শিল্পের ঋণ নির্ভরতাই খরচ বাড়াচ্ছে, অভিযোগ
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ বাড়ানোর ফলে শিল্পে উৎপাদন খরচ বাড়ছে, এই অভিযোগ কার্যত উড়িয়ে দিলেন শীর্ষ ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর কে সি চক্রবর্তী। উল্টে উদ্যোগপতিদের দিকেই আঙুল তুললেন তিনি। ব্যবসায় বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শেয়ার মূলধনের ব্যবহার বৃদ্ধির পরিবর্তে ব্যাঙ্কঋ
ণের উপর অত্যধিক নির্ভর করার প্রবণতা বাড়ছে বলে শুক্রবার মন্তব্য করেছেন তিনি। তাঁর মতে, উৎপাদন খরচ বাড়ার এটি অন্যতম কারণ।
পাশাপাশি, ভারত-সহ আর্থিক দিক দিয়ে সম্প্রতি এগিয়ে আসা দেশগুলিতে মূল্যবৃ্দ্ধির হার বাড়ার জন্য তিনি সরাসরি দায়ী করেছেন আমেরিকাকে। নিজেদের আর্থিক ব্যবস্থাকে চাঙ্গা করার উদ্দেশ্যে নিয়মিত ডলার ছাপিয়ে বন্ড কেনার যে-আর্থিক ত্রাণ প্রকল্প আমেরিকা চালু করেছে, তা ভারত এবং বিশ্বের আরও অনেক দেশে মূল্যবৃদ্ধিতে ইন্ধন জোগাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন চক্রবর্তী।
ডেপুটি গভর্নর
কে সি চক্রবর্তী
শুক্রবার কলকাতায় এমসিসি চেম্বার অফ কমার্স আয়োজিত এক সভায় চক্রবর্তী বলেন, “শেয়ার ছেড়ে অর্থ সংগ্রহ করার বদলে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে ব্যবসা করার প্রবণতাই উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাওয়ার অন্যতম কারণ। লক্ষ করলে দেখা যাবে, গত প্রায় ৫ বছর ধরে নতুন শেয়ার ছেড়ে মূলধন সংগ্রহ করার পথে পা মাড়াচ্ছেন না উদ্যোগপতিরা। যার ফলে নতুন শেয়ারের বাজার প্রায় শুকিয়ে গিয়েছে। প্রোমোটাররা যে- টাকা শেয়ার মূলধন হিসাবে বিনিয়োগ করছেন, তা-ও অনেক ক্ষেত্রেই ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নেওয়া।”
শিল্পোৎপাদন হ্রাস পাওয়ার জন্য শুধু সুদের হার বৃ্দ্ধিই দায়ী, ওই অভিযোগ খণ্ডন করতে গিয়ে চক্রবর্তী বলেন, উৎপাদন খরচের বড়জোর ৮% ব্যয় হয় সুদের খরচ মেটাতে। বাকি ৯২% খরচ কী করে কমানো যায়, তার পথ উদ্যোগপতিদের খুঁজে বার করার পরামর্শ দেন তিনি।
খাদ্য সুরক্ষা বিলের আওতায় চাল-গম বণ্টন বা ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের মতো পরিকল্পনা মানুষের হাতে বাড়তি নগদ জুগিয়ে চাহিদা তৈরি করে মূল্যবৃ্দ্ধির পালে হাওয়া জোগাচ্ছে, এই অভিযোগও এ দিন উড়িয়ে দেন চক্রবর্তী। এই পরিপ্রেক্ষিতে তিনি বলেন, “শুধু গরিবদের হাতে টাকা এলেই সমস্যার কথা বলা হয়। কিন্তু বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থায় এগ্জিকিউটিভদের যখন বেতন বাড়ে, তখন সে কথা কেউ বলে না।”
অবশ্য চক্রবর্তী মনে করেন, ভারতের বাজার ও সম্পদের পরিমাণের পরিপ্রেক্ষিতে দেশের আর্থিক বৃদ্ধির হার ৯ থেকে ১০ শতাংশে যাওয়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা এখনও রয়েছে। এর জন্য সবার আগে প্রয়োজন মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম পরানো। তবে ওই হারে আর্থিক বৃদ্ধি বাস্তবায়িত করতে হলে শুধু রিজার্ভ ব্যাঙ্কের দিকে তাকিয়ে থাকলেই হবে না, দেশের সব স্তরের মানুষকেই উদ্যোগী হতে হবে বলে মন্তব্য করেন শীর্ষ ব্যাঙ্কের ডেপুটি গভর্নর।
এই দিন চক্রবর্তী পরিষ্কার জানান যে, মূল্যবৃ্দ্ধির হার বাড়লে সুদের হার বাড়ানো ছাড়া রিজার্ভ ব্যাঙ্কের হাতে অন্য কোনও বিকল্প নেই। এর কারণ ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তিনি বলেন, “আমানতকারীদের সুদ বাবদ আয় মূল্যবৃদ্ধির হারের থেকে লাগাতার কম হতে থাকলে তাঁরা ব্যাঙ্কে টাকা রাখবেন না। তাতে পুরো ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাটাই ভেঙে পড়বে।” তা ছাড়া তাঁর মতে, এমনটা হলে সারদার মতো আর্থিক সংস্থাগুলিও সাধারণ মানুষকে ঠকানোর সুযোগ পাবে। তিনি জানান, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সুদের হার বৃদ্ধির পদক্ষেপ শুধু ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কই নয়, বিশ্বের সব ব্যাঙ্কিং নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষই নিয়ে থাকেন।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.