|
|
|
|
দু’ডজন অভিযোগ শিক্ষিকার, রিপোর্ট চান সিপি
নিজস্ব সংবাদদাতা |
শেক্সপিয়র সরণিতে গুলিতে মৃত্যু নিয়ে তদন্ত তো চলছেই। সেই সঙ্গেই ৯এ শর্ট স্ট্রিটের বিতর্কিত জমি নিয়ে আগেই কী কী মামলা হয়েছিল এবং কে ক’টি অভিযোগ বা পাল্টা অভিযোগ করেছিলেন, শেক্সপিয়র সরণি থানার কাছে তার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন লালবাজারের কর্তারা।
গুলি চালানোর ঘটনায় ধৃত প্রধান শিক্ষিকা মমতা অগ্রবাল আগেই অন্তত দু’ডজন অভিযোগ করেছিলেন থানায়। থানাকে জানাতে বলা হয়েছে, ওই সব অভিযোগ বা তার পাল্টা অভিযোগের বিষয়ে তদন্তকারীরা কী ব্যবস্থা নিয়েছিলেন। থানার গাফিলতির প্রমাণ মিললে সংশ্লিষ্ট তদন্তকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে লালবাজার সূত্রের খবর। লালবাজারের এক কর্তা বৃহস্পতিবার জানান, পুলিশ কমিশনার সুরজিৎ কর পুরকায়স্থ নিজেই এই নির্দেশ দিয়েছেন। শেক্সপিয়র সরণি থানাকে রিপোর্ট পেশ করতে হবে ডিসি (দক্ষিণ) মুরলীধর শর্মার কাছে। শর্মা রিপোর্টটি দেবেন বিশেষ পুলিশ কমিশনার (১) সুধীর মিশ্রকে।
প্রাথমিক ভাবে লালবাজারের কর্তারা জানতে পেরেছেন, গুলি চালিয়ে খুনের ঘটনায় অন্যতম অভিযুক্ত মমতা অগ্রবাল গত কয়েক মাসে তিনটি এফআইআর এবং ২০টি জেনারেল ডায়েরি করেন শেক্সপিয়র সরণি থানায়। তিনটি এফআইআরেই মূলত তাঁকে হুমকি দেওয়া এবং তাঁর বাড়িতে হামলার কথা বলা হয়েছে।
শর্ট স্ট্রিটে গুলি চলে সোমবার ভোরে। আর মমতা শেষ অভিযোগটি দায়ের করেন তার এক সপ্তাহ আগে, ৩ নভেম্বর। ওই দিন তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে বলেন, অচেনা একটি নম্বর থেকে ক্রমাগত ফোন করে হুমকি দিয়ে বলা হচ্ছে, অবিলম্বে তাঁকে ৯এ শর্ট স্ট্রিটের বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হবে। পুলিশের দাবি, ওই অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছিল। কিন্তু কে বা কারা হুমকি দিয়েছিল, তাদের চিহ্নিত করা যায়নি।
লালবাজার সূত্রের খবর, মমতা অগ্রবাল গত ১৯ অগস্ট থানায় অভিযোগ করেন, তাঁর স্কুলের বোর্ড ভেঙে দিয়ে অজ্ঞাতপরিচয় কিছু দুষ্কৃতী ‘হার্ট লাইন’ নামে একটি সংস্থার বোর্ড টাঙিয়ে দিয়ে গিয়েছে। কিন্তু পুলিশের বক্তব্য, এ ক্ষেত্রে স্কুলের বোর্ড ভাঙচুরের কোনও প্রমাণ মেলেনি।
পুলিশি সূত্রের খবর, মমতা ১৫ সেপ্টেম্বরও থানায় এফআইআর দায়ের করেছিলেন। তাতে তিনি জানান, বহিরাগত কিছু লোক তাঁর ৯এ শর্ট স্ট্রিটের বাড়িতে হামলা চালিয়ে একটি পিস্তল লুঠ করে নিয়ে গিয়েছে। এফআইআরে তিনি জানান, ওই পিস্তলের লাইসেন্স রয়েছে রতনলাল নাহাটার নামে। পুলিশের দাবি, মমতাকে পিস্তলের লাইসেন্স থানায় এনে দেখাতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তিনি সেটি থানায় দেখাননি।
তিনটি এফআইআর ছাড়াও মমতা মমতা শুধু শেক্সপিয়র সরণি থানাতেই ২০টি জেনারেল ডায়েরি করেছিলেন বলে পুলিশ জানায়। তার বেশির ভাগেরই বিষয় ছিল, বাড়ির বাইরে অজ্ঞাতপরিচয় যুবকদের আনাগোনা, তাঁর উপরে হামলার আশঙ্কা ইত্যাদি। পুলিশের দাবি, জেনারেল ডায়েরি পেয়ে প্রতি বারেই তদন্ত করা হয়েছিল। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিযোগের প্রমাণ মেলেনি। লালবাজারের এক কর্তা জানান, শেক্সপিয়র সরণি থানার পুলিশ এফআইআর ও জেনারেল ডায়েরির তদন্তের ক্ষেত্রে এত দিন যে-দাবি করেছে, তার সত্যতা যাচাই করা হচ্ছে। সেই জন্যই ৯এ শর্ট স্ট্রিটে গোলমালের রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে। লালবাজারের কর্তাদের একাংশের বক্তব্য, মমতার বিভিন্ন অভিযোগকে আরও গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করলে ওই ঘটনা না-ও ঘটতে পারত। |
|
|
|
|
|