|
|
|
|
দিল্লি থেকে দক্ষিণগামী দুরন্ত থামবে মাঝপথে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
যাত্রী বাড়ন্ত। তাই কৌলিন্য খোয়াতে বসেছে একাধিক দুরন্ত এক্সপ্রেস।
এক দিকে দিল্লি থেকে পূর্ব ভারতগামী দুরন্ত এক্সপ্রেসগুলিতে যাত্রী উপচে পড়ছে। দু’মাস আগে কেটেও কলকাতাগামী দুরন্ত এক্সপ্রেসগুলিতে কনফার্ম টিকিটের আকাল। অন্য দিকে দিল্লি থেকে দক্ষিণগামী দুরন্ত একপ্রেসগুলিতে বহু আসন ফাঁকা থাকছে! বিষয়টি দেখে চিন্তিত মন্ত্রক গত কয়েক মাস ধরে সমীক্ষা চালিয়ে দেখেছে, দুরন্ত হল পয়েন্ট টু পয়েন্ট ট্রেন। মাঝপথে কোনও স্টপেজ না থাকায় যাত্রীরা উঠতে বা নামতে পারছেন না। ফলে দক্ষিণের অন্য গাড়িগুলিতে যখন টিকিটের হাহাকার, তখন ওই একই লাইনে ফাঁকা যাচ্ছে দুরন্তগুলি! সমীক্ষা আরও বলছে, যাত্রীদের মধ্যে দক্ষিণগামী দুরন্তের চাহিদাও কম। তাঁরা অন্য এক্সপ্রেস ট্রেনগুলিকে বেশি পছন্দ করছেন।
এই অবস্থায় যাত্রী চাহিদার বিষয়টি মাথায় রেখে আগামী বছরের শুরু থেকে দক্ষিণ ভারতের দুরন্ত ট্রেনগুলিকে একাধিক স্টেশনে দাঁড় করানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। রেলের এক কর্তা বলেন, “এর ফলে ওই ট্রেনগুলি আর দুরন্ত শ্রেণিভুক্ত থাকবে না। সেগুলিকে সুপারফাস্ট এক্সপ্রেস ট্রেন হিসেবে গণ্য করা হবে। তবে ভাড়া কী হবে, তা এখনও ঠিক হয়নি।” দক্ষিণের পাশাপাশি উত্তর ভারতের কয়েকটি জায়গা নিয়েও সমস্যা দেখা দিয়েছে। দিল্লি-অজমেঢ়ের মধ্যে চলা দুরন্ত এক্সপ্রেসে যাত্রী না হওয়ায় তা বন্ধ করে দিয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে ওই লাইনে জনশতাব্দী এক্সপ্রেস চালু করেছে রেল মন্ত্রক। প্রশ্ন উঠেছে দিল্লি-লখনউয়ের মধ্যে চলা দুরন্ত নিয়েও।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বিতীয় দফায় রেলমন্ত্রী হওয়ার পরে প্রথম দুরন্ত এক্সপ্রেস চালু করেছিলেন। বর্তমানে গোটা দেশে ৩১ জোড়া দুরন্ত চলে। তার মধ্যে দিল্লি থেকে কলকাতার জন্য চলে দু’টি। সেখানে দিল্লি থেকে দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন শহরের জন্য চলে ছয় জোড়া দুরন্ত। গত ছয় মাসের সমীক্ষায় মন্ত্রক দেখেছে, এর মধ্যে দিল্লি-চেন্নাই ও দিল্লি-যশবন্তপুরের মধ্যে চলা দুরন্তে আশানরূপ যাত্রী হচ্ছে না। ফলে আয় কমে গিয়েছে রেলের। একই সমস্যা দিল্লি-সেকন্দরাবাদের মধ্যে চলা দুরন্ততেও। তাই আরও যাত্রী বহনের জন্য নতুন বছরের শুরু থেকেই ওই স্টেশনগুলির মধ্যে দুরন্তের পরিবর্তে সুপারফাস্ট এসি এক্সপ্রেস চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মন্ত্রক।
তবে এরই মধ্যে রাজ্যের জন্য আশার আলো শুনিয়েছে রেল মন্ত্রক। পূর্ব ভারতগামী ট্রেনগুলিতে যাত্রী সংখ্যা বেশি হওয়ায় অল্প সময়ের ব্যবধানে পরপর দু’টি দুরন্ত চালানোর কথা ভাবছে মন্ত্রক। রেলের পরিভাষায় যাকে বলা হচ্ছে ‘ক্লোন দুরন্ত’। বর্তমানে দিল্লি থেকে যথাক্রমে শিয়ালদহ ও হাওড়াগামী দুরন্ত এক্সপ্রেস ছাড়ে রাতে ও দুপুরে। মন্ত্রকের বক্তব্য, দুরন্তের মতো দ্রুতগতির ট্রেন চালানোর জন্য লাইন ফাঁকা পাওয়াটা খুব জরুরি। তাই হাওড়া ও শিয়ালদহগামী দুরন্ত দিল্লি ছাড়ার এক ঘণ্টার মধ্যেই যদি ফের হাওড়া বা শিয়ালদহমুখী আরেকটি দুরন্ত চালানো যায়, তবেই লাইন খালি পাওয়া সম্ভব। প্রাথমিক ভাবে শিয়ালদহ দুরন্তের সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ক্লোন দুরন্ত চালানোর বিষয়ে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে মন্ত্রক। তবে কবে থেকে রাজ্যের ভাগ্যে এই নতুন দুরন্তের শিকে ছিঁড়বে, তা এখনও স্পষ্ট করেনি রেল মন্ত্রক। বিষয়টির সঙ্গে জড়িত রেলকর্তাদের অবশ্য দাবি, কাজ অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে। আগামী এক মাসের মধ্যেই এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
|
|
|
|
|
|