দুই পরিবারের বিবাদে গুলিতে মৃত্যু কিশোরীর
মুখোমুখি দু’টি বাড়ির লোকজনদের মধ্যে চলছিল তর্কাতর্কি, গালিগালাজ। দুই বাড়ির মাঝের রাস্তা দিয়ে তাই দ্রুতই পা চালিয়ে দিদির বাড়ির দিকে যাচ্ছিল সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী তাঞ্জেলা খাতুন (১৬)। আচমকা বন্দুকের গুলি এসে লাগল তার কপালে। তাড়াতাড়ি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েও বাঁচানো যায়নি তাকে।
শুক্রবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ মুর্শিদাবাদের রঘুনাথগঞ্জের চরকায় ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার জেরে স্তম্ভিত গোটা গ্রামই। পুলিশের অনুমান, তাজেল শেখ নামে প্রাথমিক স্কুলের এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকের গুলিতেই মারা গিয়েছে তাঞ্জেলা। এই দিন বিকেলে তাজেলের সঙ্গে বচসা হচ্ছিল তাঁরই খুড়তুতো ভাই প্রতিবেশী আজিজুল শেখের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে। এ দিন সকালে স্থানীয় একটি ইটভাটার পাশে এই পরিবারের একটি জমির মাপজোক হয়। তা থেকেই বিবাদ শুরু হয়েছিল। সাকালের বিবাদ গড়ায় বিকেলে পর্যন্তও। বিবাদের মাঝে দু’পক্ষ পরস্পরকে গালিগালাজ করছিল। সে কথা শুনেছেন অন্য গ্রামবাসীরাও। মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর এ দিন বলেন, “তাজেলের একটি লাইসেন্সপ্রাপ্ত দোনলা বন্দুক রয়েছে। অনেকদিন আগেই সেই লাইসেন্স পেয়েছিলেন তিনি। সেই বন্দুক থেকেই তিনি এই দিন গুলি চালিয়েছেন বলে প্রাথমিক ভাবে অনুমান করা হচ্ছে। কেননা তাঞ্জেলার কপালে ওই ধরনের বন্দুকের ছররা গুলিই লেগেছে। তবে তাজেল এখনও পলাতক। তাঁর বন্দুকটিও পাওয়া যায়নি।” পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাজেলের লাইসেন্স ইতিমধ্যেই বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তিন মহিলা সহ ওই দুই পরিবারের পাঁচ জনকে পুলিশ আটকও করেছে।
কী ঘটেছিল শুক্রবার?
রাস্তার দুই পাড়ে দুই ভাইয়ের বাড়ি। ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, তাঞ্জেলা হাঁটতে হাঁটতে আসছিল ওই রাস্তা দিয়ে। দুই বাড়ির মধ্যে তুমুল ঝগড়া চলছে শুনে সে তাড়াতাড়ি জায়গাটা পেরিয়ে যাওয়ার জন্য জোরে জোরে হাঁটতে শুরু করে। পুলিশের সন্দেহ, ঠিক তখনই তাজেল বাড়ি থেকে বন্দুকটা বার করে ভাইকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিলেন। ভাই ছিলেন রাস্তার অন্য পাড়ে নিজের বাড়ির সামনে। সেই গুলিই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে গিয়ে লাগে তাঞ্জেলার কপালে। গ্রামবাসীরাই তখন ছুটে এসে তাকে নিয়ে যায় জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে। সেখানকার চিকিৎসক অভিজিৎ মণ্ডলের বক্তব্য, “গুলিটা তাঞ্জেলার কপাল দিয়ে ঢুকে মাথার মধ্যে বিঁধে গিয়েছিল। প্রচুর রক্তক্ষরণও হয়েছে। তাই চেষ্টা করেও তাকে বাঁচানো যায়নি।”
তাঞ্জেলার বাড়ি ওই গ্রামেরই উত্তরপাড়ায়। দিদি বেদানাবিবির বিয়ে হয়েছে গ্রামেরই পূর্বপাড়ায়। তাঞ্জেলার বাবা ভাদু শেখ পেশায় ভ্যানচালক। তাঁর বক্তব্য, “দিদি অন্ত প্রাণ ছিল আমার ছোট মেয়ের। প্রায়ই ওই রাস্তা দিয়েই দিদির বাড়ি যেত সে। তাই এ দিনও যখন সে যাচ্ছিল, আমরা কোনও চিন্তা করিনি। তারপরে আকাশ থেকে বাজ পড়ার মতো করে খবরটা এল। হাসপাতালে গিয়ে দেখি রক্তে ভেসে যাচ্ছে মেয়ের মুখ।”
তাঞ্জেলার প্রতিবেশীদের বক্তব্য, তাজেল একটু কড়া মেজাজের লোক। গ্রামের প্রাথমিক স্কুলেই পড়াতেন তিনি। সেই স্কুলেই ছোটবেলায় পড়েছে তাঞ্জেলাও।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.