|
|
|
|
রাতে দুর্ঘটনা আটকাতে রেলের ভরসা নয়া আলো
অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় • কলকাতা |
গতির প্রশ্ন এড়িয়ে আপাতত আলোয় ভরসা খুঁজছে রেল কর্তৃপক্ষ।
হাতি-মৃত্যু ঠেকাতে জঙ্গলের পথে ট্রেনের গতি বেঁধে দেওয়া হয়েছিল আগেই। কিন্তু বার বারই তা লঙ্ঘন করার অভিযোগ ওঠায় এ বার দুর্ঘটনা এড়াতে তাই ইঞ্জিনে বিশেষ ধরনের আলো লাগানোর কথা ভাবছে রেল কর্তৃপক্ষ।
দিন কয়েক আগে পরীক্ষামূলক ভাবে ওই আলো লাগিয়ে ট্রেন চালিয়ে দেখেছেন রেলকর্তারা। তাঁদের দাবি, রেলের নিজস্ব প্রযুক্তিতে তৈরি ওই আলো শুধু বন-পথে দুর্ঘটনা ঠেকাতেই সাহায্য করবে না, লাইনের ফাটল, ফিসপ্লেট খুলে যাওয়া সবই নজরে আসবে চালকের। ফলে যে কোনও দুর্ঘটনা এড়ানো যাবে বলে দাবি করেছেন তাঁরা। |
|
এই আলোই ব্যবহারের কথা ভাবছে রেল মন্ত্রক। —নিজস্ব চিত্র। |
পূর্ব রেলের বেশ কয়েক জন পদস্থ ইঞ্জিনিয়ারের দাবি, ইঞ্জিনের হেডলাইট-এ এত দিন দু’টি বাল্ব ব্যবহার করা হত। লাইনে সরলরেখা বরাবর সামনে আলো ফেলত ওই দু’টি বাল্ব। কিন্তু তাতে লাইনের পাশ্ববর্তী এলাকা বিশেষ নজরে আসত না। জঙ্গলের বুক চিরে যাওয়া রেলপথে আশপাশের গাছগাছালি, ঝোপঝাড় ভেদ করে বন্য পশুরা বেরিয়ে সটান লাইনের উপরে উঠে আসছে কিনা তা বোঝার সম্ভাবনা ছিল না। নতুন আলোয় সেই সমস্যা অনেকটাই দূর হবে বলে মনে করছেন রেল কর্তারা।
রেল বোর্ড সূত্রে খবর, নতুন হেডলাইট তৈরি করেছে রেলের বিশাখাপত্তনমের ‘ইলেকট্রো লোকোমোটিভ ওয়ার্কশপ’। পরীক্ষামূলক ভাবে ওই হেডলাইটে ট্রেন চালানোও হয়েছে। রেলকর্তাদের দাবি, নতুন হেডলাইটের কাজ সন্তোষজনক। এখন সেটির ঢালাও ব্যবহারের ছাড়পত্র পেতে রেলের রিসার্চ ডিজাইন অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ড অর্গানাইজেশনের (আরডিএসও) অনুমোদনের জন্য পাঠানো হয়েছে। ছাড়পত্র মিললেই ওই আলো ব্যবহারের অনুমতি দেবে রেল বোর্ড। রেলের আশা, এতে ডুয়ার্সের জঙ্গলে দুর্ঘটনা অনেকটাই এড়ানো যাবে।
রেলের এক পদস্থ কর্তা বলেন, “দু’টি বাল্ব থাকায় আগের হেডলাইটে চালক আশপাশে বড়জোর দেড়শো মিটার জায়গা দেখতে পেতেন।
নতুন এই হেডলাইট ব্যবহার করলে অন্তত ৪০০ মিটার এলাকা স্পষ্ট হয়ে উঠবে তাঁর কাছে।” ফলে লাইনের লাগোয়া জঙ্গল থেকে হাতি-বাইসন চকিতে বেরিয়ে এলেও তা অনেক দূর থেকেই দেখতে পাবেন চালকেরা। কিছুটা হলেও হাতে সময় পাবেন। সতর্ক হয়ে অনেকটা আগেই গাড়ির গতি নিয়ন্ত্রণ শুরু করতে পারবেন চালকরা।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, যে সব মেল বা এক্সপ্রেস ট্রেন জঙ্গল সংলগ্ন এলাকা দিয়ে চলাচল করে সেগুলির গতি বেঁধে দেওয়া থাকে। আলোর উজ্জ্বলতা ঠিক থাকলে একশো মিটার দূর থেকে লাইনে উঠে আসা পশু-পাখি প্রায় স্পষ্টই দেখা যায়।
তবে নতুন আলো সে সুযোগই আরও কিছুটা বাড়িয়ে দেবে নতুন হেডলাইট। অনেকটা দূর থেকেই লাইনে উঠে আসা পশু-পাখিকে দেখে অনেকটা আগেই সতর্ক হতে পারবেন চালক। |
|
|
|
|
|