‘সব হল, শুধু আউটের বলটাই জোগাড় করতে পারলাম না’
য়াংখেড়ের আগে পর্যন্ত তাঁর ক্রিকেটজীবনে মনে রাখার মতো কিছু ছিল না। কোনও দিন পাঁচ উইকেট পাননি, সেঞ্চুরি করেননি। কিন্তু ওয়াংখেড়েতে সচিন রমেশ তেন্ডুলকরের শেষ উইকেট পাল্টে দিয়েছে তাঁর সব কিছু। ইতিহাসেও ঢুকে পড়েছেন তিনি।
তবু নরসিংহ দেওনারায়ণের আফসোস যাচ্ছে না। ক্রিকেট-ঈশ্বরকে যে বলে তিনি আউট করেছেন, সেটাই তো আর নেওয়া হল না!
সোমবার কথা বলতে গিয়ে সেই আক্ষেপ ঝরে পড়ছিল দেওনারায়ণের। বলছিলেন, “স্কুলে পড়ার সময় অবাক হয়ে সচিনের খেলা টিভিতে দেখতাম। সেই সচিনকেই যে তাঁর শেষ ইনিংসে আউট করব এটা স্বপ্নেও ভাবিনি। দুঃখ এটাই যে বলটাই যোগাড় করতে পারলাম না। এই আক্ষেপটা থেকেই যাবে সারাজীবন।”
শেষ ঘাতক

ওয়েস্ট ইন্ডিজ অনুশীলনের ফাঁকে দেওনারায়ণ। সোমবার। ছবি: দেবাশিষ সেন।
শিবনারায়ণ চন্দ্রপলের মতো তাঁরও গায়না থেকে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটে উত্থান। ব্যাটের সঙ্গে সঙ্গে স্পিন বোলিংটাও করতে পারেন। বাবা হয়েছেন মাত্র ছ’মাস। ঐতিহাসিক টেস্টে সচিনের উইকেট পেতেই বারবিসের বাড়িতে লাফিয়ে উঠেছিলেন স্ত্রী। দেওনারায়ণ বললেন, “সে দিন ড্রেসিংরুমে ফিরতেই স্ত্রী ফোন করেছিল। খুব উত্তেজিত। বলল, এখনই ইন্ডিয়া ড্রেসিংরুমে গিয়ে তেন্ডুলকরের অটোগ্রাফ তোমার ব্যাটে নিয়ে এসো। পারলে জার্সিতেও সই করিয়ে নাও। ছেলে বড় হলে বলতে পারবে, আমার বাবা সচিনের শেষ টেস্ট উইকেটটা নিয়েছিল। বুড়ো হলে তুমি-আমিও বলতে পারব আমাদের নাতি-নাতনিদের।”
স্ত্রীর ফোন রেখেই ব্যাট আর গোটা ছ’য়েক টি-শার্ট নিয়ে দেওনারায়ণ ছুটেছিলেন সচিনের কাছে। মাস্টার ব্লাস্টার দেওনারায়ণের স্ত্রীর আবদার শুনে হাসতে হাসতে সই করে দেন। যা নিয়ে দেওনারায়ণ বলছেন, “সচিনের মতো এ রকম ডাউন টু আর্থ ক্রিকেটার দেখিনি। সই তো পেলামই। সঙ্গে মূল্যবান কিছু টিপস। যা আগামী দিনে কাজে লাগবে।”
জিজ্ঞেস করা হল, এরিক হোলিসের নাম শুনেছেন কি না। স্যর ডন ব্র্যাডম্যানকে শেষ টেস্টে আউট করে বিখ্যাত হয়েছিলেন যিনি। সেই হোলিসের ভাগ্যের সঙ্গে তো কোথাও গিয়ে আপনারটাও জুড়ে গেল। এরিক হোলিসের কথা শুনেছেন? হেসে পেলে ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটার বলতে শুরু করলেন, “হোলিসের নাম শুনেছি। বিশ্বাস করুন ও সব ভেবে সচিনকে বল করতে যাইনি। পাগল নাকি? শেন ওয়ার্ন আর মুরলীধরনকে যে অবলীলায় শাসন করেছে, টেস্টে পনেরো হাজারের বেশি রান করেছে, সেখানে আমি কে?” একটু থেমে ফিরে গেলেন সচিনের শেষ উইকেট নেওয়ার মুহূর্তটায়। “স্যামি যখন বলটা দিল তখন আমি প্রথম চারটে ডেলিভারি একদম স্ট্রেটার রেখেছিলাম। পঞ্চমটায় একটু গতি বাড়িয়ে ছেড়েছিলাম। বলটা অফস্টাম্পের বাইরে একটু বেশি লাফাল। লেট কাট করতে গিয়ে স্যামির হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেল আমার আইডল।”
সেই মুহূর্ত

ক্রিকেটার তেন্ডুলকর যে তাঁর জীবনে প্রবল সম্মানীয় ব্যক্তিত্ব, বোঝা গেল। কিন্তু মানুষ তেন্ডুলকর? জবাবে আবেগ ‘আধুনিক এরিক হোলিস’-এর গলায়। বললেন, “শেষ দিন যে বক্তৃতাটা দিল সেটা যেমন গোছানো তেমন আবেগে ভরা। তেন্ডুলকর কেমন মানুষ তা বুঝতে ওই স্পিচটাই যথেষ্ট।”
একটা সময় তাঁকে খেলতে গিয়ে অতীতে সমস্যায় পড়েছেন মাইকেল ক্লার্ক। টেস্টে আজ পর্যন্ত একুশটা উইকেট পেয়ছেন দেওনারায়ণ, যার মধ্যে ক্লার্কের দু’টো। ক্লার্ক না তেন্ডুলকর? কার উইকেট আগে রাখবেন? শুনে তাচ্ছিল্যের হাসি ক্যারিবিয়ানের মুখে। ফের বলছেন, “সচিনের উইকেটের ধারে কাছে কেউ আসবে না। টেস্টে জীবনের সেরা মুহূর্ত। আক্ষেপ ওই একটাই। বলটা যে পেলাম না।”




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.