এ বারের বিয়ের মরসুমে কনেপক্ষ ও বরকর্তাদের বিয়ের জন্য তাজা ফুল জোগাড় করতে হিমসিম খেতে হতে পারে। এমনই শঙ্কা ব্যবসায়ীদের।
পুজোর আগে দক্ষিণবঙ্গের মেদিনীপুর, নদিয়া ও দুই চব্বিশ পরগনায় ব্যাপক বৃষ্টি হওয়ায় মার খেয়েছে গোলাপ ও রজনীগন্ধার চাষ। তার উপর বন্যায় ক্ষতি হয়েছে ফুলের খেতে। তাই জোগান কমার আশঙ্কায় চিন্তিত উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ারের ফুল ব্যবসায়ীরা।
জলপাইগুড়ির উদ্যান পালন বিভাগের আধিকারিক শুভাশিস গিরি বলেন, “মূলত দাসপুর, পাশকুড়া, নদিয়া, রানাঘাট এলাকা ছাড়াও দুই চব্বিশ পরগণায় ব্যাপক বৃষ্টি হয়েছে। সেখানে ফুল গাছে হাজা রোগ হয়ে বহু ফুলের গাছ মরে গিয়েছে। মার খেয়েছে ফুলের উৎপাদন। বিয়ের মরসুমে বেশি চাহিদা থাকে গোলাপ ও রজনীগন্ধার। সেগুলি ওই এলাকা থেকেই আসে। স্বাভাবিক ভাবেই এ বার জোগান অনেকটা কমবে।’’
বিয়ের কুঞ্জ থেকে বরমালা, মাথায় ফুলের মুকুট, কনের বসার আসন, গোলাপের পাপড়ি ছড়ানো ফুলসজ্জাটান পড়তে পারে সব কিছুতেই। বিয়ের দিনে মাথায় রজনীগন্ধার চেনের সঙ্গে গোলাপের কুঁড়ি গুঁজতে গেলেও চিন্তা করবেন মহিলারা। গত বছর যে গোলাপ তিন থেকে পাঁচ টাকায় বিক্রি হয়েছিল এ বার তার দাম বেড়ে ৮-১০ টাকা হতে পারে বলে আশঙ্কা। বিয়েবাড়ি মনের মতো সাজাতে গেলে বাড়তি কড়ি গুনতে হবে পাত্রপাত্রীদের পরিবারকে। তবে মুশকিল আসানে তৈরি ব্যবসায়ীরা। তাজা গোলাপ বা রজনীগন্ধা না থাকুক, তার জায়গায় প্লাস্টিকের ফুল দিয়েই দুধের সাধ ঘোলে মেটাবেন তাঁরা।
দক্ষিণবঙ্গ থেকে ফুল এনে চাহিদা মতো বাসিন্দাদের বাড়ি সাজান আলিপুরদুয়ারের ফুল ব্যবসায়ী হীরক ঘোষ, তিমির ঘোষরা। তাঁরা জানান, গত বারের তুলনায় সমস্ত ফুলেরই দাম বেড়েছে। তাঁরা বলেন, “এ বছর আগে থেকে অর্ডার দেওয়া হচ্ছে রানাঘাটের ফুলের আড়তদারদের কাছে। কম ফুল পাওয়া যাবে বলে জানিয়ে দিয়েছেন আড়তদারেরা।”
ব্যবসায়ীর জানাচ্ছেন, গত বছর রজনীগন্ধার মালা বিক্রি হয়েছিল ১৪০-১৫০ টাকা। এ বার তা বেড়ে হতে পারে ২০০-২৫০ টাকা। গোলাপ ফুল গত বছর ছিল ৩-৫ টাকা পিস এবার তা ৮-১০ টাকা পিস, গ্ল্যাডিওলাস ছিল ৪টাকা পিস। এ বার তা ৭-৮ টাকা পিস হতে চলেছে। বাড়ছে গাঁদা ফুলের দামও। যোগান কমে যাওয়ায় সমস্ত ক্রেতাকে খুশি করতে ব্যবহার বাড়ানো হবে প্লাস্টিক ফুলের।
নদিয়ার রানাঘাট এলাকার ফুলের আড়তদার নিতু সাহা বলেন, “নিম্নচাপের জেরে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। তার উপর পুজোর আগে বন্যা আসতেই মাথায় হাত পড়েছে ফুল চাষিদের। বৃষ্টির জেরে পচে গিয়েছে ফুলগাছের গোড়া। যে চাষি হাজার কেজি ফুল সরবরাহ করতেন, তিনি মাত্র তিনশো কেজি ফুল সরবরাহ করছেন। তাই এ বার বিয়ের মরশুমে ফুলের চাহিদা অন্য বারের থেকে অনেক বেশি হবে।” |