লিফটের সমস্যা, বাস কম ইত্যাদি কারণ দেখিয়ে নবান্নে সরকারি কর্মীদের অনেকেই পৌঁছচ্ছিলেন দেরিতে, বেরোচ্ছিলেন তাড়াতাড়ি। সেই দিন এ বার শেষ হতে চলল। কর্মসংস্কৃতি উন্নত করতে অফিসে ঢোকা-বেরোনোর সময় নথিভুক্ত করার জন্য নতুন সচিবালয়ে ‘বায়োমেট্রিক্স অ্যাটেনডেন্স’ চালু করতে চাইছে রাজ্য সরকার। অর্থাৎ প্রযুক্তি ব্যবহার করে কে কখন অফিসে ঢুকছেন বা চলে যাচ্ছেন, তার নথি যাচাইয়ের সুযোগ পাবে প্রশাসন।
বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকেরা জানান, এখন হাজিরা খাতা থাকে বিভাগীয় কর্তাদের ঘরে। অফিসে আসার পরেই সেই খাতায় সই করার জন্য প্রত্যেক কর্মীকে অন্তত এক বার ঢুকতে হয় ওই ঘরে। তাঁরা ঠিক সময়ে ঢুকছেন বা বেরোচ্ছেন কি না, তা দেখার জন্যই কর্তার ঘরে খাতা রাখার ব্যবস্থা চালু হয়েছিল। কিন্তু বহু ক্ষেত্রে বিভাগীয় কর্তারা সে-দিকে নজর দেন না। সেই সুযোগে কর্মীদের একাংশ ফাঁকি দেন বলে অভিযোগ। একাধিক বিভাগীয় কর্তা বলেন, “নবান্নে বেলা ১২টা পর্যন্ত হাজিরায় অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দেখা গেল, বহু কর্মী চলেও যাচ্ছেন তাড়াতাড়ি।”
হাজিরায় নজরদারির জন্য নতুন পদ্ধতিতে অবশ্য আপত্তি নেই কর্মী সংগঠনগুলির। কো-অর্ডিনেশন কমিটির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য বিজয়শঙ্কর সিংহ বলেন, “বায়োমেট্রিক্স হাজিরা ব্যবস্থায় আমাদের কোনও আপত্তি নেই। কিন্তু তা চালু করার আগে নবান্নে পৌঁছনোর সুষ্ঠু পরিবহণ ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করা জরুরি।”
তৃণমূল প্রভাবিত ইউনাইটেড স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ ফেডারেশনের সহ-সভাপতি মঙ্গলময় ঘোষ এবং আইএনটিইউসি অনুমোদিত কনফেডারেশন অব স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায়ও নতুন ব্যবস্থাকে স্বাগত জানিয়েছেন। মলয়বাবু বলেন, “শুধু কর্মীদের জন্যই নয়, বিভাগীয় আধিকারিকদের জন্যও একই ব্যবস্থা চালু করা উচিত।” |