পুনর্বাসন জট কাটল না শালুগাড়ায়
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
পুনর্বাসন জট কাটল না শুক্রবারও। উত্তরবঙ্গের শাখা সচিবালয়ের সামনের রাস্তা থেকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে ২৪টি পরিবারকে প্রশাসন শালুগাড়ার বিকাশনগর এলাকায় বসবাসের বন্দোবস্ত করেছে। কিন্তু সেই এলাকার বাসিন্দাদের চাপে বৃহস্পতিবার প্রশাসনের উদ্যোগ ব্যর্থ হয়। এ দিন দুপুরে শালুগাড়ার বিকাশনগরে জলপাইগুড়ির জেলাশাসক, রাজগঞ্জের বিডিও-সহ সরকারি আধিকারিকদের নিয়ে বিকাশনগর এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব। বৈঠকে মন্ত্রীর সামনে দু’জন ওই পুনর্বাসনের জমি তাঁদের বলে দাবি করেন। প্রথম জন শব্দকান্ত রায় পুরানো পাট্টা নিয়ে এসে মন্ত্রীকে দেখান। অন্য দিকে ১১ জনের একটি গোষ্ঠী এই জমিটি নিজেদের বলে দাবি করেন। যদিও প্রথমজনের দাবি খারিজ হয়ে যায় তিনি জমিটি বিক্রি করে দিয়েছেন স্বীকার করায়।
সব শোনার পর গৌতমবাবু জমিটির নথিপত্র খতিয়ে দেখতে জলপাইগুড়ির জেলাশাসক পৃথা সরকারকে নির্দেশ দেন। মন্ত্রী বলেন, “জমি নিয়ে জট দ্রুত কেটে যাবে। তবে সব রকম স্বচ্ছতা বজায় রেখে কাজ হবে। আজ, শনিবার জমিটি সমীক্ষার পরই পরবর্তী নির্দেশ দেব। ফুলবাড়ির কামরাঙ্গাগুড়ির পুনর্বাসন পাওয়া বাসিন্দারা এখানেই থাকতে পারবেন। তবে তাঁদের দু-একদিন একটু ধৈর্য ধরতে হবে।”
এ দিন বৈঠক শেষে বিকাশ নগরের কিছু বাসিন্দা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর গাড়ি ঘেরাও করে তাঁদের পাট্টার দাবি জানাতে থাকেন। তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন গৌতমবাবু। দেড় ঘণ্টার বৈঠকের পরে মন্ত্রী আশ্বাস দেন, যে বিষয়গুলি নিয়ে বিকাশনগরের বাসিন্দাদের দাবি রয়েছে, সেই পাট্টা যেমন দেওয়া হবে তেমনই খেলার মাঠও তৈরি করে দেওয়া হবে। তার পরেও সরকারের উদ্যোগে আপত্তির কোনও মানে হয় না। যদিও বাসিন্দারা মন্ত্রীকে জানান, আগে তাঁদের জমির পাট্টা দিতে হবে। পরে পুনর্বাসন পাওয়া কামরাঙ্গাগুড়ির বাসিন্দারা পাট্টা পেতে পারেন। তাঁর আগে নতুন কাউকে এলাকায় থাকতে দেওয়া হবে না বলে বাসিন্দারা জানান।
ডাবগ্রাম-১ গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য সিপিএমের ডালিম রায় বলেন, “বাসিন্দাদের ক্ষোভ থাকলেও সরকারি নির্দেশ সকলকে মানতে হবে। মন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন সমস্যা মিটিয়ে দেবেন। আমরা সেই অপেক্ষাতেই আছি।” মন্ত্রী জানান, বিকাশনগরের যে সব বাসিন্দারা পাট্টা পাননি তাঁদের সবাইকে পাট্টা দেওয়া হবে। তবে তার জন্য আবেদন করতে হবে। এখানে শিবির করে পাট্টার বিলি হবে। সেই সঙ্গে ফুলবাড়ির বাসিন্দাদের জমি দেওয়ার পরেও এক বিঘা জমি অতিরিক্ত থাকবে। তাতেই খেলার মাঠ হবে।
গত বুধবারই মন্ত্রী পুনর্বাসন জমির পাট্টা দেন কামরাঙ্গাগুড়িতে সচিবালয়ের সামনের উচ্ছেদ হওয়া ২৪টি পরিবারের হাতে। বৃহস্পতিবার পাট্টা নিয়ে বিকাশনগরে পরিবারগুলিতে বসাতে যান প্রশাসনের আধিকারিকেরা। স্থানীয় বাসিন্দারা তাতে বাধা দেন। নেতৃত্বে ছিলেন এলাকার সিপিএম নেতানেত্রীরা। তাঁদের দাবি, এলাকার পাট্টা না পাওয়া বাসিন্দাদের আগে পাট্টা দিতে হবে। তার পরে বাইরের লোকেদের বসতে দেওয়া হবে। পুলিশ দিয়ে নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হলেও কামরাঙ্গাগুড়ির বাসিন্দারা কার্যত ভয়ে সেখান থেকে ফুলবাড়িতে ফিরে যান। |