একশো দিনের কাজ প্রকল্পে লাক্ষা চাষ শুরু করে দিল্লির নজর কাড়ল দক্ষিণ দিনাজপুর। বালুরঘাট ব্লকের চকভৃগু গ্রাম পঞ্চায়েতের চকরমানাথ ও মোস্তাফাপুর মৌজায় ২৫ একর জমিতে চলছে লাক্ষা চাষ। প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, লাক্ষা চাষ করে গ্রামবাসীরা বিকল্প কর্মসংস্থানের খোঁজ পান। জেলা প্রশাসন থেকে লাক্ষ্যা চাষ এবং কর্মসংস্থানের বিষয়ে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকে রিপোর্ট পাঠানো হয়। রিপোর্ট পেয়ে বিস্তারিত খোঁজ খবর নিতে জেলায় একশো দিন প্রকল্পে দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিককে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছে মন্ত্রক। প্রশাসন সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় প্রকল্পে ব্যতিক্রমী কাজের নিরিখে জেলাকে মন্ত্রক পুরস্কৃত করবে। লাক্ষা চাষের সফলতার জন্য এ জেলা ওই পুরস্কারের অন্যতম দাবিদার হয়ে উঠেছে।
২০১২-১৩ বছরে সেলিয়াটা গাছের চারা লাগিয়ে প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন তৎকালীন জেলাশাসক দুর্গাদাস গোস্বামী। এলাকার প্রায় ১২ একর জমিতে চাষ শুরু হয়। বর্তমান জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেন, “প্রথম দফায় এই প্রকল্পে ১০০ দিনের কজের তহবিল থেকে প্রায় ১৪ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করা হয়। জলধারণের ক্ষমতা কম, একফসলি জমিতে লাক্ষার মত বিকল্প চাষে আর্থিক উন্নতির লক্ষ্যে ওই প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে।” |
চকভৃগুতে ‘পাইলট প্রোজেক্ট’ হিসেবে এলাকার এক ফসলি জমির মালিক, তফসিলি ও আদিবাসী কৃষকদের প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। জমির মালিকদের নিয়ে উপভোক্তা কমিটি গড়ে তাঁদের দিয়েই পুরো চাষের বিষয়টি তদারকি করানো হয়। প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত এলাকার শেফালি তপ্ন, লেয়া সুরিনেরা বলেন, “গাছ বড় হয়ে উঠেছে। খুব শীঘ্রই লাক্ষা কীট পালনের মাধ্যমে লাক্ষা উৎপাদন শুরু করা হবে।” জেলা প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, লাক্ষা থেকে তৈরি গালার রং এবং ওষুধ শিল্পে এর বিপুল চাহিদা রয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও এর চাহিদা ক্রমে বেড়েই চলেছে বলে জানানো হয়েছে। ফলে সীমান্তবর্তী দক্ষিণ দিনাজপুরে ১০০ দিনের কাজের মাধ্যমে শুরু হওয়া এই লাক্ষা চাষ প্রকল্প ঘিরে জেলার আর্থ সামাজিক উন্নয়নে যথেষ্ট প্রভাব বাড়বে।
প্রকল্পের জেলা নোডাল অফিসার কৌশিক সিংহ বলেন, “ব্যক্তিগত উপভোক্তা স্কিমের আওতায় এলাকার তফসিলি ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষ নিজেদের জমিতে জব কার্ডের মাধ্যমে কাজ করেছেন। জমি তৈরি ও চারা লাগানোর সঙ্গে রোজ গড়ে প্রায় ২০০ জন প্রকল্পের কাজে যুক্ত হন। এ ছাড়া লাক্ষা চাষ প্রকল্পে এলাকার স্বনির্ভর দলের প্রতিনিধিদের যুক্ত করে রাঁচিতে পাঠিয়ে তাদের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়।”
প্রশাসন সূত্রের খবর, ১০০ দিনের প্রকল্পে কাজের গতি আনার পাশাপাশি গ্রামের গরিব মানুষদের আর্থিক উন্নয়নের প্রসার ঘটাতে অনুর্বর জমিতে লাক্ষা চাষ ছাড়াও, নদী দিঘি সংস্কার, হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সবুজায়ন তৈরির মত উদ্যোগ ১০০ দিনের প্রকল্পে নেওয়া হয়েছে। |