ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলিংকে দাপটে শাসন করে সচিন তেন্ডুলকরের ব্যাট যখন রূপকথার শেষ অধ্যায় লিখে চলেছে, তখন ক্রিজের উল্টো দিকে দাঁড়িয়ে তিনি। এবং একেবারে সেরা দর্শকাসন থেকে মায়েস্ত্রোর সেই ব্যাটিং দেখার সৌভাগ্যে দিনের শেষেও যেন বিমুগ্ধ ঘোরের মধ্যে চেতেশ্বর পূজারা! “রাজকীয় কিছু স্ট্রোক খেলে গেল সচিন পাজি! অসাধারণ! জীবনের শেষ ম্যাচে স্নায়ুর উপর এমন নিয়ন্ত্রণ রেখে শান্ত থাকাটা মোটেই সহজ নয়। তার উপর নিজের ঘরের মাঠে জীবনের শেষ টেস্টে ও দুর্দান্ত কিছু করে দেখাবে এই প্রত্যাশার চাপটাও মারাত্মক ছিল। তার সঙ্গে গ্যালারির ওই চিৎকার! মনঃসংযোগ করাই কঠিন হচ্ছিল। কিন্তু এত কিছুর মধ্যেও ও অবিশ্বাস্য ব্যাটিং করে গেল যা একমাত্র ও-ই করতে পারে। আমার বা রোহিতেরটা নয়, পাজি-র ইনিংসটাই সেরা,” দিনের শেষে নিজের সেঞ্চুরি ভুলে পূজারার মুখে শুধুই সচিন।
|
সচিনের সঙ্গে ১৪৪ রানের তৃতীয় উইকেট পার্টনারশিপের জোরে পাকাপাকি ক্রিকেট ইতিহাসেও স্থান করে নিলেন পূজারা। ক্রিকেট-ঈশ্বরের শেষ টেস্টের আলোচনা এর পরে যখনই উঠবে, পূজারার সঙ্গে তাঁর পার্টনারশিপ চলে আসবে চর্চায়। যে জুড়িদারির প্রতিটা মুহূর্ত মনে মনে রিপ্লে করে চলেছেন পূজারা। “গতকাল সচিন যখন ব্যাট করতে নামছে, সেই মুহূর্তটা ভুলতে পারব না। দর্শকদের ওই চিৎকার আর গোটা স্টেডিয়ামের উঠে দাঁড়িয়ে ওই রকম অভিবাদন! ওয়েস্ট ইন্ডিজ টিম আর আম্পায়ারদের গার্ড অফ অনার— মায়াবী পরিবেশ! তার মধ্যেও সচিন বলেই মনঃসংযোগ করতে পেরেছে।” জীবনের শেষ যুদ্ধের জনও সচিনের প্রস্তুতিটা অনুপ্রাণিত করছে পূজারাকে। বললেন, “এই ম্যাচের জন্য পাজি দারুণ ভাবে তৈরি হয়েছিল। আসলে এই সিরিজটার জন্যই ও বাড়তি পরিশ্রম করেছে। কারণ শেষটা ভাল করতে চেয়েছিল।” স্যামির হাতে ক্যাচ তুলে সচিন ফিরে যাওয়ার সময় নন-স্ট্রাইকারে দাঁড়িয়ে তিনিও মুষড়ে পড়েছিলেন, জানাচ্ছেন পূজারা। “ওকে আউট হতে দেখে খুব হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। কিন্তু যে ব্যাটিংটা করে শেষ করল, অনবদ্য! ক্রিজের উল্টো দিক থেকে সচিন পাজির ওই ব্যাটিং দেখাটাই আমার সেরা প্রাপ্তি।”
|