মনোভাবের এই পরিবর্তন ঘটাতে উদ্যোগী হয়েছেন মোদীও। ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাত’ অনুষ্ঠানে নিয়মিত ভাবেই যোগ দেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের বেশ কিছু সদস্য রাষ্ট্রের দূতেরা। সরকারি সূত্রে খবর, ওই রাষ্ট্রদূতেরাই ব্রিটিশ হাইকমিশনার জেমস ডেভিড বেভানের সঙ্গে বৈঠক করে গুজরাত তথা নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্বিবেচনার অনুরোধ করেন। ২০১২ সালের অক্টোবর মাসে মোদীর সঙ্গে কথা হয় বেভানের।
চলতি বছরের মার্চ মাসে গুজরাতে মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন ব্রিটেনের বিদেশ প্রতিমন্ত্রী হুগো সুইরে। আজ সেই সফরের কথাও উল্লেখ করেছেন ক্যামেরন। তাঁর কথায়,“আমাদের বিদেশ প্রতিমন্ত্রীর সফরে গুজরাতের সঙ্গে যোগাযোগ বেড়েছে।”
বিদেশ মন্ত্রকের অফিসারদের মতে, মোদীর সঙ্গে সম্পর্ক পুনর্বিবেচনার মূল কারণ বাণিজ্যিক। ভারতের বাজারে আমেরিকা, ফ্রান্স, জার্মানি, রাশিয়ার মতো দেশের দাপটে কার্যত কোণঠাসা ব্রিটেন। তাই দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে মরিয়া লন্ডন। গুজরাতে বাণিজ্য বাড়ানোর বিশেষ সুযোগ আছে বলে মনে করে ব্রিটিশ সরকার ও শিল্পমহল।
তাই মোদীর সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী ব্রিটেন।
গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পাশাপাশি মোদী বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীও বটে। তাই ভবিষ্যতের কথা ভেবেও তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ঠিক রাখতে চাইছেন ক্যামেরন।
গুজরাত সরকার সূত্রে খবর, গোধরা-পরবর্তী দাঙ্গার স্মৃতি মুছে পশ্চিমী রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে সম্পর্ক বাড়াতে আগ্রহী প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী মোদীও। ব্রিটেন ও ইউরোপের অন্য দেশগুলির মাধ্যমে আমেরিকার সুরও নরম করা যাবে বলে মনে করেন তিনি।
দিল্লিতে ক্ষমতায় যে-ই থাকুন, তাঁর সঙ্গেই কাজ করতে হবে ব্রিটেনকে। আবার প্রধানমন্ত্রী হলে পশ্চিমী দুনিয়াকে বাদ দিয়ে চলতে পারবেন না মোদী। দু’পক্ষই তা-ই এগোচ্ছে কূটনীতির পরিচিত ছক ধরে।
|
কড়া অভিবাসন আইনের পক্ষেই সরব ক্যামেরন |
ব্রিটেনে যেতে চাইলে ভারতীয় পড়ুয়াদের কড়া অভিবাসন প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়েই যেতে হবে। বৃহস্পতিবার শিল্পমহলের সঙ্গে এক বৈঠকে এ কথা জানালেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন। ভারত-সহ কয়েকটি দেশের জন্য তিন হাজার পাউন্ড ভিসা বন্ড চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ব্রিটেন। অনেক বিতর্কের পরে সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে তারা। কিন্তু সে দেশে যে নতুন অভিবাসন নীতি আনা হয়েছে, সেগুলো কঠোর ভাবেই মানা হবে বলে জানিয়েছেন ক্যামেরন। তাঁর কথায়, “গত দশ বছর ধরে ব্রিটেনের অভিবাসন নীতিতে অনেক খামতি ছিল। এর ফলে এই দশ বছরে ব্রিটেনে ২০ লক্ষ অভিবাসী এসেছে। যেটা আমাদের মতো ছোট দেশের পক্ষে বিপুল একটা সংখ্যা।” বছরে কত জন ভারতীয় পড়ুয়াকে ভিসা দেওয়া হবে, তার কোনও ঊর্ধ্বসীমা ঠিক না করে দিলেও যারা ছাত্র ভিসার আবেদন করছে তারা সত্যিই পড়ুয়া কি না, বা কোনও ব্রিটিশ কলেজ থেকে ঠিক মতো ভর্তির আমন্ত্রণ পেয়েছে কি না, সেগুলো খতিয়ে দেখা হবে বলে জানান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। |