|
|
|
|
প্রতারণায় অভিযুক্ত ডাক্তার, সঙ্গী ধৃত
নিজস্ব সংবাদদাতা • আগরতলা ও কলকাতা |
মেডিক্যাল পাঠ্যক্রমে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার টোপ দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে কলকাতার এক চিকিৎসক এবং তাঁর সঙ্গী ফিজিওথেরাপিস্টের বিরুদ্ধে। প্রতারণার অভিযোগে কলকাতার ফুলবাগান থানা এলাকায় বাইপাসের ধারে একটি বেসরকারি হাসপাতালের ওই ফিজিওথেরাপিস্টকে ত্রিপুরা পুলিশ বৃহস্পতিবার গ্রেফতার করেছে। ধৃতের নাম বৈচিত্র সরকার। অভিযুক্ত চিকিৎসকের খোঁজ মিলছে না।
ত্রিপুরা পুলিশ জানায়, দিলীপ ভৌমিক নামে স্থানীয় এক চিকিৎসক গত অগস্টে পূর্ব কোতোয়ালি থানায় কলকাতার এক চিকিৎসক এবং ওই ফিজিওথেরাপিস্টের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করেন। দিলীপবাবুর অভিযোগ, কর্নাটকের মান্ডা জেলায় বালগঙ্গাধরনাথ নগরের আদিচুনচুনাগিরি ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এইএমএস)-এ বিশেষ কোটায় তাঁর ছেলেকে এমডি কোর্সে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে কলকাতার ওই চিকিৎসক তাঁর কাছ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা নেন। দিলীপবাবুর দাবি, চলতি বছরের গোড়ায় ওই চিকিৎসকের সঙ্গে তাঁর আলাপ করিয়ে দেন বৈচিত্র।
পুলিশের কাছে দিলীপবাবু অভিযোগ করেন, কলকাতার ওই চিকিৎসক তাঁকে বলেছিলেন, তিনি কর্নাটকের ওই মেডিক্যাল কলেজের পরিচালন সমিতির সদস্য। সেই সুবাদে ওই কলেজে ছাত্র ভর্তির একটি কোটা রয়েছে তাঁর। সেই কোটাতেই তিনি দিলীপবাবুর ছেলেকে ভর্তি করিয়ে দিতে পারবেন। তবে ভর্তির জন্য মোট ৪০ লক্ষ টাকা দিতে হবে তাঁকে। দিলীপবাবু বলেন, “ওই চিকিৎসক আগরতলায় এসে আমার কাছ থেকে ৩৮ লক্ষ টাকার চেক নেন। বাকি দু’লক্ষ টাকা নেন নগদে।”
দিলীপবাবু পুলিশকে জানান, কর্নাটকের ওই মেডিক্যাল কলেজে ছাত্র ভর্তি শেষ হয়ে যায় চলতি বছরের জুলাইয়ে। তাঁর ছেলেকে কলকাতার ওই চিকিৎসক সেখানে ভর্তি করাতে পারেননি। কিন্তু কয়েক মাসের মধ্যেই তাঁর ছেলেকে ভর্তি করিয়ে দিতে পারবেন বলে কলকাতার ওই চিকিৎসক তাঁকে মিথ্যা আশ্বাস দিতে থাকেন। শেষ পর্যন্ত ছেলে ওই কলেজে ভর্তি হতে পারবে না বুঝতে পেরে দিলীপবাবু প্রথমে ওই চিকিৎসকের কাছে টাকা ফেরত চান। টাকা ফেরত না-পেয়ে দিলীপবাবু ওই চিকিৎসকের বাবার (তাঁর বাবাও পেশায় চিকিৎসক) সঙ্গে কলকাতার একটি নার্সিংহোমে গিয়ে দেখা করেন। তিনি চিকিৎসকের বাবার কাছেও টাকা ফেরত চান। কিন্তু বাবা বা ছেলে তাঁকে আমল দেননি।
টাকা ফেরত পাওয়ার কোনও উপায় না-দেখে দিলীপবাবু গত অগস্টে ওই চিকিৎসক এবং তাঁর সঙ্গী ফিজিওথেরাপিস্ট বৈচিত্রের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ আনেন।
এই মামলার তদন্তকারী পুলিশ অফিসার প্রদীপ মালাকার জানান, ফুলবাগান থানার পুলিশের সাহায্যে বৈচিত্র সরকারকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁকে আগরতলায় নিয়ে আসা হয়েছে। কলকাতার যে-চিকিৎসকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ জমা পড়েছে, তাঁর সল্টলেকের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। কিন্তু তাঁর সন্ধান মেলেনি। পুলিশের দাবি, প্রাথমিক জেরায় ধৃত বৈচিত্র স্বীকার করেছেন, প্রতারণার ঘটনায় তিনিও জড়িত।
কলকাতা পুলিশ জানায়, অভিযুক্ত চিকিৎসক ঝাড়খণ্ড, বিহার এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি রাজ্যের পড়ুয়াদের বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার টোপ ফেলে টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে ত্রিপুরা পুলিশ জেনেছে। তাঁর খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চলছে। |
|
|
|
|
|