বর্ধমানের পুলিশ-প্রশাসনের সাহায্য চেয়েও তৃণমূলের বোমাবাজিতে তাঁরা আক্রান্ত কর্মী-সমর্থকদের বাড়ি যেতে পারেননি বলে অভিযোগ করলেন বোলপুরের সিপিএম সাংসদ রামচন্দ্র ডোম। প্রশাসনের বক্তব্য, আউশগ্রামে ওই এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকায় তাঁদের যেতে বারণ
করা হয়েছিল।
শনিবার দুপুরে বর্ধমান-দুর্গাপুরের সাংসদ সাইদুল হক, আউশগ্রামের বিধায়ক বাসুদেব মেটে, মঙ্গলকোটের বিধায়ক সাজাহান চৌধুরী এবং বর্ধমান সদরের বিধায়ক অপর্ণা সাহাকে নিয়ে আউশগ্রামের নওদা এলাকায় যাওয়ার চেষ্টা করেন রামচন্দ্রবাবু। তাঁর অভিযোগ, গত সোমবার সেখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে এক তৃণমূল কর্মী খুন হন। তৃণমূল উল্টে সিপিএম সমর্থকদের উপরে দায় চাপানোর চেষ্টা করে। তাঁদের ৩২ জন কর্মী-সমর্থকের বাড়িতে ঢুকে লুঠপাট, মারধর করা হয়। জেলা কমিটির সদস্য আলমগির মণ্ডল-সহ সিপিএমের ১৪ জনের বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগও আনা হয়েছে। সেই কারণেই পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল এলাকার পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছিলেন।
সিপিএমের অভিযোগ, নওদায় পৌঁছনোর সময়েই তাঁদের আটকাতে তৃণমূলের স্থানীয় নেতা টগর শেখের নেতৃত্বে বাইকবাহিনী বোমাবাজি করে। নওদা থেকে কিলোমিটার তিনেক দূরে ওরগ্রামের কাছে পৌঁছেই সাংসদ-বিধায়কেরা বোমার শব্দ পান। তাঁদের অভিযোগ, আউশগ্রাম থানার আইসি
এবং জেলাশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা জানিয়ে দেন, কিছুই করতে পারবেন না। সাইদুল হকের দাবি, “আমাদের সঙ্গে পুলিশের গ্রামে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু গিয়ে দেখি, পুলিশ নেই। চারদিক থেকে বোমার শব্দ পেয়ে আমরা পুলিশ সুপারকে ফোন করি। তিনি ফোন ধরেননি। পরে নিজের অক্ষমতার কথা জানান। তখন বাধ্য হয়ে আমরা ফিরে আসি।”
তৃণমূলের আউশগ্রাম-১ ব্লক সভাপতি টগর শেখ অবশ্য দাবি করেন, “কয়েক দিন আগে সিপিএম আমাদের সমর্থক শেখ মোহিতকে খুন করে। তার প্রতিবাদে আমরা গ্রামে মিছিল করেছি। কিন্তু আজ তো আমরা কেউ গ্রামেই ছিলাম না। কী করে ওঁরা আমাকে দেখলেন আর বোমার শব্দ শুনলেন, জানি না।”
বর্ধমানের জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, “রামচন্দ্রবাবু আমায় এসএমএস পাঠিয়ে গ্রামে যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আমি ওঁকে যেতে বলিনি বা নিরাপত্তার আশ্বাসও দিইনি। তাঁর পাঠানো এসএমএস আমি পুলিশ সুপারকে পাঠিয়ে দিই। উনি ওঁকে এসএমএস পাঠিয়ে বলেছিলেন,
এখন গ্রামে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই।” এ দিন পুলিশ সুপার সৈয়দ মহম্মদ হোসেন মির্জা বলেন, “বাসুদেববাবুর সঙ্গে আমার ফোনে কথা হয়। রামচন্দ্রবাবু এসএমএস করে গ্রামে যাওয়ার কথা বলেন। দু’জনকেই বলেছিলাম, গ্রামে রাজনৈতিক দলের নেতাদের যাওয়ার পরিস্থিতি নেই। কাউকে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না। আমরা অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি। ইতিমধ্যে তৃণমূলের ১২ জন গ্রেফতার হয়েছে। না। তবু ওঁরা গেলেন। তবে বোমা পড়েনি। এলাকায় পুলিশ নেই দেখে ওঁরা চলে এসেছেন।” |