আদ্রার দক্ষিণ ও উত্তর প্রান্তকে উড়ালপুল দিয়ে সংযুক্ত করতে উদ্যোগী হয়েছে রেল। আগেই এ ব্যাপারে সম্মতি দিয়ে অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছিল। এ বার ওই উড়ালপুল নির্মাণের জন্য রেল ও রাজ্য সরকারের পূর্ত বিভাগ (রোডস) যৌথ সমীক্ষা করে যাওয়ায় প্রকল্পের কাজ কিছুটা এগোল বলেই মনে করছেন বাসিন্দারা। দীর্ঘদিনের একটি দাবি পূরণের আশা করছেন তাঁরা।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনের ডিআরএম অরবিন্দ মিত্তাল বলেন, “আদ্রায় উড়ালপুল নির্মাণের কথা গত রেল বাজেটেই ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই পক্রিয়া এ বার আরও একটু গতি পেল।” পূর্ত দফতর (রোডস)- এর পুরুলিয়ার নির্বাহী বাস্তুকার প্রলয় চক্রবর্তী জানান, রেলের সঙ্গে তাঁরা প্রাথমিক পর্যায়ের সমীক্ষার কাজ করেছেন।
রেল শহর আদ্রায় উড়ালপুল নির্মাণের দাবি দীর্ঘ দিনের। এই শহরকে দু’ভাগে ভাগ করেছে রেললাইন। একদিকে ডিআরএমের কার্যালয়, রেলের হাসপাতাল-সহ গুরুত্বপূর্ণ অফিস রয়েছে। অন্যদিকে স্কুল, বাজার-সহ রেলকর্মীদের আবাসন রয়েছে। ডিভিশনের সদর ও গুরুত্বপূর্ণ স্টেশন হওয়ায় প্যাসেঞ্জার, এক্সপ্রেস ও মালগাড়ি মিলিয়ে আদ্রায় দৈনিক শতাধিক ট্রেন চলাচল করে। ফলে শহরের একদিক থেকে অন্যদিকে যাতায়াত করতে রেললাইন পার হতে দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করতে ভোগান্তির শিকার হন বাসিন্দারা। |
রাজনৈতিক দল থেকে রেলকর্মী সংগঠনগুলি— সকলেই দীর্ঘদিন ধরে আদ্রায় উড়ালপুল নির্মাণের দাবি রেল মন্ত্রক থেকে রেলবোর্ড সবস্তরেই জানিয়েছিল। এ ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে উদ্যোগী হয়ে রেলকর্মী সংগঠন মেনস কংগ্রেস তৎকালীন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে বর্তমান রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর কাছে একাধিক বার দাবি জানিয়েছিল। আদ্রার প্রাক্তন ডিআরএম অমিতকুমার হালদারও উড়ালপুল নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা সংক্রান্ত নোট তৈরি করে প্রাথমিক সমীক্ষার রিপোর্ট পাঠিয়েছিলেন জোনাল স্তরে। অধীরবাবুও জয়চণ্ডীপাহাড় স্টেশনে এসে এ ব্যাপারে আশ্বাস দিয়েছিলেন।
রেল বাজেটের ‘পিঙ্ক বুকে’ উল্লেখ করা হয়েছে, আদ্রায় উড়ালপুল নির্মাণের জন্য ১০.৮৯ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তার মধ্যে প্রথম ধাপে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছে। মাসখানেক আগে পূর্ত দফতরের সমীক্ষা বিভাগের বাস্তুস্তকার, পুরুলিয়ার নির্বাহী বাস্তুকার এবং রেলের আদ্রা ডিভিশনের বাস্তুকাররা যৌথ ভাবে আদ্রায় সমীক্ষা করেন। সূত্রের খবর, আদ্রার কাশীপুর মোড়ের কাছে বন্ধ থাকা পুরানো রেলগেট এলাকায় উড়ালপুল নির্মাণ করার কথা প্রাথমিক ভাবে ভাবা হচ্ছে। এই এলাকায় রেললাইনের দু’পাশেই উড়ালপুলের জন্য প্রয়োজনীয় জমি রয়েছে রেলের হাতেই। প্রাক্তন ডিআরএম অমিতবাবুও ওই এলাকাতেই উড়ালপুল নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছিলেন।
সাধারণত এই ধরনের উড়ালপুল নির্মাণ করে রেলের নির্মাণ বিভাগ। আবার কোনওক্ষেত্রে পূর্ত দফতরের সঙ্গে যৌথভাবেও নির্মাণ কাজ করে রেল। পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক জানান, পূর্ণাঙ্গ সামীক্ষার পরেই কারা কী ভাবে কাজ করবে সে বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত জানা যাবে।” |