মাদাম তুসোর মোমের জাদুঘরের আদলে সংগ্রহশালা হবে নিউ টাউনে। সব ঠিকঠাক চললে আগামী বছরের শুরুতেই চালু হয়ে যাবে সেটি। হংকং এবং ব্যাঙ্ককে মোমের মূর্তির সংগ্রশালা থাকলেও উপমহাদেশে এ রকম প্রকল্প হচ্ছে এই প্রথম।
২ নম্বর অ্যাকশন এরিয়ায় প্রস্তাবিত ‘কলকাতা মিউজিয়াম অব মডার্ন আর্টস’ অর্থাৎ কেমোমা-র কাছেই তৈরি হবে এই মোমের জাদুঘর। এর জন্য হিডকো ফিনানশিয়াল সেন্টারের ছ’তলায় ইতিমধ্যে পর্যাপ্ত জায়গা বরাদ্দ করা হয়ে গিয়েছে। একাধিক শিল্পীর পরামর্শও নিয়েছেন উদ্যোক্তারা। হিডকো-র চেয়ারম্যান দেবাশিস সেন বলেন, “এ ব্যাপারে শীঘ্রই টেন্ডার ডাকা হবে। কথা হয়েছে আসানসোলের শিল্পী সুশান্ত রায়ের সঙ্গে।”
ফিনান্স সেন্টারে ১০ হাজার বর্গফুট মাপের হলের সামনে রয়েছে প্রশস্ত বারান্দা। দেবাশিসবাবু বলেন, “সেখান থেকে সামনের প্রকৃতি উদ্যান, ‘কেমোমা’ এ সব স্পষ্ট দেখা যাবে।” এই সংগ্রহশালার নামও কি মাদাম তুসো হবে? হিডকো-র চেয়ারম্যান বলেন, “ওটা একটা আন্তর্জাতিক ব্র্যান্ড। প্রাথমিক ভাবে ই-মেলে যোগাযোগ হয়েছে। স্বীকৃতির ব্যাপারে চূড়ান্ত কথা হয়নি।” প্রস্তাবিত সংগ্রহশালার মূর্তিগুলি মাদাম তুসো-র অন্যান্য সংগ্রহশালার মূর্তির মতো প্রমাণ মাপেরই হবে।
এ রাজ্যে মোমের মূর্তি তৈরি করার মতো অভিজ্ঞ শিল্পীর সংখ্যা কম। তবে সুশান্তবাবু বলেন, “এখনই গোটা ১৫ মূর্তি আমি দিতে পারি। আসানসোলে আমার গ্যালারিতে সেগুলি রয়েছে।” নেতাজি, গাঁধী, রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের পাশাপাশি জগদীশচন্দ্র বসু, কিশোরকুমার, উত্তমকুমারের মূর্তি তৈরি করা আছে। সংগ্রহে রয়েছে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, কপিলদেব, মারাদোনার মোমের মূর্তিও। সেগুলিও ঠাঁই পেতে পারে নিউ টাউনের সংগ্রহশালায়। এক একটি মূর্তি করতে প্রায় দেড় মাস লাগে।
মাদাম তুসোর মোমের জাদুঘরগুলির মধ্যে লন্ডনের সংগ্রহশালাটি বিশ্বের প্রাচীনতম। ১৮০২-র এই সংগ্রহশালা ১৮৩৫ সালে আসে মার্লিবোন রোডে। মহাত্মা গাঁধী, ইন্দিরা গাঁধী, রাজীব গাঁধীর মূর্তি থাকলেও ভারতীয় ব্যক্তিত্বদের সিংহভাগ রুপোলি পর্দার তারকারা। আছেন অমিতাভ-শাহরুখ-আমির-সলমন-মাধুরী-করিনা-ঐশ্বর্যা-হৃত্বিক। আছে সচিন তেন্ডুলকরের মূর্তিও।
লন্ডনের বিশ্বখ্যাত এই আকর্ষণের সঙ্গে কতটা পাল্লা দিতে পারবে কলকাতার প্রস্তাবিত প্রকল্পটি? হিডকো-র এক কর্তার কথায়, “লন্ডনেরটি এখন পর্যন্ত ৫০ কোটি দর্শক দেখেছেন। আছে প্রায় ২৪০০ পাউন্ড মোম দিয়ে তৈরি ৪০০টি মূর্তি। আর কলকাতারটি তো এখনও ভূমিষ্ঠ হয়নি।” তবে উপমহাদেশের প্রথম মোমের মূর্তির সংগ্রহশালা হিসেবে এটি দর্শক টানবে বলে হিডকো-র আশা। |