বাক্সবন্দি শিশুর নড়াচড়া, পরে মৃত্যু ঘিরে বিক্ষোভ
ন্মের কিছুক্ষণ পরেই মৃত্যু হয়েছে বলে যে শিশুকে বাক্সবন্দি করে অভিভাবকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল, সেই ‘মৃত’ শিশু সাত ঘণ্টা পর নড়ে উঠল। সঙ্গে সঙ্গে তাকে নিও নেটাল ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। মা-বাবার অভিযোগ, ডাক্তার-নার্সদের অবহেলার দরুনই মৃত্যু হয়েছে তাদের একমাত্র সন্তানের। জন্মের পর পর যেখানে শিশুর বিশেষ দেখভালের প্রয়োজন, সেখানে তাঁর সন্তানকে রাখা হয়েছিল কাগজের বাক্সের মধ্যে।
গত ১৪ নভেম্বর শিলচর শহরের এক প্রতিষ্ঠিত নার্সিংহোমে প্রসব বেদনা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন পাঁচগ্রাম দাস কলোনির জহরকান্তি দাসের স্ত্রী, বছর তিরিশের পুষ্পা দাস। জহরবাবুর অভিযোগ, ১৭ নভেম্বর ভোরে স্ত্রীর ব্যথা বেড়ে গেলে তিনি নার্সদের ডাকেন। পাত্তা দেননি তাঁরা। ফিরে এসে দেখেন, এমনিতেই প্রসব হয়ে যাচ্ছে। এ কথা জেনে নার্সিং হোমে পৌঁছন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক এস জি বন্দনা। পুষ্পাকে ডেলিভারি রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। কিছুক্ষণ পর ডাক্তারই জহরবাবুকে বাবা হওয়ার খবর দেন। কিন্তু সে খুশি বেশিক্ষণ টেকেনি। কার্টনে পুরে ‘মৃতদেহ’ তুলে দেওয়া হয় জহরবাবুর হাতে। তিনি সেটি নিয়ে রেখে দেন পুষ্পার বেডের নীচে। ভেবেছিলেন, নার্সিং হোমের বিল মিটিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে মৃত শিশুকেও নিয়ে যাবেন। বাড়ি গিয়ে হবে সৎকার পর্ব।
কিন্তু বিল মেটানোর পুরো টাকা হাতে না থাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে যান। তখনই মৃত শিশুটি কেমন হয়েছিল তা দেখতে কার্টন খুলে বিস্মিত জহরবাবুর শ্যালিকা। শিশুটি জীবিত! নড়াচড়া করছে! খবর পেয়ে ছুটে আসেন জহরবাবু, আসেন ডাক্তারও। সঙ্গে সঙ্গে শিশুটিকে নার্সিংহোমের নিও ন্যাটাল ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিটে পাঠানো হয়। ঘণ্টা পাঁচেক শিশু চিকিৎসক প্রসেনজিৎ সনোয়ালের তত্ত্বাবধানে থাকার পর তার মৃত্যু হয়।
শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গাইনির শিক্ষক বন্দনার বক্তব্য, “ছয় মাসের গর্ভ। এটি ঠিক ডেলিভরি নয়, হয়েছিল অ্যাবরসন। এই ধরনের ক্ষেত্রে সামান্য নড়াচড়া করলেও বাচ্চার বাঁচার সম্ভাবনা থাকে না।” ফলে একে প্যাকেটবন্দি করে দেওয়ার মধ্যে দোষের কিছু দেখছেন না তিনি। একই দাবি তাঁর স্বামী প্রসেনজিৎ সনোয়ালেরও। তিনি বলেন, “যখন আইসিইউ শিশুটিকে পাঠানো হয় তখন তার শ্বাস পড়ছিল মাঝে মাঝে। হৃদযন্ত্র চলছিল অত্যন্ত ধীরে। যেখানে সুস্থ-স্বাভাবিক ভারতীয় নবজাতকের গড় ওজন আড়াই কিলোগ্রাম, সেখানে জহরবাবুর বাচ্চার ওজন ছিল মাত্র ৬০০ গ্রাম।”
তবে সনোয়াল দম্পতির মতো সব দোষ ঝেড়ে ফেলছেন না নার্সিং হোম কর্তৃপক্ষ। সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর মৃদুল মজুমদার জানান, তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। তাতে ডাক্তাররা রয়েছেন। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.