ফালোপার আরও
সময় প্রাপ্য ছিল
দু’-তিন দিন ধরেই নানা জায়গা থেকে নানা খবর পাচ্ছিলাম। শেষে বুধবার সন্ধেয় শুনলাম ইস্টবেঙ্গল কোচ ফালোপা ইস্তফা দিয়েছেন।
আমার মতে এত দিন ইস্টবেঙ্গলের গর্ব ছিল দু’টো জায়গায়। এক, যত শক্তিশালী বিদেশি দলই হোক, লাল-হলুদের বেশির ভাগ সময় দুরন্ত পারফরম্যান্সের রেকর্ড। দুই, কোচ এবং ফুটবলারদের পাশে এই ক্লাবের কর্তাদের সব সময় থাকা। হঠাৎ-হঠাৎ কোচ ছাটাই করাটা তো মোহনবাগানে একচেটিয়া। অমলদা, নইমদা থেকে চাত্তুণ্ণি, সন্তোষ কাশ্যপ। কাউকে লাঞ্চবক্স হাতে তুলে দিয়ে। কাউকে পুষ্পস্তবক দিয়ে, এক মরসুমে দু’তিন বার কোচ বিদায়ও মোহনবাগানে গা-সওয়া সংস্কৃতি। কারণ হিসাবে যাদের সরকারি বক্তব্য, ‘পরিবর্তনের জন্য পরিবর্তন’। এত দিন গর্ব করে বলতাম, ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে এ সব হয় না। এ বার সেই সংস্কৃতি কি তাদেরও চলে এল? যদি আসে তা হলে বলতে বাধ্য হচ্ছি, এই ঘটনা খুব দুর্ভাগ্যজনক। ভোম্বলদা (সুভাষ ভৌমিক), মনোরঞ্জন কোচ হিসাবে ইস্টবেঙ্গলে এর চেয়েও খারাপ সময় কাটিয়েছে। ক্লাব কিন্তু তখন ওদের পাশে সব সময় ছিল।
শুনলাম সাংবাদিক সম্মেলনে ফালোপা বলেছেন, ব্যক্তিগত কারণ আর ছেলের চিকিৎসার জন্য দেশে ফিরে যাচ্ছেন। এতে কর্মকর্তাদের সুবিধা এই যে, তাঁরা বলতে পারবেন আমরা কোচকে তাড়াইনি। কোচ নিজেই সরে গিয়েছেন। অজুহাত একদম তৈরি। এএফসি কাপ সেমিফাইনালে নিয়ে যাওয়া কোচকে মাত্র এগারো ম্যাচ দেখে সরানোর চিন্তাটা আমার কাছে স্রেফ অন্যায়। অভিজ্ঞ ব্রাজিলীয় কোচকে আরও একটু সময় দেওয়াই যেত। অন্তত আই লিগের ফার্স্ট লেগ শেষ হওয়া পর্যন্ত। ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের মতো ক্লাবের কর্তারাও মরসুম শুরুতে ব্যর্থ নতুন কোচ ডেভিড মোয়েসকে সময় দিয়েছেন। ম্যাঞ্চেস্টারও এখন ভাল খেলছে।
একদমই ভাববেন না, ফালোপার হয়ে ওকালতি করছি। ফালোপারও কিছু ব্যর্থতা ছিল। শুনলাম বিদায়ী কোচ বলেছেন, দলের বাইশ জনের মধ্যে পনেরো জনই তাঁর কথা অমান্য করত। এটা অবশ্যই কোচের ব্যর্থতা। কোচের কথা অমান্য করলে অবাধ্য ছাত্রকে কী ভাবে বাগে আনতে হয় তা প্রদীপদা, অমলদারা দেখিয়েছেন। আমার সঙ্গেই তো কত বার প্রদীপদার মতের অমিল হয়েছে। উনি ঠিক নরমে-গরমে আমার থেকে সেরা পারফরম্যান্সটা বার করে নিয়েছেন। ফালোপা সেটা পারেননি।
কর্মকর্তারা কি এ সব জানতেন না? বিশ্বাস হয় না। তাঁরা একটু কড়া হতেই পারতেন। আর ফুটবলারদেরও বুঝতে হবে দলের পারফরম্যান্স গ্রাফ উপরের দিকে নিয়ে যেতে তাদেরও বিরাট দায়িত্ব রয়েছে। ফুটবলাররা যে অপরিহার্য সেটা তো মাঠে নেমে তাদেরই বোঝাতে হয়। তা না করে কে কোচ থাকবে-কে থাকবে না তা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়া অন্তত ইস্টবেঙ্গল ফুটবলারদের চরিত্র হয়ে ওঠাটা আদৌ কাম্য নয়। তাই ফালোপা-বিদায়ে প্রাক্তন ইস্টবেঙ্গল ফুটবলার হিসাবে আমার লজ্জাই হচ্ছে!

নতুন কোচ কে, সিদ্ধান্ত আজ
ইস্টবেঙ্গলে কোচ হওয়ার দৌড়ে এখনও এগিয়ে কোলাসো। মর্গ্যানকে ফেরানোর জন্য উদ্যোগী হয়েছিল ক্লাবের একটি অংশ। কিন্তু পাঁচ বারের আই লিগ জয়ী গোয়ান কোচের সঙ্গে লাল-হলুদের কথা এতটাই এগিয়েছে যে, সেখান থেকে পিছিয়ে আসা নিয়ে দ্বিধায় অনেক কর্তা। ফুটবল সচিব সন্তোষ ভট্টাচার্য অবশ্য বুধবার রাতে বললেন, “দু’জনের সম্ভাবনা ফিফটি ফিফটি। কাল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব।” যদিও তাঁর কাছে চুক্তিপত্র পাঠানো সত্ত্বেও ইস্টবেঙ্গল কোচের দৌড়ে মর্গ্যান ঢুকে পড়ায় অবাক আর্মান্দো। রাতে ফোনে বললেন, “শুনছি মর্গ্যানের নামও আমার সঙ্গে উঠছে। জানি না ইস্টবেঙ্গল কী সিদ্ধান্ত নেবে! ফালোপা ইস্তফা দেওয়ার পর অবশ্য আমার সঙ্গে ওঁরা যোগাযোগ করেননি।’’ মর্গ্যান আবার আনন্দবাজারকে মেল মারফত বলেছেন, “ইস্টবেঙ্গলে কোচের পদে ফিরতে ওদের মেল করেছি। সবার সমর্থন পেলে ক্লাবে ফিরতে চাই। তবে এখনও কথা এগোয়নি।” ১৬ নভেম্বর ইস্টবেঙ্গল-এরিয়ান কলকাতা লিগ ম্যাচের জন্য আজ বৃহস্পতিবার চিডিদের অনুশীলন করাবেন সহকারী কোচ রঞ্জন চৌধুরী।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.