|
|
|
|
ফের ভলভোয় আগুন, মৃত ৭
সংবাদ সংস্থা • বেঙ্গালুরু |
সপ্তাহ দুয়েকের ব্যবধান। আবার আগুন চলন্ত ভলভো বাসে। আবার মৃত্যু।
বুধবার গভীর রাতে কর্নাটকের হাভেরি শহরের কাছে আগুন লাগে যাত্রী ভর্তি একটি ভলভো বাসে। বেঙ্গালুরু থেকে মুম্বই যাচ্ছিল সেটি। ঘটনাস্থলেই মারা যান তিন জন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় বছর দুয়েকের একটি শিশু ও বাসটির সহকারী চালক-সহ আরও চার জনের। গুরুতর জখম অন্তত চল্লিশ জন হাসপাতালে ভর্তি। ছ’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। চিকিৎসকেরা জানান, শরীরের ৬০ শতাংশই পুড়ে গিয়েছে তাঁদের।
পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনার কারণ স্পষ্ট নয় এখনও। বাসটিতে কোনও দাহ্য বস্তু ছিল না। তবে যাত্রীদের একাংশের দাবি, প্রচণ্ড গতিতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি সেতুর রেলিংয়ে ধাক্কা খেয়ে বাসটির জ্বালানি-ট্যাঙ্ক ফুটো হয়ে গিয়েছিল। আগুন লাগে সেখান থেকেই। ঠিক এই ভাবেই গত ৩০ অক্টোবর অন্ধ্রের মেহবুবনগরে তেলের ট্যাঙ্কারে বিস্ফোরণ থেকে পুড়ে ছাই হয়ে গিয়েছিল বেঙ্গালুরু-হায়দরাবাদ রুটের একটি ভলভো বাস। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়েছিল ৪৫ জন যাত্রীর। আপৎকালীন জানলার নাগাল না পেয়ে যাঁদের অনেকেই জীবন্ত ঝলসে গিয়েছিলেন।
বুধবারের দুর্ঘটনা ততটা মর্মান্তিক হয়নি, কারণ পুণের বাসিন্দা এক যাত্রী আপৎকালীন জানলার কাচটা
ভাঙতে পেরেছিলেন। বাসে যাত্রী ছিলেন ছয় মহিলা-সহ ৫১ জন। তাঁদের অনেকেই বেরিয়ে আসেন ওই জানলা দিয়ে। তবে হুড়োহুড়ির মধ্যে ভাঙা জানলা দিয়ে লাফিয়ে জখম হয়েছেন বেশ কয়েক জন।
অন্যতম যাত্রী, বছর চল্লিশের পাপ্পু যাদব বলেন, “রাত আড়াইটে নাগাদ প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দে হঠাৎ ঘুম ভেঙে যায়। চোখ খুলেই দেখি চার দিকে আগুন। কোনও রকমে আপৎকালীন জানলা দিয়ে ঝাঁপ দিই...ছেলেকে ফোন করি। তার পর আর কিছু মনে নেই।” দুর্ঘটনায় বেঁচে ফেরা আর এক যাত্রী বললেন, “রাতে জেগেই ছিলাম। ৪ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর দিয়ে প্রচণ্ড গতিতে যাওয়ার সময় হঠাৎই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন চালক। এঁকেবেঁকে বাসটি ভার্ধা নদীর উপর কুনিমেল্লি সেতুর রেলিংয়ে সজোরে ধাক্কা মেরে উল্টে যায়। ট্যাঙ্কারে সম্ভবত কোনও ছিদ্র ছিল। আর তাতেই ঘটে যায় বিপত্তি।’’
বাসের চালক এখনও বেপাত্তা। তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ একটি অভিযোগ দায়ের করেছে। বাসের মালিক শাকিল আহমেদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি দাবি করেন, মাত্র মাসখানেকের পুরনো ওই বাসটির চালক রীতিমতো প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ও অভিজ্ঞ। চালকের গাফিলতিতে দুর্ঘটনার অভিযোগ তাই মানতে নারাজ তিনি। ঘটনাস্থল ইতিমধ্যেই পরিদর্শন করে গিয়েছেন রাজ্যের পরিবহণমন্ত্রী রামলিঙ্গ রেড্ডি। তিনি বলেন, “ফাঁকা রাস্তায় অতিরিক্ত গতিই সম্ভবত ডেকে আনে বিপত্তি। তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালানোর অভিযোগ প্রমাণিত হলে চালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
হাভেরি জেলার পুলিশ সুপার শশী কুমার জানিয়েছেন, তিন-চার জনকে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। দেহগুলি ডিএনএ পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। |
|
|
|
|
|