গির্জার খবরদারি, প্রচারে নিষিদ্ধ স্লোগান, পোস্টার
ক্লাস চলছে। ছাত্রদের বয়সের কোনও ঠিক-ঠিকানা নেই। কেউ ১৭ তো কেউ ৭০। শিক্ষক অবশ্য তরুণ। ল্যাপটপে ছাত্রদের পড়াচ্ছেন। জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, বিনা পয়সায় কোন ওয়েবসাইট থেকে এসএমএস পাঠানো যায়? ফেসবুকে কেমন ভাবে কমিউনিটি খোলা যায়? কী ভাবে সমমনস্ক বন্ধুদের খুঁজে বার করে বক্তব্য ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব? ক্র্যাশ কোর্স। কোর্সে উত্তীর্ণ হলেই মিলছে মোবাইল আর সিম। কাউকে বা দেওয়া হচ্ছে ইন্টারনেট ডঙ্গল।
গির্জা ও গির্জার অধীনস্থ সামাজিক সংগঠনগুলির কড়া চোখ রাঙানিতে মিজোরামে প্রথাগত ভোট প্রচার বন্ধ। নেতারা এলে তিন-চারজন প্রার্থী এক মঞ্চেই প্রচার চালাচ্ছেন। কিন্তু পাড়ায়-পাড়ায় সভা নেই। ‘মিজোরাম পিপল্স ফোরাম’ (এমপিএফ) যেন সমান্তরাল নির্বাচন কমিশন হয়ে উঠেছে, নজরদারি চালাচ্ছে ভোটের প্রচারে। ভোটের দিন ঘোষণার পরেই গির্জা ও এমপিএফ-এর তরফে প্রার্থীদের ‘কী করণীয়’ ও ‘কী নয়’ কাজের জন্য চার পাতার তালিকা প্রকাশ করেছে। ভোটের নামে মাইকের নিনাদ, স্লোগান নিষিদ্ধ। ভোটারদের সাবধান করা হয়েছে, মদ্যপ বা অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত প্রার্থীদের যেন ভোট দেওয়া না হয়।
মিজোরামের ৯৪% খ্রিস্টান। ৭০% প্রেসবিটেরিয়ান চার্চভুক্ত। চার্চের সম্পাদক রবার্ট হ্যালিডে বলেন, “মিজোরা চারিত্রিক ভাবেই ধর্মের প্রতি অনুগত। তারা গির্জার বিরোধিতা করবেন না।” এমপিএফ রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গে চুক্তিও করেছে। চুক্তি অনুযায়ী, জাঁকজমকের ভোট প্রচার, ভোটারদের ঘুষ দেওয়া বা গাড়ি করে নিয়ে যাওয়া, পোস্টার লাগানো, বনভোজন করানোর মতো কাজ নিষিদ্ধ। চুক্তি ভাঙলে এমপিএফ ওই দলকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করার হুমকি দিয়েই রেখেছে। ১৫ থেকে ২০ হাজার ভোটারের এক একটি কেন্দ্রে তাই ধর্মপ্রাণ ভোটারদের চটাবার ঝুঁকি কেউ নিচ্ছে না। হ্যালিডের সাফ কথা, “মিজোরাম রাজ্য হয়েছে ১৯৮৬ সালে। গির্জা তার বহু আগে থেকেই মিজোদের ভালমন্দের সঙ্গী, শিক্ষক, পথ প্রদর্শক। তাই রাজ্যের চেয়ে গির্জা যে বড় তা নিয়ে তর্কের অবকাশ নেই।” বিরক্ত নেতাদের অনেকেই মনে করেন, ধর্মের দোহাই দিয়ে গির্জা অষ্টাদশ শতকের ইউরোপীয় শাসন চালাবার চেষ্টা করছে। এমপিএফ ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন হয়ে উঠবে। তবু বিরোধিতার সাহস দেখাচ্ছেন না কেউই।
অগত্যা, প্রচারে ভরসা এসএমএস আর ফেসবুক। কংগ্রেস বা এমএনএফ, জেডএনপি বা নির্দল প্রার্থীদের হয়ে প্রচারের জন্য কার্যত কলসেন্টার বসিয়ে দিয়েছে দলীয় দফতরে। চলছে ভোটারদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহের কাজ। মোবাইল পরিষেবা প্রদানকারীদের দম ফেলার ফুরসত নেই। নাগাড়ে কেনা হচ্ছে সিম।
সব দলেরই গড়ে ৬০% নেতা-মন্ত্রী ফেসবুক, টুইটার করে সমর্থকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। ‘ওয়ে টু এসএমএস’-এর মতো বিনামূল্যের এসএমএস পরিষেবা ঢালাও ব্যবহার করা হচ্ছে। মনপসন্দ ও আকর্ষণীয় এসএমএস পাঠাবার জন্য ছোট ছোট লিমেরিক, চমকদার লাইন ভেবে বেরা করা হচ্ছে। সাংবাদিকদেরও ফেসবুক, এসএমএস-এর মাধ্যমেই চটজলদি বিবৃতি পাঠাচ্ছে সব দল। কেনা হচ্ছে মোবাইল, ল্যাপটপ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.