|
|
|
|
| |
 |
সচিনকে
পাঁচ উইকেট উৎসর্গ
চেতন নারুলা • মুম্বই |
|
স্কোর শিটের বিচারে ওয়াংখেড়ে টেস্টের প্রথম দিনে তিনিই নায়ক। কিন্তু পাঁচ উইকেট নিয়ে প্রতিপক্ষকে ১৮২ রানে মুড়িয়ে দেওয়ার পরেও পড়ন্ত বিকেলে মহীরুহের ছায়ায় হারিয়ে যাওয়ার এতটুকু ক্ষোভ কোথাও দেখা গেল না হাসিমাখা মুখটায়। বরং উচ্ছ্বসিত বলে দিলেন, “সচিন তেন্ডুলকরের ছায়ায় ঢাকা পড়ে আমি সত্যিই ভীষণ খুশি। আমার পাঁচ উইকেট ওকেই উৎসর্গ করছি।” বক্তা প্রজ্ঞান ওঝা। চল্লিশ রানে পাঁচ উইকেট তুলে নিয়ে আজ ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংসকে চুরমার করে দিলেন যিনি।
ওঝার ওই দুরন্ত বোলিং স্পেলও কিন্তু চা-বিরতির পরে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে দাঁড়ায় পাঁচ ফুট চার ইঞ্চির শরীরটা ড্রেসিংরুমের সিঁড়ি বেয়ে নামতে শুরু করার সঙ্গে সঙ্গে। স-চি-ন, স-চি-ন গর্জনে তখন কাঁপছে আরব সাগরের তীর। দিনের শেষে মুহূর্তটা নিয়ে বলতে গিয়ে এ দিনের পাঁচ উইকেট শিকারিও যেন গলা মেলালেন ওই গর্জনে। বললেন, “এটা সচিনেরই ম্যাচ। বহু যুগ ধরে লোকে এই টেস্টটাকে মনে রাখবে। আমি শুধু খুশি যে, এমন একটা মঞ্চে ভাল বল করে পাঁচ উইকেট নিতে পারলাম।”
|
| দ্রুততম ১০০ |
• টেস্টে সবচেয়ে দ্রুত ১০০ উইকেট ইংল্যান্ডের জর্জ লোমানের। ১৬ টেস্টে ১০০ উইকেট পূর্ণ করেছিলেন ১৮৯৬-এ।
• দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে কম, ১৮ টেস্টে ১০০ উইকেট রবিচন্দ্রন অশ্বিনের।
• অশ্বিনের আগে ভারতীয়দের মধ্যে ২০ টেস্টে ১০০ উইকেট ছিল এরাপল্লি প্রসন্নর। |
|
কেরিয়ারের ২৩ নম্বর টেস্টে একশো উইকেটের মাইলফলক পেরিয়ে (১০৩ উইকেট) ওঝা এর পরে যা বললেন, সেটা আরও চমকে দেওয়া। “ভাগ্যিস ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রথম ইনিংস এত তাড়াতাড়ি শেষ করে দেওয়া গেল। তবেই না সচিন আজ ব্যাট করতে পারল! পিচটা ব্যাটিংয়ের জন্য বেশ ভাল। কাল আরও উন্নতি করবে। আমাদের বড় স্কোর তোলা উচিত। আর চাই সচিন প্রচুর রান করুক।”
নিজের একশো উইকেট সম্পর্কে খুব সংক্ষেপে বললেন, “পিচে সুন্দর বাউন্স রয়েছে। স্পিনার হিসাবে আজ ওই বাউন্সটাকে ভাল ভাবে কাজে লাগাতে পেরেছি।” অবশ্য একশো উইকেটের ক্লাবে আজ একা নয়, রবিচন্দ্রন অশ্বিনের সঙ্গে একসঙ্গে পা রাখলেন তিনি। মাত্র ১৮ টেস্টে অশ্বিনের উইকেট আপাতত ১০০। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর আর কেউ এত কম টেস্টে একশো উইকেট পাননি। সতীর্থ সম্পর্কে ওঝা বলছিলেন, “অশ্বিনের জন্য আমি ভীষণ খুশি। ও শুধু ভাল স্পিনারই নয়, ওর সঙ্গে আমার বোলিং পার্টনারশিপটা বরাবর খুব সফল।” তার পরে যোগ করলেন, “এখন কিন্তু এ সব নয়, শুধু একজন মানুষকে নিয়েই কথা বলার সময়।”
সেই একজন মানুষ, সচিন রমেশ তেন্ডুলকরের একটা বড় রানের প্রার্থনা করছে গোটা দল। ওঝা বলছিলেন, “গোটা ইন্ডিয়া টিম এখন একটাই জিনিস চায়। সচিন যেন ওর শেষ টেস্টটা পুরোপুরি উপভোগ করতে পারে। যত লম্বা সময় ধরে সম্ভব ব্যাট করে যায়। আজ ও ব্যাট করার সময় ড্রেসিংরুমে আমরা কেউ এক মুহূর্তের জন্যও নিজেদের জায়গা থেকে নড়িনি। যে যেখানে বসে বা দাঁড়িয়ে ছিল, সেখানেই থেকেছে।”
শুক্রবারও এই ক্রিকেটীয় সংস্কারকে আঁকড়ে থাকবে ভারতীয় ড্রেসিংরুম! |
|
|
 |
|
|
