মাতৃত্ব এখনও ঝুঁকির কোচবিহারের গ্রামে-গঞ্জে
স্বাস্থ্য-কাঠামো উন্নয়নের আশ্বাস আধিকারিকদের
প্রসব বেদনায় কাতরাচ্ছিলেন মা। খবর দেওয়া হয় ‘নিশ্চয় যান’কে। পৌঁছতে অনেক দেরি করে ওই যান। তোর্সা নদী পার করে মা আমিনাকে নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে। ততক্ষণে তিনি আর নেই। ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুধু আমিনা বিবি নয়, এক বছরে কোচবিহার দুই ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এলাকায় প্রসবের আগে ও সময়ে মৃত্যু হয়েছে ৫ জন মায়ের। প্রসবের পরে মৃত্যু হয়েছে ৩৯টি শিশুর। সবক’টি ক্ষেত্রেই অভিযোগের আঙুল কোচবিহারের পুন্ডিবাড়ির ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের দিকে। কখনও নিশ্চয়যান পৌঁছতে দেরি, আবার কখনও দেরিতে চিকিৎসার অভিযোগ রয়েছে। সবচেয়ে বেশি ‘রেফার’ করার অভিযোগ।
সোমবার ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিদর্শনে যান জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকারিক শুভাশিস সাহা। সঙ্গে জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শুচিস্মিতা দেবশর্মা। দু’জনেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিষেবার হাল ফেরানোর ব্যাপারে সব রকম চেষ্টা করা হচ্ছে বলে আশ্বাস দিয়েছেন। শুচিস্মিতা বলেন ‘‘আমাদের সরকার স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে জোর দিয়েছে। এই ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিকাঠামো ও চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়ন করা হবে।’’ স্বাস্থ্য বিভাগের এক আধিকারিক এই দিন জানান, ওই ব্লকের গ্রামগুলিতে এখনও বাড়িতে প্রসবের চল রয়েছে বলে জটিলতা হচ্ছে। পুন্ডিবাড়ি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের উপরে প্রায় দু’লক্ষ মানুষ নির্ভরশীল। সেখানে বর্হিবিভাগের সঙ্গে অন্তর্বিভাগও চালু রয়েছে। অন্তর্বিভাগে ২০টি শয্যা। ২৪ ঘণ্টা পরিষেবা দেওয়া হয়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, চিকিৎসক ও পরিকাঠামো সমস্যায় রোগীদের সঠিক পরিষেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সামান্য কারণেই রোগীদের জেলা হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। ৫ জন মেডিক্যাল অফিসার থাকার কথা থাকলেও তিন জন আছেন। তাঁরা হাসপাতাল চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। একজন স্ত্রী-রোগ বিশেষজ্ঞ, এক জন অ্যানাস্থেটিস্ট সহ ৩ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক থাকার কথা। এক জনও নেই। অপারেশন থিয়েটার থাকলেও চিকিসক না থাকায় ‘সিজার’ করানোর ব্যবস্থা নেই। শুধু স্বাভাবিক প্রসবের ব্যবস্থা রয়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রের খবর, ২০১২-১৩ সালে ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৬০০ শিশুর জন্ম হয়েছে। সেখানে ওই বছরেই বাড়িতে প্রসব হয়েছে দুই হাজারের বেশি শিশুর। তাঁদের মধ্যে অনেকের মৃত্যু হয়েছে। সেখানে রক্ত পরীক্ষা, এক্সরে করানোর কোনও ব্যবস্থা নেই। ওই কেন্দ্রে একটি ‘নিশ্চয় যান’ রয়েছে। আর একটি যান প্রয়োজন বলে বাসিন্দাদের দাবি। তা হলে চাহিদা অনুযায়ী সঠিক সময়ে ওই যান পরিষেবা দিতে পারবে। এলাকার উপপ্রধান গোপাল সরকার ওই সব দাবির কথা সিএমওএইচকে জানান। তিনি এই দিন তাঁদের আশ্বস্ত করেন। গোপালবাবু বলেন, “চিকিৎসকের সংখ্যা বাড়ানো হলে কিছুটা সমাধান হবে। ৩৫টি শয্যা রাখার ব্যবস্থা আছে। শয্যাসংখ্যা বাড়াতে বলা হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.