যুদ্ধাপরাধ নিয়ে কমনওয়েলথ বৈঠকে তরজা
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে প্রথম দিন থেকেই উত্তপ্ত হয়ে উঠল কমনওয়েলথ শীর্ষ বৈঠক।
তামিল জঙ্গি সংগঠন এলটিটিই-র বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধ ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নতুন নয়। ওই অভিযোগের কারণেই কলম্বোয় শীর্ষ বৈঠকে যাননি ভারত-সহ কয়েকটি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। কিন্তু সেই বয়কটের দলে নাম না লিখিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন গত কালই জানিয়েছিলেন, তিনি বিষয়টি নিয়ে শ্রীলঙ্কাকে চাপ দেবেন। প্রয়োজনে ওই অভিযোগ নিয়ে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি তোলার কথাও বলেছিলেন।
এর পরেই আজ শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাহিন্দা রাজাপক্ষে সাফ জানিয়েছেন, কমনওয়েলথকে কোনও সদস্য দেশের বিচার ও শাস্তির মঞ্চ করে তোলা উচিত নয়। এর পরেও অবশ্য পরিকল্পনা না বদলে উত্তর শ্রীলঙ্কা গিয়ে তামিল নেতাদের সঙ্গে এ দিন দেখা করেছেন ক্যামেরন।
আজ কলম্বোয় কমনওয়েলথ শীর্ষ বৈঠকের উদ্বোধন করেন ব্রিটিশ রাজকুমার চার্লস। স্বাগত ভাষণে রাজাপক্ষে বলেন, “শ্রীলঙ্কার মানবাধিকার নিয়ে কোনও ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। আমরা মানুষের অধিকারকে সম্মান করি।” তাঁর কথায়, “সন্ত্রাসের সঙ্গে লড়াই করে আমরা মানুষের বেঁচে থাকার অধিকারকে ফের প্রতিষ্ঠা করেছি। গত চার বছরে শ্রীলঙ্কায় কোনও জঙ্গি হামলা হয়নি।”
ক্যামেরনের মন্তব্য নিয়ে গত কালও সরব হয়েছিল শ্রীলঙ্কা। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ‘ঔপনিবেশিক যুগের ভাষায় কথা বলছেন’ বলে মন্তব্যও করেন রাজাপক্ষের মন্ত্রিসভার এক সদস্য। এর পরে আজ রাজাপক্ষের কড়া মন্তব্য বুঝিয়ে দিয়েছে, শ্রীলঙ্কা সরকার বিষয়টি সহজে মেনে নেবে না।
ক্যামেরন অবশ্য তাতেও দমে যাননি। আজ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরে উত্তর শ্রীলঙ্কার জাফনায় যান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী।
১৯৪৮ সালের পরে এই প্রথম জাফনায় পা রাখলেন কোনও বিদেশি নেতা। সেখানে মুখ্যমন্ত্রী সি ভি উইগনেশ্বরম-সহ শাসক তামিল ন্যাশনাল অ্যালায়েন্সের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। একটি গ্রন্থাগার ও সংবাদপত্রের অফিস ঘুরে দেখেন। গৃহযুদ্ধের সময়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল ওই গ্রন্থাগারটি। পরে সেটি ফের তৈরি করা হয়েছে। সম্প্রতি হামলা হয়েছে সংবাদপত্রের অফিসটিতে।
ক্যামেরনের জন্য এ দিন রাস্তার ধারে অপেক্ষায় দাঁড়িয়েছিলেন জাফনার বেশ কিছু তামিল বাসিন্দা। গৃহযুদ্ধের সময়ে উধাও হয়ে যাওয়া স্বজনের ছবি ব্রিটিশ কূটনীতিকদের হাতে গুঁজে দিতে প্রাণপণ চেষ্টা করেন তাঁরা। রাজাপক্ষে সমর্থকদের একটি দলও ব্রিটিশ জমানার অত্যাচারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখায়। তবে তা বিশেষ জমেনি।
রাজাপক্ষেকে চাপ দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারত-সহ কমনওয়েলথের বাকি দেশগুলিকে পাশে চেয়েছিলেন ক্যামেরন। তামিলনাড়ুর রাজনৈতিক দলগুলির বিরোধিতার মুখে কলম্বো যাননি প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। তবে গত কাল থেকে কলম্বোয় তামিলদের পাশে দাঁড়ানোর রাজনীতিই করছে নয়াদিল্লি। সে ক্ষেত্রে জাফনায় গিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী যে ভারতকে টেক্কা দিয়েছেন, তা স্বীকার করেছেন বিদেশমন্ত্রী সলমন খুরশিদ।
আজ খুরশিদ বলেন, “জাফনায় আমরা তামিলদের জন্য প্রচুর বাড়ি তৈরি করছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী সেখানে আগে যান, তা তো আমি চেয়েছিলামই। কিন্তু কী আর করা যাবে?”
জাফনা থেকে ফিরে রাজাপক্ষের মুখোমুখি হবেন ক্যামেরন। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্টকে তিনি কী জবাব দেন, সে দিকেই এখন তাকিয়ে সবাই।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.