নীল আকাশের নীচে বাঁশবেড়িয়ার মাটিতে মাথা তুলেছে দুধসাদা ভিক্টোরিয়া মেমেরিয়াল। কিছুটা দূরে দিল্লির পার্লামেন্ট ভবন। রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার জুলু প্রজাতির মানুষের নিজস্ব ঢঙে তৈরি বাসস্থানও।
গঙ্গা পাড়ের চন্দননগরের খ্যাতি ‘জগদ্ধাত্রীর শহর’ হিসেবে। বাঁশবেড়িয়া কার্তিকের। আজ, শনিবার থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে এই ছোট্ট শহরের সবচেয়ে বড় উৎসব। চলবে চার দিন ধরে। শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে থাকছে ব্যাপক পুলিশি ব্যবস্থা।
ইতিমধ্যেই শহরের রাজপথগুলিতে বসে গিয়েছে অস্থায়ী দোকানপাট। মাঠে মেলা। আলোয় ভাসছে অলিগলি। কলকাতা বা চন্দননগরের থিমপুজোর ঢেউ ছুঁয়েছে এ শহরের পুজোকেও। বাঁশবেড়িয়া কার্তিক কেন্দ্রীয় কমিটির আওতায় ৭৬টি পুজো হয়। অধিকাংশ মণ্ডপই থিমের।
বল খেলার মাঠে প্রতাপ সঙ্ঘ এবং নেতাজি স্পোর্টিং ক্লাব পাশাপাশি। দু’টি পুজোরই এ বার ৩৬ তম বর্ষ। দু’টি পুজোই মাদুর দিয়ে কাল্পনিক মন্দিরের আদলে মণ্ডপ বানিয়েছে। ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের আদলে মণ্ডপ তৈরি করেছে রামকৃষ্ণ সঙ্ঘ। পার্লামেন্ট ভবনের আদলে মণ্ডপ হয়েছে মিতালি সঙ্ঘের। |
আগন্তুকের থিম ‘সে দিনের অপেক্ষায়’। অন্ধকার জগৎ থেকে আলোর জগতে ফিরে আসার কাহিনি এখানকার মণ্ডপে তুলে ধরা হয়েছে। দক্ষিণপাড়া সংস্কৃতি পরিষদের এ বারের থিম ‘রূপকথার দেশে’।
‘বাংলার শিল্প ও কলা’র থিমে কাল্পনিক নাটমন্দিরের আদলে মণ্ডপ তৈরি হয়েছে কিশোর বাহিনীর পুজোয়। জুনিয়র বালক সঙ্ঘের মণ্ডপে গেলে দেখা মিলবে দক্ষিণ আফ্রিকার জুলু প্রজাতির মানুষের বাসস্থান। কুণ্ডুগলির মণ্ডপ তৈরি হয়েছে কুলো-ঝুড়ি-বেত-চামচ। উদাহরণ আরও আছে। বেশির ভাগ পুজোতেই ব্যবহার করা হয়েছে চন্দননগরের আলো।
নামে ‘কার্তিক পুজো’ হলেও উৎসবে পুজো হয় শিব, মা সন্তোষী, রাবণ, কামধেনু, মা কমলা, গণেশ-সহ আরও নানা দেবদেবীর। কার্তিকেরও এখানে নানা রূপ জ্যাংড়া কার্তিক, রাজা কার্তিক, ধুমো কার্তিক, জামাই কার্তিক, দেবসেনা, সাহেব কার্তিক।
পুলিশ জানায়, শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখতে পুজোর দিনে বাঁশবেড়িয়ায় ৫০০ পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হয়েছে। ১৫০ জন মহিলা-পুলিশ। ২২ জনের মোটরবাইক বাহিনী শহরের আনাচ-কানাচে টহলদারি চালাবে। থাকছে ২০০ সিভিক পুলিশও। লাগানো হয়েছে নজরদারি ক্যামেরা। |