নাবালিকাকে অপহরণ করে এক সপ্তাহ ধরে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। বুধবার ওই যুবককে বোকা বানিয়ে তারই সঙ্গে নিজের বাড়িতে শুকনায় পালিয়ে আসে ওই কিশোরী। তারপরেই একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের দ্বারস্থ হন ওই কিশোরীর মা। ওই সংগঠনের সদস্যরা অভিযুক্ত নিখিল দোরজিকে আটকে রেখে পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ আসার কথা বুঝতে পেরে সেখান থেকেই পালিয়ে যায় অভিযুক্ত। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ির প্রধাননগর থানায় একটি ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এ দিনই ওই কিশোরীকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পুলিশ একটি ধর্ষণের মামলা রুজু করেছে। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার কারলিয়াপ্পন জয়রামন বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ অনুযায়ী তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তকে খোঁজা হচ্ছে।” এদিকে অভিযুক্ত নিখিলের বিরুদ্ধে একাধিক থানায় বিভিন্ন মামলা রয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
ওই কিশোরীর বাড়ি শিলিগুড়ির শুকনা চা বাগান এলাকায়। বাবা পেশায় দিন মজুর। মা চা বাগানের শ্রমিক। তাঁর মা প্রধাননগর থানায় দাঁড়িয়ে জানালেন, গত ৬ নভেম্বর থেকে ওই কিশোরী নিখোঁজ ছিল। ৭ নভেম্বর প্রধাননগর থানায় একটি নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগও দায়ের করেন তিনি। এরপর নিজেরাও খোঁজাখুঁজি করতে থাকেন। পরে পাড়ার কিছু লোকের কাছে শুনতে পান, মেয়েকে শেষ দেখা গিয়েছে নকশালবাড়ির বেলগাছি চা বাগান এলাকার নিখিলের সঙ্গে। ৯ নভেম্বর ফের প্রধাননগর থানায় নিখিলের নামে একটি অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। এরপর হঠাৎ বুধবার বিকেলে বাড়িতে ফিরে আসে ওই কিশোরী। সঙ্গে অপহরণে অভিযুক্ত নিখিল। এরপরেই ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দ্বারস্থ হন তিনি। সেখানেই ডাকা হয় পুলিশকেও। কিন্তু পুলিশ আসতেই পালিয়ে যায় নিখিল।
অন্যদিকে কিশোরী জানিয়েছেন, তাঁর সঙ্গে কয়েক মাস আগে আলাপ হয় অভিযুক্তের। মোবাইল ফোনের সূত্রে দু’জনরে সম্পর্ক হয়। ৬ নভেম্বর ফোন করে সুকনা মোড় এলাকায় তাঁকে ডাকে নিখিল। অভিযোগ, সেখানে দেখা করার পর হঠাৎই জোর করে ওই কিশোরীকে সাইকেলে চাপিয়ে নিয়ে যায়। সে চিৎকার করতে গেলে তাকে ভয় দেখানো হয় বলেও অভিযোগ করে কিশোরী। এরপর তাকে মোহরগাঁও গুলমা চা বাগানে একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে রাতে তাকে ধর্ষণ করে নিখিল। পরদিন ফাঁসিদেওয়া এলাকার সাহাবাদ চা বাগানে আর একটি বাড়িতে নিয়ে গিয়ে চারদিন রেখে তাকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়, এরপর নকশালবাড়ি এলাকার হাঁসখোয়া চা বাগান এলাকাতে তাঁকে আরও একটি বাড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ওই যুবক ফোনে কাউকে দিল্লি যাওয়ার টিকিট কাটার কথাও বলে বলে শুনতে পায় ওই নাবালিকা। তবে টাকা কম পড়েছে বলে টিকিট হচ্ছে না বলে তাকে জানায় নিখিল। সেই তখন নিখিলকে প্রস্তাব দেয় তাকে বানি যেতে দিলে টাকা এনে দিতে পারে। সেই প্রস্তাবে রাজি হয়ে তাকে নিজেই বাড়ি নিয়ে আসে। |