|
|
|
|
বনগাঁ মহকুমা হাসপাতাল |
চিকিৎসাধীন শিশুদের ভোলাতে ওয়ার্ডে টিভি
নিজস্ব সংবাদদাতা • বনগাঁ |
ইঞ্জেকশন বা স্যালাইন দেওয়া এবং ওষুধ খাওয়ানোর সময়ে চিকিৎসাধীন শিশুরা যাতে সে ভাবে কান্নাকাটি না করে, তার জন্য বনগাঁ হাসপাতালের শিশু বিভাগে তিনটি টিভি বসানো হল। যেখানে সর্বক্ষণ কার্টুন চ্যানেল বা ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক চ্যানেলের বিভিন্ন জীবজন্তুর কাণ্ডকারখানা দেখা যাবে। যা দেখে শিশুরা সব কিছু ভুলে থাকবে এবং তার ফলে তাদের চিকিৎসা সহজ হবে বলে মনে করছেন চিকিৎসকেরা। জেলার কোনও সরকারি হাসপাতালে এমন ব্যবস্থা এই প্রথম বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর।
বৃহস্পতিবার, শিশু দিবসে নতুন এই ব্যবস্থা চালু হল। শিশু বিভাগে বসানো হয়েছে ৪৩ ইঞ্চির তিনটি এলসিডি। সুপার গয়ারাম নস্কর বলেন, “চাকরির সুবাদে এসএসকেএম হাসপাতালে থাকার সময়ে শিশুদের কান্নার সমস্যাটা আমার নজরে আসে। এই হাসপাতালের শিশু বিভাগে একটি অ্যাকোয়ারিয়াম বা টিভির ব্যবস্থা করার কথা প্রাথমিক ভাবে ভাবা হয়েছিল। অ্যাকোয়ারিয়ামের মাছ দেখাশোনা করা সমস্যা বলে টিভির ব্যবস্থা করা হল। ছোটদের চ্যানেলই চালানো হবে। এই ব্যবস্থায় সমস্যার অনেকটাই সমাধান হবে বলে আমার ধারণা।” হাসপাতালের শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ নরোত্তম হালদার বলেন, “আমরা আশাবাদী। শিশুরা টিভিতে প্রিয় অনুষ্ঠান দেখতে দেখতে অনেকটাই অন্যমনস্ক থাকবে। ফলে, ব্যথার অনুভূতিও কম হবে। বাড়ি ছেড়ে অন্য পরিবেশে আসার ভীতিও কমবে।” |
|
শিশুদের ওয়ার্ডে লাগানো হয়েছে রঙিন টিভি। ছবি: নির্মাল্য প্রামাণিক। |
উত্তর ২৪ পরগনার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয়কুমার আচার্য বলেন, “এই ধরনের ব্যবস্থা আগে জেলার কোনও হাসপাতালে ছিল না। বনগাঁ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ নিজেদের উদ্যোগে এটা চালু করেছেন। শুধু শিশুদের কান্না থামানো নয়, তাদের মায়েরাও এর ফলে বিনোদনের সুবিধা পাবেন।”
বনগাঁ হাসপাতালের শিশু বিভাগে মোট ২৫টি শয্যা রয়েছে। এখানে ১৪ বছর পর্যন্ত ছেলেমেয়েদের ভর্তি রাখা হয়। তাদের সঙ্গে মায়েদেরও থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। শিশু বিভাগে নতুন এই ব্যবস্থায় খুশি মায়েরাও। চার বছরের অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে রয়েছেন বকচরার কেয়া বিশ্বাস। তিনি বলেন, “স্যালাইন দেওয়ার সময়ে মেয়েকে ভোলাতে জীবজন্তুর গল্প বলতে হত। এখন চোখের সামনে সেগুলো দেখতে পাওয়ায় খুব সুবিধা হয়েছে।” বনগাঁ কালীতলার বাসিন্দা মমতা পালের সাড়ে তিন বছরের ছেলেও অসুস্থ হয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি। মমতাদেবী বলেন, “ছেলেকে ওষুধ খাওয়ানো সমস্যা হত। অনেক গল্প বলে, আদর করে ভুলিয়ে ওষুধ খাওয়াতে হত। এখন কার্টুন দেখতে দেখতে নিজের অজান্তেই ওষুধ খেয়ে নিচ্ছে।” প্রায় একই সুর অন্য মায়েদের গলাতেও। |
|
|
|
|
|