শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের হাত ধরে গোটা ভারতে নিজেদের পরিব্যাপ্ত করার যে পরিকল্পনা বেলুড় মঠ নিয়েছে, সেই পথে এক ধাপ এগোলো বৃন্দাবন রামকৃষ্ণ মিশন সেবাশ্রম।
উত্তর ভারতে মিশনের কর্মপরিধি বিস্তারে নিজেদের আশ্রম পরিসরে থাকা নার্সিং স্কুলটির পরিকাঠামোগত উন্নতি ঘটিয়ে আগামী দিনে কলেজে পরিণত করার সিদ্ধান্ত নিলেন বৃন্দাবন সেবাশ্রম কর্তৃপক্ষ। এর জন্য প্রয়োজনীয় অনুমোদন ও পরিকাঠামোগত সহায়তার লক্ষ্যে আগামী সপ্তাহেই লখনউতে রাজ্যের স্বাস্থ্য কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে চলেছেন বৃন্দাবন রামকৃষ্ণ সেবাশ্রমের সচিব স্বামী সুপ্রকাশানন্দ।
বর্তমানে ওই নার্সিং স্কুলটিতে ফি বছর ২০ জন ছাত্রী ভর্তি হতে পারেন। দুঃস্থ পরিবারের ওই কিশোরীরা সকলেই স্থানীয় মথুরা-বৃন্দাবন এলাকার। সুপ্রকাশানন্দের বক্তব্য, “স্কুল থেকে যাঁরা পাশ করেন, তাঁদের ফের ডিগ্রির জন্য অন্য জায়গায় ভর্তি হয়। কিন্তু এক বার আমাদের স্কুলটি কলেজে উন্নীত হলে এখান থেকেই ছাত্রীরা সাড়ে পাঁচ বছর পরে একেবারে ডিগ্রি নিয়ে বেরোতে পারবেন। কলেজ হলে আরও বেশি সংখ্যক দুঃস্থ ছাত্রী পড়ার সুযোগ পেয়ে নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে পারবেন।” মিশন সূত্রে জানানো হয়েছে, পঠন-পাঠনের তত্ত্বাবধান করবে ইন্ডিয়ান নার্সিং কাউন্সিল।
১৯০৭ সালে বৃন্দাবনে আগত পুণ্যার্থীদের চিকিৎসার উদ্দেশ্যে একটি দাতব্য হোমিওপ্যাথিক কেন্দ্র খোলার মধ্যে দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল মিশনের ওই শাখাটি। ধীরে ধীরে যা এখন মহীরূহের আকার ধারণ করেছে। বর্তমানে একশোর অধিক শয্যাবিশিষ্ট একটি অত্যাধুনিক হাসপাতাল ছাড়াও এলাকার বিধবাদের উন্নতিতে নিয়মিত ভাবে কাজ করে আসছে বৃন্দাবন সেবাশ্রম। সম্প্রতি স্বামী বিবেকানন্দের সার্ধ শতবর্ষে নতুন একটি পালক যোগ হল সেবাশ্রমের মুকুটে।
স্বামীজির সার্ধ শতবর্ষ উদ্যাপনকারী কমিটির কাছে আশ্রম চত্বরে একটি প্রেক্ষাগৃহ নির্মাণের জন্য আবেদন করেছিল বৃন্দাবন সেবাশ্রম। তৎকালীন অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে উদ্যাপনকারী কমিটি তাতে সবুজ সঙ্কেতও দেয়। গত শুক্রবার কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের অর্থ সাহায্যে নির্মীত সেই প্রেক্ষাগৃহটির উদ্বোধন করেন স্থানীয় বিধায়ক প্রদীপ মাথুর। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চেন্নাই রামকৃষ্ণ মঠের অধ্যক্ষ স্বামী গৌতমানন্দ মহারাজ। স্বামীজীর সার্ধ শতবর্ষ উপলক্ষ্যে তিন দিনের একটি ধর্ম সম্মেলনেরও আয়োজন করে বৃন্দাবন সেবাশ্রম। |