নোবেল প্রাপ্তির ১০০, আলোচনা বিশ্বভারতীতে
বিশ্বকবির চিন্তাদর্শ, ভাবনা ও বিশ্বভ্রাতৃত্ববোধ আজও গোটা বিশ্বে সমান প্রাসঙ্গিক। বৃহস্পতিবার এমন কথাই শোনা গেল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নোবেল প্রাপ্তির শতবর্ষ উপলক্ষে বিশ্বভারতী আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রতিনিধিদের মুখে। গত এক বছর ধরে চলা এই উদযাপনের শেষ অনুষ্ঠানে এ ভাবেই রবীন্দ্রনাথকে নিজের মতো করে ব্যাখ্যা করলেন প্রতিবেশী রাষ্ট্র চিন এবং ইউরোপের দেশ হাঙ্গেরির প্রতিনিধিরা। গত ১৯ ডিসেম্বর থেকে নোবেল প্রাপ্তির শতবর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠান শুরু করেছিল বিশ্বভারতী। প্রায় এক বছর ধরে দেশে-বিদেশে সগৌরবে পালিত হয়েছে এই অনুষ্ঠান। বিশ্বভারতীর উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত তারই শেষ দিনের অনুষ্ঠানের একটি আলোচনাচক্রে চিন ও হাঙ্গেরিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।
শিশু দিবস উপলক্ষে পড়ুয়াদের নাটক। —নিজস্ব চিত্র।
অনুষ্ঠানের আলোচনায় অধ্যাপক তান চুং (চিনা ভবনের প্রতিষ্ঠাতা তান ইয়ুন সেনের ছেলে) জানান, ভারত-চিনের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক ও ভ্রাতৃত্ববোধ আরও সুদৃঢ় করে তুলত হবে। আর তাতে মূল মাধ্যম হবেন রবীন্দ্রনাথ। এ ব্যাপারে বিশেষ করে বিশ্বভারতীর চিনা ভবনকেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে হবে মনে করেন। কার্যত তাঁরই কথার প্রতিধ্বনি শোনা গেল কলকাতায় স্থিত চিনা কনস্যুলেটের ভারপ্রাপ্ত কনসাল জেনারেল লিউ ঝিজিয়ের বক্তব্যেও। তিনি বলেন, “দুই দেশের মধ্যে জাতীয় সংহতি বাড়াতে হলে সংাস্কৃতিক বিনিময় বাড়াতে হবে। তার জন্য রবীন্দ্রনাথের প্রাসঙ্গিকতাকে দুই দেশের মানুষের কাছে আরও বেশি করে তুলে ধরতে হবে।” অন্য দিকে, হাঙ্গেরির বিদেশ মন্ত্রী জানুস মারটোনি বলেন, “হাঙ্গেরির ঘরেঘরে রবীন্দ্রনাথ সমাদৃত হয়েছেন। তাঁর সৃষ্টি আগেও অনুবাদ হয়েছে, এখনও সেই কাজ সমানে চলছে।” চিন-হাঙ্গেরিই শুধু নয়, বিশ্বের অন্য রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে মিলে বিশ্বভ্রাতৃত্ববোধ গড়তে এবং সবার আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রেও রবীন্দ্রনাথ সমান প্রাসঙ্গিক বলে জানান রবীন্দ্রভারতীর উপাচার্য সব্যসাচী বসু রায়চৌধুরী। এ দিনের আন্তর্জাতিক আলোচনায় ভারত, চিন ও হাঙ্গেরির প্রতিনিধিরা ছাড়াও বেশ কিছু পড়ুয়া এবং অধ্যাপকও যোগ দিয়েছিলেন।
শেষ দিনের এই অনুষ্ঠানে সকালেই রবীন্দ্রনাথ ও কাঁথা শিল্প নিয়ে ‘বিচিত্রা’তে একটি প্রদর্শনীর উদ্বোধন হয়। প্রদর্শনীতে একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠী কাঁথাশিল্পের মাধ্যমে রবীন্দ্র-সৃষ্টি তুলে ধরে। প্রদর্শনীর উদ্যোক্তাদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন সামলু দুদেজা। প্রদর্শনীর পাশাপাশি আমন্ত্রিত বিশেষজ্ঞেরা রবীন্দ্রনাথ, মহিলাদের স্বনির্ভর করা এবং গ্রামের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতির সঙ্গে গ্রাম পুনর্গঠন ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। বিশ্বভারতী ও রবীন্দ্রভারতীর দুই উপাচার্যের সঙ্গেই উপস্থিত ছিলেন রবীন্দ্রভবনের অধিকর্তা অধ্যাপিকা তপতী মুখোপাধ্যায়ও। এ দিনই সন্ধ্যায় উত্তরায়নে বিশ্বভারতীর প্রথম আচার্য জওহরলাল নেহরুর ১২৫তম জন্মদিন উপলক্ষে একটি অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। উদ্যোক্তা বিশ্বভারতীর ইন্দিরা গাঁধী কেন্দ্র, সাংবাদিকতা ও গণজ্ঞাপন কেন্দ্র এবং কর্মী মণ্ডলী। ছিলেন লোকসভার প্রাক্তন অধ্যক্ষ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়, কলকাতায় স্থিত জাপানের কনসাল জেনারাল মিতসুও কাওায়গুচি, নেহরু মেমোরিয়াল মিউজিয়ামের প্রাক্তন অধিকর্তা মৃদুলা মুখোপাধ্যায়, উপাচার্য সুশান্ত দত্তগুপ্ত প্রমুখ। এ দিন পাঠভবনের পড়ুয়ারাও শিশু দিবস উপলক্ষে একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেছে। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, নেহরুর ১২৫তম জন্মদিন উপলক্ষে বিশ্বভারতী বছরভর নানা অনুষ্ঠান ও আলোচনা আয়োজন করবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.