শয্যা কম, চালু হয়নি অস্ত্রোপচারও |
নিজস্ব সংবাদাদাতা • বেলডাঙা |
বিরাট ভবন, হাসপাতাল চত্বরের সীমানাও নেহাত কম নয়। রয়েছে অপারেশনেরও ব্যবস্থা। বহিরঙ্গটা দেখলে বেশ ঝাঁ চকচকে মনে হলেও কাঙ্ক্ষিত পরিষেবা মেলে না বেলডাঙা গ্রামীণ হাসপাতালে। অথচ বেলডাঙা, রেজিনগর, নওদা বিধানসভা এলাকার মানুষ ওই হাসপাতালে উপরই নির্ভরশীল।
৩০ শয্যার ওই হাসপাতালে রোগী ভর্তি থাকেন ৮০-৯০ জন। একই শয্যায় দু’জনকে গাদাগাদি করে থাকতে হয়। অনেকের আবার ঠাঁই হয় মেঝেতে। প্লেট অনিয়মিত হওয়ায় সব সময় এক্স-রের সুবিধা পান না রোগীরা। ওটি থাকলেও কোনও অপারেশনই হয় না হাসপাতালে। সামান্যতেই রেফার করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। রেজিনগরের কাশিপুরের বাসিন্দা আওলাদি শেখ বলেন, “বাবার জ্বরের সঙ্গে পেটের যন্ত্রণা হয়েছিল। হাসপাতালে যেতেই পত্রপাট প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরের বহরমপুর হাসপাতালে রেফার করে দেওয়া হল।” এরই মধ্যে বেআইনিভাবে হাসপাতাল চত্বরের গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
বেলডাঙা-১ ব্লক থেকে জয়ী জেলা পরিষদ সদস্য কংগ্রেসের মনিরুল হক বলেন, “মেশিন থাকলেও সব সময় এক্স-রে হয় না। আউটডোরে রোগীর ভিড় থাকলেও ডাক্তাররা চেম্বারে রোগী দেখতে ব্যস্ত থাকেন। কোথায় রক্ত পরীক্ষা করতে হবে সে নির্দেশও দেন ডাক্তাররাই। সব জেনেশুনেও প্রশাসন নীরব।” বেলডাঙা টাউন কংগ্রেসের সভাপতি ভরত ঝাওর এর অভিযোগ, “ওষুধ ও ডায়াগনস্টিক কেন্দ্রের সঙ্গে চিকিৎসকদের একটা অশুভ আঁতাত গড়ে উঠেছে।” বেলডাঙা-১ সিপিএমের লোকাল কমিটি সম্পাদক প্রিয়রঞ্জন ঘোষের ক্ষোভ, “পরিকাঠামো থাকলেও ওই হাসপাতালে কোনও পরিষেবা মেলে না। পঞ্চায়েত সমিতির পক্ষ থেকে আমরা বিষয়টি প্রশাসনকে জানাব।”
এত সব অভিযোগের প্রত্যুত্তরে হাসপাতালের চিকিৎসক দেবদত্ত বড়ালের বক্তব্য, “অভিযোগ ভিত্তিহীন। তবে কর্মীর অভাবে অনেক পরিষেবা দেওয়া যায় না। ৬ জনের পরিবর্তে চিকিৎসক রয়েছেন ৪ জন। ৯ জনের বদলে সাফাইকর্মী রয়েছেন ৬ জন। অ্যানাস্থেসিস্ট ও সার্জেনের অভাবে ওটি চালানো যায় না। বিষয়টি স্বাস্থ্য দফতরকে জানিয়েছি। তবুও রোগীদের পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। প্রসূতি বিভাগে পরিষেবার জন্য ২০১২ সালে স্বাস্থ্য দফতর রাজ্যের ৬৪টি হাসপাতালকে পুরস্কৃত করে। আমরাও সেই পুরস্কার পেয়েছি।” |