সচিন-সহ আইসিসি-র টেস্ট ব্যাটসম্যানদের বিশ্ব র্যাঙ্কিং রবিবারই শেষ বার প্রকাশিত হল। তেন্ডুলকর প্রাক্তন ক্রিকেটার হয়ে যাওয়ার পরের দিনই। এবং সেই র্যাঙ্কিং তালিকায় সচিন ছয় ধাপ উঠে আঠারো নম্বরে। জীবনের শেষ টেস্ট ইনিংসে ৭৪ রান করার জন্যই তাঁর ক্রিকেটজীবনের চূড়ান্ত লগ্নেও ব্যাটিং র্যাঙ্কিংয়ে এই উত্তরণ। দুশোতম টেস্ট খেলে অবসর নেওয়ার কথা ঘোষণার পাশাপাশি সচিন ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন, বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে প্রথম কুড়ির মধ্যে থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটজীবন শেষ করতে পারলে তাঁর ভাল লাগবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ শুরুর আগে সচিনের র্যাঙ্কিং ছিল চব্বিশ। বিরানব্বই সালের পর তাঁর সর্বনিম্ন র্যাঙ্কিং। কিন্তু জীবনের শেষ টেস্ট ইনিংস সচিনকে তাঁর লক্ষ্যে পৌঁছে দিল। বিশ্বের প্রথম কুড়ি ব্যাটসম্যানের মধ্যে থেকেই ক্রিকেটকে চিরবিদায় জানালেন।
|
দাদা অজিতের সঙ্গে গোটা ক্রিকেটজীবনের প্রতিটা ইনিংসের আউট নিয়ে আলোচনা করাটা বরাবরের অভ্যাস সচিনের। ওয়াংখেড়েতে জীবনের শেষ ইনিংসের আউট নিয়েও অবসরের আগের দিন রাতেও সচিন ফোনে আলোচনা করেছিলেন অজিতের সঙ্গে। এবং তাঁর ফ্রেন্ড-গাইড অ্যান্ড ফিলোজফারের কাছে স্বীকার করে নেন, অফস্পিনার দেওনারায়ণের বলের বাউন্সটা বুঝতে তিনি ভুল করেছিলেন। অজিতই সচিনের অন্তিম আউটের রহস্য ফাঁস করে দিয়েছেন। “সচিন আমাকে সেই রাতে ফোনে বলে, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান স্পিনারটার ওই ডেলিভারির বাউন্স যতটা হবে ভেবেছিলাম, পিচে পড়ে তার চেয়ে একটু বেশিই নিয়েছিল। ওই বাড়তি বাউন্সটা আমার বুঝতে ভুল হয়েছিল।’ আমি তখন ওকে বলি, ওই ভুলটুকু ছাড়া তুমি অসাধারণ ব্যাট করেছ।”
|
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বোলারদের ‘সচিন’ তিনি। সচিনের যদি ব্যাটে টেস্টে পনেরো হাজারের উপর রান থাকে, মুরলীধরনের তা হলে বল হাতে আছে আটশো টেস্ট উইকেট। কিন্তু শ্রীলঙ্কার সেই কিংবদন্তি স্পিনার জানাচ্ছেন, আটশোর মধ্যে সেরা উইকেটটা সচিনেরই। “ওর উইকেট সব সময় আমার এবং শ্রীলঙ্কা দলের কাছে সবচেয়ে দামী ছিল।” মুরলী মনে করেন তাঁর প্রজন্মে সচিনই ‘গ্রেটেস্ট’ ক্রিকেটার। “আমি ডনকে ব্যাট করতে দেখিনি। তবে তাঁর টেস্ট ব্যাটিং গড়ের দিকে তাকালে তাঁকেই সর্বকালের সেরা মানতে হবে। কিন্তু সচিন টেস্ট আর ওয়ান ডে, দু’ধরনের ক্রিকেটেই যে বিরাট পরিমাণ রান করেছে, যে রকম দীর্ঘ ধারাবাহিক সফল কেরিয়ার ওর, তাতে আমাদের জমানায় ও-ই তর্কাতীত ভাবে শ্রেষ্ঠ।”
|
বিশ্বজোড়া তাঁর অগুন্তি ভক্তের চোখে সচিন ক্রিকেট-ঈশ্বর। ক্রিকেটের ভগবান। কিন্তু প্রাক্তন ইংল্যান্ড অধিনায়ক অ্যান্ড্রু স্ট্রস মনে করেন, ক্রিকেটমহলের কাছে সচিন খেলাটার ঈশ্বর হতে পারেন, তবে সচিন নিজে ঈশ্বর মানে ক্রিকেট খেলাটাকেই। “ক্রিকেটে ওর পারফরম্যান্সই ওকে খেলাটার ভগবান বানিয়ে তুলেছে। কিন্তু আমার মনে হয়েছে, সচিনের নিজের আরাধ্য দেবতা সব সময় ক্রিকেট খেলাটাই। যেটাকে ও ঈশ্বর ভেবে বাইশ গজে বরাবর পুজো করে এসেছে,” বলছেন স্ট্রস।
|
সম্পূর্ণ অন্য খেলার গ্রহ থেকেও সচিনকে কুর্নিশ করা চলছে। টেনিসের রজার ফেডেরারের এ বার ফুটবলের মাইকেল আওয়েন। প্রাক্তন ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেড তথা ইংল্যান্ড স্ট্রাইকার বলেছেন, “তেন্ডুলকরের খেলোয়াড় জীবনের সাফল্য অবাক করে দেওয়ার মতো। আগাগোড়া অসাধারণ একটা কেরিয়ার ওর। |