ডুয়ার্সের বন্ধ বাগানের শ্রমিকদের সাহায্যে রাজ্য জুড়ে কলকারখানার শ্রমিকদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহের পথে নামছে সিটু। রবিবার ডুয়ার্সের তিনটি বন্ধ বাগান ঘুরে দেখার পরে এ কথা জানান সিটু রাজ্য সভাপতি তথা রাজ্য সভার সাংসদ শ্যামল চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “বাগানগুলিতে মানুষ মারা যাচ্ছেন। ঠিকমত কোনও পরিষেবা পাচ্ছেন না। আমরা বন্ধ বাগান নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ এনে প্রচার করব। সেই সঙ্গে আগামী ২ ডিসেম্বর অর্থ সংগ্রহ করা হবে। সেই টাকা বাগান শ্রমিকদের মধ্যে বিলি করা হবে।” এই প্রসঙ্গে তৃণমূল শ্রমিক সংগঠনের রাজ্যের নেত্রী দোলা সেন বলেন, “সিপিএমের টাকা তোলার বাহানার অভাব হয় না।” দশ বছর আগে রেড ব্যাঙ্ক সহ ধরণীপুর ও সুরেন্দ্র চা বাগান বন্ধ হয়। বাম আমলে বন্ধ হলেও তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর বাগানগুলি ফের চালু হয়। গত অক্টোবর মাসে বাগান তিনটি ফের বন্ধ হয়ে যায়। এত দিন ওই বন্ধ চা বাগানের শ্রমিকরা মাসিক ভাতা হিসাবে দেড় হাজার টাকা শ্রম দফতরের থেকে পেতেন। সরকারি নিয়ম অনুসারে বাগান চালু হওয়ার পর শ্রমিকদের ভাতা পাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। শ্রমিকেরা জানান, রাজ্য সরকার অন্ত্যোদয় যোজনার চাল ও গম সরবরাহ করা হলেও তা গোটা মাস চলে না। বাগানে জল বা চিকিৎসা পরিষেবার সমস্যা রয়েছে। নানা অসুখে ভুগে গত অক্টোবর মাসেই মোট ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। বাগানের দুরবস্থার কথা জানার পর গত সোমবার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে রাজ্যের ৩ মন্ত্রী রেডব্যাঙ্ক চা বাগানে যান। সে সময় শ্রমমন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু শ্রমিকদের বকেয়া ৫ কোটি টাকা আদায়ের জন্য মালিকের সঙ্গে বৈঠক ডাকার কথা জানান। মালিক পক্ষ বৈঠকে না এলে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলেন। দ্রুত বাগানগুলি চালু-সহ জল, বিদ্যুৎ এবং চিকিৎসার বিষয়টি দেখার কথা মন্ত্রীরা জানান। এ দিন রেডব্যাঙ্ক, সুরেন্দ্র নগর ও ধরণীপুর বাগানে যান শ্যামলবাবু। তিনি জানান, তিনমন্ত্রী বাগান ঘুরে গেলেও শ্রমিকদের সমস্যা মেটাতে উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। আমি সাংসদ কোটা থেকে দু’টি গভীর নলকূপের ব্যবস্থা করব। ২০০২ সাল থেকে ডুয়ার্সে একের পর এক বাগান বন্ধ হতে থাকে। কাঁঠালগুড়ি, রামঝোরা-সহ ডুয়ার্সের প্রচুর বন্ধ বাগানের শ্রমিক মৃত্যুর খবর সামনে আসে। রাজ্যে ক্ষমতা হাতছাড়া হওয়ার পর দুই বছর আগে বন্ধ ঢেকলাপাড়া বাগানের আসেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্র। এদিন শ্যামলবাবুর বন্ধ তিনটি বাগান একইভাবে ঘুরে দেখেন। |