মলদ্বীপের ক্ষমতা গেল প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মামুন আব্দুল গায়ুমেরই পরিবারের এক জনের হাতে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পরে হার স্বীকার করেছেন মলদ্বীপ ডেমোক্রাটিক পার্টির প্রার্থী মহম্মদ নাশিদ। প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন গায়ুমের সৎভাই আব্দুল্লা ইয়ামিন। মলদ্বীপে গণতান্ত্রিক পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছে ভারত ও আমেরিকা। অভ্যুত্থানে নাশিদ-অপসারণের পরেই রাজনৈতিক গোলযোগ শুরু হয় ভারত মহাসাগরের ওই দ্বীপরাষ্ট্রে। এক সময়ে গ্রেফতারি এড়াতে ভারতীয় হাইকমিশনে আশ্রয়ও নিয়েছিলেন নাশিদ। তার পর থেকেই মালের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে অস্বস্তিতে পড়ে দিল্লি। এখন সম্পর্কের উন্নতি হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
মলদ্বীপে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের লড়াই এ বার পৌঁছে গিয়েছিল আদালত পর্যন্ত। ৭ সেপ্টেম্বর প্রথম দফার ভোট বাতিল করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট। পরে ফের প্রথম দফার ভোট নেওয়া হয় ৯ নভেম্বর। তার পরে হয় দ্বিতীয় দফা। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ইয়ামিন পেয়েছেন প্রদত্ত ভোটের ৫১.৩ শতাংশ। নাশিদের ঝুলিতে পড়েছে ৪৮.৬ শতাংশ।
হার স্বীকার করে নিয়ে নাশিদ বলেছেন, “খুব কম ভোটে হারলাম। কিন্তু হার স্বীকার করতে আমার আপত্তি নেই। গণতন্ত্র একটি প্রক্রিয়া। তা সফল করতে আমাদের সবাইকে কাজ করতে হবে।”
গায়ুমের সৎ ভাই হওয়া ছাড়াও অন্য পরিচয় রয়েছে ইয়ামিনের। পাঁচ বার মলদ্বীপ পার্লামেন্টের সদস্য হওয়া ছাড়াও রাষ্ট্রায়ত্ত বিদ্যুৎ সংস্থা ও বাণিজ্য সংস্থার কর্তা ছিলেন তিনি।
মলদ্বীপের আয়ের অন্যতম উৎস পর্যটন ব্যবসা। রাজনৈতিক অস্থিরতায় সেই ব্যবসার বিপুল ক্ষতি হবে বলে আশঙ্কা করছিল নানা শিবির। তাই শপথ নেওয়ার পরেই ইয়ামিন জানিয়েছেন, “মলদ্বীপকে এই অঞ্চলের সবচেয়ে নিরাপদ ও উন্নত রাষ্ট্র করে তুলতে হবে।” পরাজিত নাশিদের কাছেও সহযোগিতা চেয়ে হাত বাড়িয়েছেন তিনি। বলেছেন, “আমার আশা, নাশিদও আমাকে সাহায্য করবেন।”
নির্বাচন ঘিরে এই দ্বীপরাষ্ট্রে রাজনৈতিক ডামাডোল তৈরি হওয়ায় তাদের আর্থিক সাহায্য দেওয়া আপাতত বন্ধ রেখেছে নয়াদিল্লি। শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতার হাত বদল হওয়ায় মলদ্বীপকে সাহায্য জোগানোর বাধা এ বার দূর হবে বলে মনে করছে বিদেশ মন্ত্রক। আজ সাউথ ব্লক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “মলদ্বীপের সব পক্ষই জনগণের রায় মেনে নিয়েছে। আমরা এই মনোভাবকে স্বাগত জানাচ্ছি।” |
পুরনো খবর: মহম্মদ নাসিদ ধৃত |