শেষের কথা

আড়াই দশকের তেন্ডুলকর
বিস্ময় বালক
নভেম্বর ১৯৮৯-অক্টোবর ১৯৯৬
ম্যাচ ৪২, রান ২৯২১, সর্বোচ্চ ১৭৯, গড় ৫৩.১০, সেঞ্চুরি ১০, উইকেট ৪।
ম্যাচ ১৩১, রান ৪৫৮০, সর্বোচ্চ ১৩৭, গড় ৩৯.৮২, সেঞ্চুরি ৯, উইকেট ৪৩।
টেস্টে প্রথম সেঞ্চুরি ম্যাঞ্চেস্টারে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১১৯*। তার ঠিক ১৬ মাস পর সিডনি (১৪৮*) আর পারথে (১১৪) সেঞ্চুরি।
ভারতের প্রথম দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে (১৯৯২-’৯৩) ওয়ান্ডারার্সে ১১১ রান।
১৯৯৬-এ পরের ইংল্যান্ড সফরে বার্মিংহ্যামে ১২২ আর নটিংহ্যামে ১৭৭ রান।
ওয়ার্ল্ডটেল-এর সঙ্গে ৭.৫ মিলিয়ন ডলারে পাঁচ বছরের চুক্তির পর ক্রিকেটের প্রথম ‘মিলিওনেয়ার’।
মার্চ ১৯৯৪, ইডেন পার্কে নভজ্যোৎ সিধু চোট পাওয়ায় প্রথম ওপেন করতে নেমে ৪৯ বলে ৮২ রান। ছ’মাস পরেই প্রথম ওয়ান ডে সেঞ্চুরি কলম্বোয় অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ১১০।
১৯৯৬ বিশ্বকাপে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ রান। ৫২৩।
ক্যাপ্টেন সচিন
অক্টোবর ১৯৯৬-মার্চ ২০০০
দেশে ৭জয়, ১৪হার, ১৪ ড্র , বিদেশে ০ জয়, ৮ হার, ৯ ড্র
সচিন ৩৫ টেস্টে ৫৫.৮০ গড়ে ৩১২৫ রান সেঞ্চুরি ১২।
জয় ৬০ হার ৬৭, সচিন ১১০ ম্যাচে ৪৫.১৫ গড়ে ৪৩৮০ রান, সেঞ্চুরি ১৫।
দু’বার ভারতের ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব সামলেছেন। শুরুটা স্বপ্নের মতো অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্টে জয়, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে ২-১ সিরিজ দখল।
১৯৯৮-এর জানুয়ারিতে ক্যাপ্টেনের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া। ১৯৯৯ বিশ্বকাপের পর ফের দায়িত্ব। ভারত ০-৩ সিরিজ হারে অস্ট্রেলিয়ায়।
ব্যাটসম্যান সচিনের এই সময়ের সেরা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে চেন্নাইয়ে ১৫৫, বেঙ্গালুরুতে ১৭৭।
ক্যাপ্টেন হিসেবে সচিনের বেশিরভাগ দুরন্ত ইনিংসই দলকে জেতাতে ব্যর্থ। ১৯৯৭-এ কেপ টাউনে ১৬৯। আজহারউদ্দিনের সঙ্গে ৪০ ওভারে ২২২ রান জুড়েও ভারত টেস্টটা হারে ২৮২ রানে। তিন বছর পর এমসিজি-তে সেঞ্চুরি (১১৬)। তবু হার ১৮০ রানে।
বিখ্যাত মরুঝড়। শারজায় অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ৪৬ ওভারে ২৭৬ রান তাড়া করতে নেমে তাণ্ডব। ১৩১ বলে ১৪৩ রান। দু’দিন পর সচিনের ২৫তম জন্মদিনে ১৩১ বলে ১৩৪। ভারত ফাইনাল জেতে ছ’উইকেটে।
সোনার সময়
মার্চ ২০০০-এপ্রিল ২০১১
দেশে ৪৮ জয়, ২৭ হার, ৪০ ড্র, বিদেশে ২৩ জয়, ২০ হার, ২০ ড্র।
সচিন ১০১ টেস্টে ৮৬৫৬ রান, গড় ৫৮.০৯, সেঞ্চুরি ২৯।
১৮৬ জয়, ১৩৭ হার।
২১৬ ম্যাচে ৯৩৪২ রান, গড় ৪৮.৪০, সেঞ্চুরি ২৪।
২০০১-এ স্টিভ ওয়-র অস্ট্রেলিয়াকে হারানোর বিখ্যাত সিরিজের শেষ টেস্টে সচিনের ১২৬। ২০০২ হেডিংলে টেস্টে তাঁর ১৯৩ রানের দাপটে ভারতের ইনিংসে জয় আর সিরিজে সমতায় ফেরা।
২০০৩-০৪ স্টিভ ওয়-র বিদায়ী সিরিজে অপরাজিত ২৪১। কয়েক মাস পরেই পাকিস্তানে প্রথম টেস্টে ১৯৪ রান করেন। সিরিজটাও জেতে ভারত।
২০০৮ ডিসেম্বরে ইংল্যান্ডের ৩৮৭ রানের টার্গেটে ভারতকে পৌঁছে দেন মাস্টার-ব্লাস্টার (৩৭ ও ১০৩)। যার পর কেভিন পিটারসেন সচিনকে বলেন ‘সুপারম্যান’।
২০১১ নিউল্যান্ডসে ডেল স্টেইনদের আগুনে পেসকে পিটিয়ে শেষ টেস্ট সেঞ্চুরি (১৪৬) ভারতকে র্যাঙ্কিংয়ে এক নম্বরে পৌঁছে দেয়।
ওয়ান ডে ফরম্যাটে ২০০৩ বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান।
২০১০ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ২০০।
শেষ অধ্যায়
এপ্রিল ২০১১-নভেম্বর ২০১৩
১১ জয়, ১০ হার, ৪ ড্র। বিদেশে ১ জয়, ৮ হার, ২ ড্র।
২২ টেস্টে ১১৫৫ রান, গড় ৩১.২১।
৪১ জয়, ২০ হার।
এশিয়া কাপে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে শততম সেঞ্চুরি। ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ায় পর পর সিরিজ হার। ২০১২ ন’টেস্টে সচিনের রান মাত্র ৩৫৭।
৪৬৩ ম্যাচে ১৮,৪২৬ রান করার পর ২০১২-র শেষে ওয়ান ডে থেকে অবসর ঘোষণা।
২০১৩ অক্টোবরে টেস্ট ক্রিকেট থেকে বিদায়ের সিদ্ধান্ত।

