চিরকুন্ডার পরে সুরক্ষা নিয়ে ক্ষোভ অন্য খনিতেও
চিরকুন্ডার আতঙ্কে ধেমোমেনে বিক্ষোভ।
বহু রাষ্ট্রায়ত্ত কয়লাখনিতেই যথেষ্ট সুরক্ষা না থাকার অভিযোগ দীর্ঘদিনের। তবু জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যে শ্রমিকেরা এত দিন কাজ করে এসেছেন, চিরকুন্ডার দুর্ঘটনায় আতঙ্ক তাঁদের ঘিরে ধরেছে।
দিন চারেক আগেই ঝাড়খণ্ডের চিরকুন্ডায় খনির চাল ধসে চার জনের মৃত্যু হয়েছিল। ওই ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা বিসিসিএলের চার অফিসারের বিরুদ্ধে গাফিলতির মামলা রুজু করেছে পুলিশ। আর এ দিনই আসানসোলে ইসিএলের ধেমোমেন খনিতে সুরক্ষার অভাবে নীচে নামতে চাইলেন না শ্রমিকেরা। আরও কিছু খনিতে যথেষ্ট নিরাপত্তা নেই বলে অভিযোগ উঠেছে।
ধেমোমেন খনিতে ভূগর্ভে ওঠা-নামার ডুলি নিরাপদ নয় জানিয়ে সেটি বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছিল ডিরেক্টর জেনারেল মাইনস সেফটি। বৃহস্পতিবার খনি কর্তৃপক্ষ সে কথা জানিয়ে কর্মীদের ইনক্লাইন (পায়ে হাঁটা ঢালু পথ) ধরে নামার নির্দেশ দেন। কিন্তু শ্রমিক-কর্মীরা বেঁকে বসেন। তাঁদের দাবি, বহু বছর ব্যবহার না হওয়া ওই রাস্তা কতটা নিরাপদ, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। শ্রমিক নেতা বিনায়ক পাণ্ডের অভিযোগ, “ওই পথটি ভাল নয়। ডুলির মেয়াদ শেষ হচ্ছে জেনেও কর্তৃপক্ষ গা করেননি। তাঁরা সব জেনে শ্রমিকদের বিপদে ফেলছেন।” নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করবেন না জানিয়ে শ্রমিকেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। শেষে খনি কর্তৃপক্ষ জানান, দিন দশেকের মধ্যে ডুলিটি সারিয়ে ফের উৎপাদন শুরু হবে।
গত শনিবার চিরকুন্ডায় বিসিসিএলের বাসন্তীমাতা খনিতেও শ্রমিকেরা কর্তৃপক্ষকে আগাম জানিয়েছিলেন, খনির ছাদ ফেটে গুঁড়ো ঝরছে। সোমবার সেখানেই দুর্ঘটনা ঘটে। বিসিসিএল কমিটি গড়ে তদন্ত শুরু করেছে। কিন্তু আসানসোল-রানিগঞ্জ কয়লাঞ্চলের খনিকর্মীরা বলছেন, বহু খনিতেই সুরক্ষার অভাব রয়েছে। ইসিএলের খনির সংখ্যা ১০৪। তার মধ্যে ভূগর্ভস্থ দশটি। গত দেড় মাসের মধ্যে আসানসোলের পাটমোহনা ও মাউথডিহি খনিতে চাল ধসে দু’জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
নরসমুদা কোলিয়ারির সিনিয়র ওভারম্যান সঞ্জয় মাজির অভিযোগ, “ভূগর্ভস্থ খনির চাল ধরে রাখতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। খনির চালে কাঠের খুঁটি লাগানোর মিস্ত্রিও কমে গিয়েছে। ফলে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে। আমরা এমনিতেই ভয়ে-ভয়ে কাজ করি। চিরকুন্ডার ঘটনায় তা আরও বেড়েছে।” মিঠানি কোলিয়ারির সদ্য অবসরপ্রাপ্ত মাইনিং সর্দার খলিল খানেরও দাবি, “কোনও খনিতেই এখন আর শালকাঠের খুঁটি দেওয়া হচ্ছে না। তাই মাঝে-মাঝে চাল ধসে পড়ছে।” মাউথডিহির কর্মী এ বি মণ্ডলের কথায়, “এখানে খনির যা পরিস্থিতি, নীচে নামতেই ভয় হয়।”
সিটু অনুমোদিত খনি শ্রমিক সংগঠনের নেতা বিবেক চৌধুরী, আইএনটিটিইউসি-র হরেরাম সিংহদের দাবি, তাঁরা ইসিএলের কাছে অবিলম্বে খনিগুলি পরীক্ষার দাবি জানিয়েছেন। ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় বলেন, “সংস্থার বিশেষজ্ঞদের দিয়ে খনিগুলি পরিদর্শন করানো হচ্ছে। কোথায় কীসের অভাব রয়েছে, তা পরীক্ষা করা হচ্ছে।”
চিরকুন্ডায় পরিদর্শনের সময়েই দুর্ঘটনা ঘটেছিল। পরিস্থিতি বোঝা এবং ব্যবস্থা নিতে গড়িমসির কারণে আরও কিছু খনিতে দুর্ঘটনা ঘটে যায় কি না, আতঙ্কে প্রহর গুনছেন শ্রমিকেরা।

পুরনো খবর:



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.