মাস কয়েক আগে স্ত্রী-মেয়েকে নিয়ে মোটরবাইকে চেপে কৃষ্ণনগরে পুজোর বাজার করতে এসেছিলেন চাপড়ার শামল কর। পোস্ট অফিস মোড়ে নেমে শ্যামলবাবু বুঝতেই পারছিলেন মোটরবাইকটি কোথায় রাখবেন। কোনও জায়গা খুঁজে না পেয়ে অগত্যা আর পাঁচ জনের মত তিনিও মোটরবাইকটি রাখলেন পোস্ট অফিসের মোড়ে রাস্তার উপরেই। এটাই কৃষ্ণনগরের দৈনন্দিন চেনা চিত্র। তবে উৎসবের দিনগুলিতে মানুষের ভিড় বাড়ায় ফুটপাথহীন রাস্তায় উপরে রাখা গাড়ির সংখ্যা মাত্রা ছাড়ায়। |
এভাবেই রাস্তার ধারে রাখা হয় সাইকেল-মোটরসাইকেল।
|
আসলে জেলা সদর শহর হওয়া সত্ত্বেও কৃষ্ণনগরে কোনও ‘কার-পার্কিং’-এর ব্যবস্থা নেই। ফলে সারা শহরেই সংকীর্ণ রাস্তা দখল করে রাখা থাকে সাইকেল, মোটরবাইক থেকে শুরু করে চার চাকার গাড়িও। পোষ্ট অফিস মোড় থেকে ষষ্ঠিতলা, চ্যালেঞ্জ মোড়-সহ অন্যান্য রাস্তায় গাড়ির ঠেলায় মানুষের পক্ষে চলাফেরা করাই কঠিন হয়ে পড়ে। শহরের যে সব রাস্তায় বাস বা লরির মত ভারি গাড়ি চলাচল করে সেই সব রাস্তাগুলোর অবস্থাও একই রকম। ফলে সেই সব রাস্তায় দুর্ঘটনা লেগেই থাকে। এ ভি স্কুলের মোড় থেকে নেদেরপাড়া মোড়, আবার সেখান থেকে স্টেশন যাওয়ার রাস্তার দু’পাশে সাইকেল, বাইক, গাড়ি দাঁড়িয়ে থাকে। আর সেই সংকীর্ণ রাস্তা দিয়ে বাস লরি চলাচল করে। ফলে জীবন হাতে নিয়ে মানুষকে চলতে হয়। শহরের বাসিন্দা কবীর খান বলেন ‘‘পথ চলা ক্রমশ বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। জেলা সদর শহরে কোনও কার-পার্কিং এর জায়গা নেই!’’ একই ভাবে সোচ্চার হয়েছেন বাস মালিকরাও। নদিয়া জেলা বাস মালিক সমিতির কার্যকরি সমিতির সদস্য অসীম দত্ত বলেন, ‘‘কার পার্কিং এর কোনও জায়গা না থাকায় মানুষ বাধ্য হয়ে রাস্তার উপর গাড়ি রাখছেন। তাতে সংকীর্ণ রাস্তা আরও সংকীর্ণ হচ্ছে। আর সেই রাস্তা দিয়ে বাস চালাতে গিয়ে কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় বর্তাচ্ছে চালকদের উপর।”
নদিয়া ডিস্ট্রিক্ট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এর সহ সম্পাদক অক্ষয় ভট্টাচার্য বলেন “সার দিয়ে গাড়ি, বাইক দাঁড়িয়ে থাকায় মানুষ সহজে দোকানে ঢুকতে পারেন না।’’কৃষ্ণনগর পুরসভার পুর প্রধান তৃণমূলের অসীম সাহা বলেন ‘‘অপরিকল্পিত ভাবে গড়া ওঠা এই শহরে ইচ্ছা থাকলেও এত দিন উপযুক্ত জায়গার অভাবে কার পার্কিং এর জায়গা করে উঠতে পারে পারিনি। তবে থানার সামনে চিহ্নিত একটি জায়গায় কার পার্কিং করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।” |