই এই এনসিসি-নগর গড়ার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে সেনা সূত্রের খবর।

পুরনো খবর:





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.