সচিন-ভ্রম
সচিন তেন্ডুলকর ওয়াংখেড়েতে যদি দ্বিতীয় ইনিংসে আর ব্যাট না করেন, তা হলে তাঁর ক্রিকেট কেরিয়ারের পরিসংখ্যান দাঁড়াবে ২০০ টেস্টে ১৫৯২১ রান। ইডেন টেস্টের শেষে যে সংখ্যাটা ছিল ১৯৯ টেস্টে ১৫৮৪৭। যে সংখ্যা নিয়ে রীতিমতো চর্চা শুরু হয়ে যায় সোশ্যাল সাইটগুলোয়। জাভেদ আখতারও টুইট করে জানান, সচিনের টেস্টের রান সংখ্যা এখন ১৫৮৪৭। যা ভারতের স্বাধীনতার তারিখ, ১৫/৮/৪৭-এর সঙ্গে অদ্ভুত ভাবে মিলে যাচ্ছে। কিন্তু ঘটনা হল, ওই রানটা ছিল ইডেন টেস্টের পর। সচিন যদি ডনের মতো নিজের শেষ টেস্টে শূন্য করতেন, তা হলে ওই বিস্ময়কর পরিসংখ্যানের মালিক হতেন।

শুক্রবারের সচিন

স্মৃতিতে সচিন
দেশের বাইরে আছি...ইন্টারনেটে ক্রিকেটের খবরাখবর সব পাচ্ছি। সচিন আউট হওয়ার খবরটা এই পেলাম। মনটা ভেঙে গেল...তার পরেই আবার পড়লাম ইনিংস ডিক্লেয়ার করার অনুরোধ আসছে প্রচুর। মনটা ভাল হয় গেল। আমি বলছি, ভারতীয় মস্তিষ্কের মতো উদ্ভাবনী শক্তি খুব কমই আছে...‘ডিক্লেয়ার করো আর সচিনকে আবার ব্যাট করতে দাও’...অসাধারণ।


ওহ্, কী অতূলনীয় একটা কেরিয়ার! তোমার জীবনের পরের অধ্যায়ের জন্য আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা রইল। ধন্যবাদ সচিন।


সচিন আমার ছেলের মতো। কিন্তু আমার কাছে ব্র্যাডম্যানের সই আছে, সচিনের নেই। ও আজ আউট হয়ে যাওয়ার পর আমার চোখে জল এসে গিয়েছিল। বড় স্কোর চেয়েছিলাম। যে ভাবে খেলছিল, পুরনো দিনের সচিনকে মনে পড়িয়ে দিল। আসলে আমার জীবনে সঙ্গীতের যা জায়গা, সচিনের জীবনে ক্রিকেট ঠিক তাই। আমি মনে করি ভারতরত্নটা ওর প্রাপ্য। আরও একটা বছর খেলতে পারত।


সচিনই হল আসল সুপারহিরো। মানবিক স্পিরিটের প্রতিমূর্তি। সুপার হিরোর ভূমিকায় অভিনয় করার ক্ষেত্রেও আমি সচিনের দ্বারা অনুপ্রাণিত।
অসাধারণ সব স্মৃতি আমাদের উপহার দেওয়ার জন্য তোমাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।


যা চাপ ছিল, সেটা প্রথম দিন ব্যাট হাতে নামার সময়ই ছিল। আজ ওর উপর কোনও চাপই ছিল না। এ দিন ক্রিকেটটাকে উপভোগ করতে নেমেছিল।


দু-দু’টো বিশ্বকাপ ফুটবল ফাইনাল দেখেছি। কিন্তু আজকের ওয়াংখেড়ের পরিবেশ আর আবেগের সঙ্গে কোনও কিছুর তুলনা হয় না। ভাগ্যিস আজ মাঠে ছিলাম!


সচিন-হীন ভারতীয় ড্রেসিংরুমের দিকে তাকাতে অদ্ভুত লাগবে। সচিনের মধ্যে সর্বদা একজন ছটফটে তরুণকে পেয়েছি। খেলাটার জন্য যার উৎসাহ অদম্য। বিশ্বাসই হচ্ছে না ওর চল্লিশ হয়ে গেল। একটা গোটা প্রজন্মের জন্য বিশ্ব ক্রিকেটে ধারাবাহিকতার নাম ছিল সচিন। অতুলনীয় ডন ব্র্যাডম্যানের পর ও-ই সর্বকালের সেরা।


খেলাধুলোর জগতে ওর অবসরটা বিরাট ব্যাপার। আমরা সচিনকে খুব মিস করব।

ছবি: উৎপল সরকার।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.