কিশোরী অপহরণের একটি মামলায় দায়সারা রিপোর্ট দেওয়ায় মঙ্গলবার বর্ধমানের মেমারি থানার ওসি-র বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা দায়ের করেছিলেন বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়। একটি খুনের মামলায় দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার দায়সারা রিপোর্ট দেওয়ায় বুধবার সেই বিচারপতিই ফের তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁর প্রশ্ন, খুনের মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বারবার জামিনযোগ্য ধারায় মামলা করা হচ্ছে কেন? পুলিশ সুপারই বা কেন সেই ব্যাপারে দায়সারা রিপোর্ট দিচ্ছেন? আগামী সপ্তাহে পুলিশ সুপারকে এর জবাব দিতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি বন্দ্যোপাধ্যায়।
অনেক ক্ষেত্রেই উদাসীনতায় বা বিশেষ উদ্দেশ্যে অপরাধমূলক কাজকর্মকে যথোচিত গুরুত্ব না-দিয়ে থানাতেই মামলা লঘু করে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। এটা যে আর চলবে না, মঙ্গলবার তা জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সে-দিনই কিশোরী অপহরণের রিপোর্ট হিসেবে দায়সারা ভাবে হাতে লেখা কয়েকটি পাতা হাইকোর্টে জমা দেন মেমারির ওসি। ক্ষুব্ধ বিচারপতি নির্দেশ দেন, হাইকোর্টে ওসি-কে জানাতে হবে, কেন তাঁকে জেলে পাঠানো হবে না। তার পরে, বুধবারেই ফের অন্য একটি জেলার পুলিশ-প্রধানের দায়সারা রিপোর্ট তাঁর ক্ষোভ বাড়িয়ে দেয়।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার রামনগর থানা এলাকায় ২০১২-র ১৭ এপ্রিল অক্ষয় মণ্ডল নামে এক সিপিএম সদস্য খুন হন। দুই মূল অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে জামিনযোগ্য ধারায়। এ দিন তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে হাইকোর্ট। ওই দুই অভিযুক্তের নাম বাদল ও মনোরঞ্জন দাস। দু’জনেই তৃণমূলের সদস্য। মাঝেমধ্যেই তাঁদের গ্রেফতার করা হয় এবং দু’-এক দিনের মধ্যে তাঁরা জামিন পেয়ে যান। নিহতের স্ত্রী শকুন্তলা মণ্ডল হাইকোর্টে মামলা করেন। পুলিশের সঙ্গে অভিযুক্তদের ওঠাবসার অভিযোগ এনেছেন তিনি। বিচারপতি এই ব্যাপারে এসপি-র রিপোর্ট চান। বুধবার সেই রিপোর্ট দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। জানতে চান, খুনের মামলায় জামিনযোগ্য ধারা কেন, তার ব্যাখ্যা দিতে হবে। |