চাল চুরির অভিযোগে সালিশি সভা বসিয়ে এক অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীকে সাত হাজার টাকা জরিমানা করার অভিযোগ উঠেছে তৃণমূলের কিছু নেতার নামে। মাথাভাঙার কেদারহাট পঞ্চায়েতের পশ্চিম খণ্ড বামনিয়া এলাকার ঘটনা। ওই কর্মী বিষয়টি নিয়ে মাথাভাঙা-১ ব্লকের শিশু নারী কল্যাণ অধিকারিককে (সিডিপিও) অভিযোগ জানান। পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, ওই মহিলার নাম শান্তি বর্মন। তাঁর বাড়ি পঞ্চায়েত এলাকায়। শান্তি দেবী জানান, ৩০ অক্টোবর সকালে অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে গিয়ে দেখি ঘর থেকে ৩০ কেজি চাল এবং ১০ কেজি ডাল চুরি হয়েছে। বিষয়টি গ্রামবাসী, পঞ্চায়েত সদস্যকে জানাই। থানায় অভিযোগ জানাতে গেলে ওই পঞ্চায়েত সদস্য, তাঁর স্বামী তৃণমূল নেতা কার্তিকবাবু এবং আরও কয়েক জন অভিযোগ জানাতে নিষেধ করেন। হঠাৎ করে চাল, ডাল ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমার উপর চাপ দেওয়া হয়। শান্তিদেবীর কথা, “গত ৮ নভেম্বর সালিশি সভা বসানো হয়। আমাকে জিনিসপত্র ফিরিয়ে দিতে বলা ছাড়াও ৭ হাজার টাকা চাওয়া হয়।” এলাকার তৃণমূলের কিছু নেতার দাবি, তালা না ভেঙেই ওই চুরি হয়েছে। তাই ওই কর্মী ছাড়া কেউ চুরি করতে পারে না। এই প্রসঙ্গে শান্তিদেবী বলেন, “দরজার একটি অংশ বেঁকিয়ে ওই চুরি হয়েছে। তদন্ত করলেই তা পরিষ্কার হয়ে যাবে। আসলে আমি ওঁদের কথা মতো চলি না বলে আমাকে চোর অপবাদ দেওয়া হয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, ৩ দিন ধরে তৃণমূল কর্মীদের একাংশ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রে তালা দিয়ে রেখেছেন। আমাকে ওই কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
এলাকার তৃণমূলের পঞ্চায়েত সদস্য ছবি বর্মনের দাবি, “গ্রামবাসীদের একাংশ ওই কর্মীর বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন। তা নিয়ে সালিশি সভা হয়। সেখানে ওই মহিলাকে ভুল স্বীকার করতে বলা হয়। টাকা চাওয়া হয়নি।” মাথাভাঙা-১ ব্লকে সিডিপিও রাজকুমার মোদী বলেন, “দুই পক্ষই অভিযোগ জানিয়েছে। এই নিয়ে পঞ্চায়েত সমিতি সভাপতি আবু তালেব আজাদের সঙ্গে কথা বলেছি। আজ, বৃহস্পতিবার দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলা হবে। ঠিক কী ঘটেছে তা দেখা হচ্ছে।” পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি আবু তালেব আজাদ বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। সিডিপিও-র সঙ্গে কথা হয়েছে। কেউ যদি জরিমানা চেয়ে থাকে তা ঠিক নয়। আইন মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পশ্চিমখণ্ড বসুনিয়া গ্রামের তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য ছবি বর্মনের স্বামী কার্তিক বর্মন বলেন, “আমাদের নামে অভিযোগ ঠিক নয়। চুরি নিয়ে গ্রামবাসীদের দাবি মেনে সালিশি সভা ডাকা হয়। সেখানে ওই কর্মী চুরি করেছেন বলেই গ্রামবাসীরাই দাবি করেন। তাই তাঁকে ভুল স্বীকার করতে বলা হয়েছিল।” |