|
|
|
|
এ বার রঞ্জিতেও তোপের মুখে ইডেনের বাইশ গজ
রাজীব ঘোষ • কলকাতা |
ইডেন থেকে বেরিয়ে গাড়িতে ওঠার আগে ক্লাব হাউসের সামনে ঝালমুড়িওয়ালাকে নির্দেশ দিলেন, “বেশি করে লেবুর রস দিয়ে মুড়ি বানাও।” মুড়িতে বেশি টক পছন্দ করলে কী হবে, সারা দিনটা ইডেনের ২২ গজে যা অম্লমধুর কাটল অশোক দিন্দার, তা তাঁর পছন্দ হওয়ার কথা নয়।
সারা দিনে মণীশ মিশ্র (৬৪), নমন ওঝাদের (১০১) ২৪ ওভার বল করে শিকারহীন ‘নৈছনপুর এক্সপ্রেস’-এর গতিকে লোকাল ট্রেনের পর্যায়ে নামিয়ে এনে দিনের শেষে মধ্যপ্রদেশ ২৯৩-৪-এ, এইটুকু তথ্যই বুঝিয়ে দিচ্ছে রঞ্জি ট্রফির তৃতীয় ম্যাচে বাংলার দুর্দশার কথা। আর বৃহস্পতিবার ইডেনের ২২ গজে বল যে উচ্চতায় উঠল, যে গতিতে ব্যাটসম্যানদের দিকে ছিটকে গেল, তাতে প্রশ্ন উঠে পড়ল, উইকেটের সবুজ আভা কি আসলে মরীচিকা, যার পিছনে ছুটে লক্ষ্মীরা তিন পেসার নিয়ে নেমে পড়লেন ইডেনে?
‘পহলে দর্শনধারী, পিছে গুণবিচারি’ ইডেনের পিচ বিশ্লেষণ করে দল বাছার সময় হয়তো এই প্রবাদটাই মাথায় রেখেছিলেন বাংলার কোচ-ক্যাপ্টেন। সে জন্যই তিন পেসারে নামার সিদ্ধান্ত। তাঁদেরই অন্যতম শিবশঙ্কর পাল (১-৫১) যখন বিকেলে বললেন, “এই উইকেটে না বাউন্স, না গতি। বল করা কঠিন,” তখনই পরিষ্কার হয়ে গেল যে, এক সপ্তাহ আগেই ধোনিরা ইডেনে যা টের পেয়েছিলেন, এ বার ঘরের ছেলেরাও তা-ই টের পাচ্ছেন। |

ইডেনে হতাশ দিন্দার ছবি তুলেছেন শঙ্কর নাগ দাস। |
প্রবীর মুখোপাধ্যায়ের তৈরি ২২ গজের বিড়ম্বনা। দিনের প্রথম ঘন্টায় বাংলা যখন বুঝল ঘরের মাঠ হলেও এই উইকেটকে বশে আনা কঠিন, তখন লাইন ও লেংথই সম্বল। সেটাই বুঝে নিয়ে বল করে গেলেন ১৩ বছর প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলা শিবশঙ্কর, ও লক্ষ্মীরতন শুক্ল। কিন্তু দিন্দা-সৌরভ সরকাররা তা পারলেন কই? দুপুরে বাউন্ডারি লাইনে দাঁড়িয়ে প্রবীরের উদ্দেশে দিন্দাকে উইকেট নিয়ে অভিযোগ করতেও শোনা গেল। উইকেট নিয়ে ক্ষোভ গোটা শিবিরেই। শিবশঙ্করই বললেন, “এই উইকেট নিয়ে আমরা খুব হতাশ।” ‘কোড অব কন্ডাক্ট’-এর দফারফা হয়, সেই আশঙ্কায় প্রসঙ্গটা এড়িয়ে গেলেন লক্ষ্মী-অশোক। দিনের শুরুর দিকে স্লিপে অনুষ্টুপের হাতে জীবন পেয়ে সেঞ্চুরি করে অপরাজিত থাকা মধ্যপ্রদেশ কিপার নমন ওঝাকে পর্যন্ত বলতে শোনা গেল, “বেশ কষ্ট করেই রানটা পেতে হল।” দেখা যাচ্ছে, ইডেনের ড্রেসিংরুমে কিউরেটরকে নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ ক্রমশ নিয়মে পরিণত হচ্ছে। সে আন্তর্জাতিক ম্যাচই হোক বা ঘরোয়া।
প্রবীরবাবুও না মচকানোর প্রতিজ্ঞা করে বসে রয়েছেন। এ দিনও বললেন, “আমি আমার কাজ ঠিকই করেছি। উইকেটও ঠিক আছে। একেবারে টেলর মেড উইকেট তো আর হয় না। ওরা যদি ভাল খেলতে না পারে, তা হলে আমার দোষ?” |
সংক্ষিপ্ত স্কোর
মধ্যপ্রদেশ ২৯৩-৪ (নমন ওঝা অপরাজিত ১০১, মণীশ মিশ্র ৬৪, লক্ষ্মী ১-৪৩, শিবশঙ্কর ১-৫১)। |
পুরনো খবর: সবুজ উইকেটে তিন পেসারে খেলবে বাংলা |
|
|
 |
|
|