এ বার মধুতটি, জমিদান স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ার জন্য |
নিজস্ব সংবাদদাতা • রঘুনাথপুর |
স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ার টাকা এসে ফেরত যাওয়ার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু জমি মিলছিল না। স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা মাঠে নামতেই পাওয়া গেল জমি। একটি নয়, এখনও পর্যন্ত তিনটি জমি এ ভাবেই পেয়ে গেল স্বাস্থ্যদফতর। জমি মিলল সেই রঘুনাথপুরে, যেখানে জমি-জটে আটকে গিয়েছে ডিভিসি-র মেগাবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ।
আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, শিল্পের জন্য অনেক জমির প্রয়োজন। কিন্তু স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য জমির পরিমাণ তুলনায় কম। অন্য দিকে, প্রশাসনের বক্তব্য, স্বাস্থ্যকেন্দ্রে জমিদান করছেন অনেকে নিঃশর্তে। কিন্তু শিল্পের জন্য জমিদান করে ক্ষতিপূরণের সঙ্গে অনেকে চাকরি-সহ অনেক কিছু দাবি করছেন। দু’টি বিষয়কে গুলিয়ে ফেলা ঠিক নয়।
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের জন্য অবশ্য বেশি নয়, সামান্য জমির প্রয়োজন। কিন্তু তাও মিলছিল না। রঘুনাথপুরে ডুমরাকুড়ি, গোপীনাথপুরের পরে এ বার মধুতটি গ্রামে স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ার জন্য তিন ডেসিমেল (দুই কাঠা) জমি দিলেন এক স্কুল শিক্ষিকা। শিলারানি চৌধুরী নামের ওই প্রাথমিক স্কুল শিক্ষিকা বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যদফতরকে ওই জমি দান করলেন। সরকারি হিসেবে ওই জমির বর্তমান বাজারদর প্রায় তিন লক্ষ টাকা। শিলারানিদেবী ওই গ্রামেরই বাসিন্দা। রঘুনাথপুর ১ ব্লক এলাকায় ছ’টি উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরির জন্য টাকা বরাদ্দ হলেও জমি না পাওয়ায় টাকা পড়েছিল। একটির জন্য জমি পাওয়া গিয়েছিল আগেই। কিন্তু বাকি তিনটির জমি মিলে গেল প্রায় এক মাসের মধ্যেই। ডুমরাকুড়ি গ্রামে জমি দিয়েছিলেন চার দিনমজুর। পরে গোপীনাথপুর গ্রামে জমি দেন তিন ভাই। এ বার প্রয়াত মায়ের ইচ্ছা পূরণে জমি দিলেন স্কুল শিক্ষিকা। |
ব্লক স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা দিয়েছে, রঘুনাথপুর-বাঁকুড়া রাস্তা পাশে মধুতটি গ্রামে ঢোকার মুখেই মধুতটি মৌজার ২৪০১ নম্বর প্লটের জমিটি দিয়েছেন শিলারানিদেবী। বৃহস্পতিবার স্বামী ভবানী চৌধুরী ও সহকর্মী পূর্ণিমা গুপ্তকে নিয়ে রঘুনাথপুর সাব রেজিস্ট্রেশন অফিসে গিয়ে তিনি বিডিও ও ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকের উপস্থিতিতে জমিটি দান করেন। পরে বলেন “মায়ের ইচ্ছা ছিল গ্রামে স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়া হোক। তাই স্বাস্থ্য দফতর মধুতটিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ার জন্য জমি খুঁজছে জেনে আর দেরি করিনি। ঠিক করি তিন ডেসিমেল জমি স্বাস্থ্য দফতরকে দেব। সেই কাজটা ভাল ভাবে করতে পেরে বেশ ভাল লাগছে।” তবে প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের কাছে তাঁর আর্জি, স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি এ বার দ্রুত গড়া হোক। সেখানে তাঁর মায়ের নাম প্রতিভা দেব্যার উল্লেখ করার অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি। রঘুনাথপুর ১-র বিডিও সুনীতিকুমার গুছাইত বলেন, “শিলারানিদেবী গ্রামে স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নের উদ্দেশে জমি দিয়েছেন। স্বাস্থ্যকেন্দ্রর পাশেই তাঁর মায়ের স্মৃতিতে ফলক লাগানো হবে।”
আগের দু’টি গ্রামের মতোই মধুতটি গ্রামেও উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রটি চলে ভাড়াবাড়িতে। ফলে পরিষেবা দিতে সমস্যায় পড়তে হয় স্বাস্থ্যকর্মীদের। ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক লিধুরাম হাঁসদা বলেন, “মধুতটি গ্রামে উপ স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যেই সাড়ে নয় লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। জমির অভাবেই তা তৈরি করা যাচ্ছিল না। আমরা দ্রুত কাজ শেষ করব।” |