বাংলায় দ্বিতীয় সেনা স্কুল নিয়ে বৈঠক আজ
মাঝখানে ৫১ বছরের অপেক্ষা। পুরুলিয়ার পরে দ্বিতীয় সৈনিক স্কুল পাচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ। এ বার দার্জিলিঙে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে এখন শুধু হরিয়ানা আর বিহারেই দু’টি করে সৈনিক স্কুল রয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দার্জিলিঙে দেশের ২৫তম সৈনিক স্কুলের কাজ শুরু হতে চলেছে। পাহাড়ের ঠিক কোথায় ওই স্কুল গড়া হবে, সেই জমি এবং অন্যান্য খুঁটিনাটি ঠিক করতে সেনা এবং রাজ্য প্রশাসনের কর্তারা আজ, সোমবার নবান্নে বৈঠকে বসছেন।
সরকারি সূত্রের খবর, ১৯৬২-র ভারত-চিন যুদ্ধের পরে পুরুলিয়ায় সৈনিক স্কুল তৈরি হয়েছিল। পুরুলিয়া শহর থেকে মাত্র চার কিলোমিটার দূরে রাঁচি-পুরুলিয়া রোডের উপর ২৭৯ একর জমিতে নির্মিত এটিই পূর্ব ভারতের প্রথম সৈনিক স্কুল। উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং পশ্চিমবঙ্গ থেকে আরও বেশি সংখ্যায় সেনা অফিসার তৈরির আঁতুড়ঘর হিসেবেই এই স্কুল গড়া হয়েছিল। পরবর্তী কালে, ’৬৪ সালে অসমের গোয়ালপাড়া, ’৭১-এ মণিপুরের ইম্ফলে এবং ২০০৭ সালে নাগাল্যান্ডের পুঙ্গলওয়ায় আরও তিনটি সৈনিক স্কুল গড়া হয়েছে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এ বার দার্জিলিঙে একটি সৈনিক স্কুল গড়তে চাইছে।
দেশের অধিকাংশ সৈনিক স্কুলই ষাটের দশকে তৈরি হয়েছিল। সেই সব স্কুল থেকে পাশ করা ছাত্রদের অনেকেই এখন সেনা, বায়ুসেনা এবং নৌবাহিনীর উচ্চ পদে আসীন। পুরুলিয়া সৈনিক স্কুল থেকে এ-পর্যন্ত ২৫০০ জন ছাত্র বেরিয়েছেন বলে সেনা সূত্রের খবর। তাঁদের মধ্যে ৩২০ জন ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে যোগ দিয়ে সেনা অফিসার হয়েছেন। ২০১৪ সালের ১ জানুয়ারি দেশের বায়ুসেনা-প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেবেন এয়ার মার্শাল অরূপ রাহা। তিনিও পুরুলিয়া সৈনিক স্কুলের প্রাক্তনী। এর আগে হরিয়ানার কুঞ্জপুরা সৈনিক স্কুলের প্রাক্তনী জেনারেল দীপক কপূর সেনাপ্রধান হয়েছেন। মহারাষ্ট্রের সাতারা সৈনিক স্কুলের প্রাক্তনী এয়ার চিফ মার্শাল পিভি নাইক হন বায়ুসেনা-প্রধান।
পূর্বাঞ্চলে সেনাবাহিনীর মুখপাত্র, গ্রুপ ক্যাপ্টেন তরুণকুমার সিংহ বলেন, “দার্জিলিঙে সৈনিক স্কুল হলে সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে পাহাড়ি এলাকার ছাত্রেরা আরও উৎসাহী হবে। আশা করব, রাজ্য সরকার জমি জোগাড় করতে এবং পরিকাঠামো গড়তে সাহায্য করবে।” সেনা মুখপাত্র জানান, সৈনিক স্কুল শুধু সেনা অফিসার তৈরির জন্যই নয়, সামগ্রিক ভাবে সেখানকার ছাত্রদের ব্যক্তিত্ব বিকাশও ওই সব স্কুলের লক্ষ্য। সেই জন্যই সমাজের বিবিধ ক্ষেত্রে সৈনিক স্কুলের ছাত্রেরা নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন। যেমন পুরুলিয়া সৈনিক স্কুলের প্রাক্তনী নেফিউ রিও এখন নাগাল্যান্ডের মুখ্যমন্ত্রী। ওই স্কুলেরই প্রাক্তনী স্বামী দিব্যানন্দ তীর্থজি এখন ঢোলকা-ভানপুরা পীঠের শঙ্করাচার্য।
সেনাকর্তারা জানান, সৈনিক স্কুল তৈরিতে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের সরকারের সহযোগিতা জরুরি। কারণ, জমি এবং প্রাথমিক পরিকাঠামো নির্মাণের ভার রাজ্যকেই নিতে হয়। দার্জিলিঙেও জমি জোগাড় করে দেওয়ার দায়িত্ব রাজ্যকেই নিতে হবে। তবে জিটিএ-র দায়িত্বে থাকা গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা নেতৃত্ব কেন্দ্রের কাছে পাহাড়ে সৈনিক স্কুলের দাবি জানিয়েছিলেন। তাই জমি জোগাড়ে তাঁরাও সাহায্য করবেন বলেই ফৌজি কর্তাদের আশা। ফৌজি সূত্রের খবর, জমি ছাড়াও রাজ্য সরকার মেধাবী ছাত্রদের বৃত্তি দিয়ে থাকে। মূলত ছাত্রদের দেওয়া ফি থেকে স্কুল পরিচালনার খরচ চললেও প্রতিরক্ষা মন্ত্রক প্রতি বছর বিশেষ অনুদান দিয়ে থাকে। এ ছাড়া প্রতিটি সৈনিক স্কুলের অধ্যক্ষ, প্রধান শিক্ষক এবং রেজিস্ট্রার পদে তিন বাহিনীর তিন অফিসারকে নিয়োগ করা হয়।
সেনাকর্তাদের বক্তব্য, এখন হরিয়ানার রেওয়ারি ও কুঞ্জপুরা এবং বিহারের নালন্দা ও গোপালগঞ্জে দু’টি করে সৈনিক স্কুল রয়েছে। আর কোনও রাজ্যে দু’টি সৈনিক স্কুল গড়া হয়নি। সে-ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ হবে তৃতীয় রাজ্য, যেখানে দু’টি সৈনিক স্কুল আছে। পুরুলিয়ার পাশাপাশি দার্জিলিঙে আরও একটি সৈনিক স্কুল হলে বাংলা থেকে আরও বেশি সংখ্যায় সেনা অফিসার মিলবে।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.