তেল নয়ছয় রোধে পদক্ষেপ পুরসভার
পুরসভার গাড়ি থেকে তেল চুরির ঘটনায় বিভাগীয় তদন্ত করার সিদ্ধান্ত নিলেন কর্তৃপক্ষ। এর পাশাপাশি, যে পদ্ধতিতে এখন গাড়ির তেল দেওয়া হয় তারও পরিবর্তন ঘটাতে চাইছেন তাঁরা। হাতে লেখা স্লিপের বদলে চালু হতে চলেছে কম্পিউটর স্লিপ। এর ফলে রেকর্ড রাখা সম্ভব হবে বলে মনে করছে পুর-প্রশাসন। এক পদস্থ পুরকর্তার কথায়, “এত দিন ধরে হাতে লেখা স্লিপ দেওয়ার রেওয়াজ রয়েছে। বিভিন্ন দফতর থেকে পাঠানো ওই স্লিপ দেখেই গাড়িতে তেল দিতেন গ্যারাজগুলিতে কর্তব্যরত কর্মীরা। এমনকী, ডিজেল গাড়ির জন্য কেন পেট্রোল বরাদ্দ হল তা-ও যাচাই করে দেখা হত না।” ওই অফিসার জানান, গত ৪০-৪৫ বছর এ ভাবেই চলেছে। আগেকার কোনও পুরবোর্ডই এ ব্যাপারে তেমন ভাবে ‘নজর’ দেয়নি। আর তার ফাঁক গলে প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকার তেল নয়ছয় হয়েছে বলে মনে করছেন তিনি। এই কাজে সেন্ট্রাল গ্যারাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক অফিসার জড়িত বলে অভিযোগ। ওই কর্তা বলেন, “এমন কয়েক জন অফিসার ও কর্মী সেন্ট্রাল গ্যারাজে আছেন, যাঁরা দীর্ঘ দিন একই পদে আছেন।”
পুরসভা সূত্রের খবর, ২০১২-র সেপ্টেম্বরে অডিট রিপোর্টে প্রায় ৭০টি গাড়ির নম্বর মিলেছে যাদের তেল দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ওই সব গাড়ি পুরসভার কোন কাজে লেগেছিল, তার কোনও তথ্যই পুরসভার কাছে নেই। এ বার সেই গাড়িগুলির নম্বর ধরেও খোঁজা হচ্ছে কেন সেগুলিকে তেল দেওয়া হয়েছিল এবং এর পিছনেই বা কাদের হাত ছিল।
একই সঙ্গে পুরসভার কাজে ব্যবহৃত গাড়িগুলিকে তেল দেওয়ার হিসেবেও কড়া নজর রাখতে সব দফতরকে নির্দেশ দিয়েছেন পুর কমিশনার। প্রসঙ্গত, অফিসারদের গাড়ির জন্য দৈনিক হিসেবে তেল দেওয়া হয়। ডিজেল গাড়িতে দৈনিক পাঁচ লিটার ও পেট্রোল গাড়ির ক্ষেত্রে ছ’লিটার। কিন্তু সে গাড়ি কত পথ চলল, তা দেখা হয় না। এ বার থেকে তা-ও দেখতে বলা হয়েছে।
পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরের এক অফিসার জানান, এমন অনেকে আছেন যাঁরা বাড়ি থেকে অফিস যাওয়া এবং ফেরার জন্য দৈনিক বরাদ্দ তেল তোলেন। যা খরচই হয় না। কেউ আবার একসঙ্গে ৫-৬ দিনের তেল নেন। এ ভাবেই ক্রমাগত তেলের বিল বেড়ে চলেছে। অডিট রিপোর্ট পাওয়ার পরেও তেল বরাদ্দে লাগাম না টানলে পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হবে বলে মনে করছেন অনেকেই। সেই প্রেক্ষিতেই এই নির্দেশ বলে পুরসভা সূত্রে খবর। সোমবার পুর-প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জয়েন্ট মিউনিসিপ্যাল কমিশনার উৎপল সরকারকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তাঁকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।
সম্প্রতি পুরসভার ৬টি গ্যারাজ থেকে বিভিন্ন গাড়িতে তেল দেওয়ার বিষয়ে অভ্যন্তরীণ অডিট করতে গিয়ে তেলের হিসেবে প্রচুর গরমিল মেলে। ওই অডিট রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল, এক মাসে প্রায় সাড়ে ৫৩ লক্ষ টাকার তেল দেওয়া হয়েছে এমন কতকগুলি গাড়িতে যেগুলি পুরসভার কাজে ব্যবহৃত হয়নি। ওই অডিট রিপোর্টের কপি পৌঁছেছে মেয়র ও পুর কমিশনারের কাছে। তা দেখেই রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছেন পুরকর্তারা। অডিট রিপোর্ট হাতে পেয়ে ইতিমধ্যেই চার জন কর্মীকে তেল দেওয়ার কাজ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এই চক্রের মূল পাণ্ডাদের খোঁজে তদন্ত জরুরি বলে মনে করছে পুর প্রশাসন। ওই অডিটের বিষয়ে পুরসভার মুখ্য অডিটর সুব্রত সান্যাল অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.