পরিত্যক্ত আবাসন থেকে এক যুবকের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়াল। শুক্রবার দুপুরে রায়গঞ্জ ইউনিভার্সিটি কলেজের শিক্ষকদের পরিত্যক্ত একটি আবাসনে ঘটনাটি ঘটে। কলেজ থেকে ১০০ মিটার দূরে ছাত্রীদের হস্টেলের পাশে রায়গঞ্জের ২১ নম্বর ওয়ার্ডে পরিত্যক্ত অবস্থায় আবাসনটি রয়েছে। পুলিশ জানয়, নিহতের নাম বিশ্বনাথ সরকার (২৩)। তাঁর বাড়ি স্থানীয় ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে ইন্দিরা কলোনিতে। তিনি পেশায় ট্যাক্সিচালক ছিলেন। নিহতের মাথায় এবং বাঁ হাতে ধারালো অস্ত্রের ক্ষত রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ কিছু কাশির সিরাপ ও জলের বোতল, নেশার ট্যাবলেটের পাতা উদ্ধার করে।
প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের দাবি, পুরনো কোনও শত্রুতা বা নেশা নিয়ে গোলমালে দুষ্কৃতীরা ওই যুবককে ভারী কিছু দিয়ে থেঁতলে ও কুপিয়ে খুন করেছে। রায়গঞ্জ থানার আইসি দীনেশ প্রামাণিক বলেন, “নিহতের পরিবারের তরফে এখনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। নিহতের কয়েকজন বন্ধুর খোঁজে তল্লাশি চলছে। এলাকায় নজরদারি বাড়ানো হচ্ছে।” পুলিশ জানিয়েছে, নিহত বিশ্বনাথের বাবা, মা ছাড়াও বাড়িতে স্ত্রী ও এক ভাই আছে। বাবা নিরঞ্জনবাবুর কলেজপাড়ায় চা দোকান রয়েছে। তাঁর ভাই রামকৃষ্ণবাবু বলেন, “বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুই বন্ধু দাদাকে ফোন করে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে পরিকল্পিত ভাবে খুন করে। দাদা নেশা করত না। সৎকারের পর থানায় অভিযোগ দায়ের করব।”
পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রণজ কুমার দাস বলেন, “আমার ওয়ার্ডের বাসিন্দা ছিল বিশ্বনাথ। ভাল ছেলে ছিল। পুলিশকে দ্রুত দোষীদের ধরতে বলেছি।” ঘটনার খবর পেয়ে পরিত্যক্ত ওই আবাসনটি দেখতে যান কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ উত্তম রায়, শিক্ষকদের একাংশ। সেখানে আরও ৪টি পরিত্যক্ত আবাসন আছে। বাসিন্দারা পুলিশের সামনেই উত্তমবাবুকে ঘেরাও করে পরিত্যক্ত আবাসনগুলি ভেঙে ফেলার দাবি জানান। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘ দিন কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে পরিত্যক্ত আবাসনগুলি ভেঙে ফেলার দাবি জানানো হলেও লাভ হয়নি। রাতে আবাসনগুলিতে দুষ্কৃতীরা নেশার আসর বসাচ্ছে। কলেজ সংলগ্ন মাঠেও নেশার আসর বসছে। হস্টেল ছাত্রীরা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন।
স্থানীয় কংগ্রেস কাউন্সিলর সন্দীপ বিশ্বাস বলেন, “ছাত্রী হস্টেল লাগোয়া এলাকায় পথবাতির জন্য কলেজের সঙ্গে কথা বলব। আবাসনগুলি ভেঙে ফেলার জন্যও কর্তৃপক্ষকে বলব।” ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ উত্তমবাবু জানান, জীর্ণ হয়ে পড়ায় শিক্ষকেরা গত তিন বছর ধরে আবাসনগুলিতে থাকছেন না। সেই সুযোগেই দুষ্কৃতীরা আবাসনের দরজা ভেঙে ঢুকে নেশার আসর বসাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুমতি ছাড়া আবাসনগুলি ভাঙতে পারি না। সব উর্ধ্বতন কতৃর্পক্ষকে বলা হয়েছে।” ঘটনার পর নেশাসক্তদের আড্ডা বাড়ছে বলে অভিযোগ তুলে এদিন হাইরোড সংলগ্ন কলেজপাড়া এলাকার একটি চায়ের দোকানের একাংশে ভাঙচুর চালান বাসিন্দারা। পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে। |